সিলেট স্ট্রাইকার্সের মালিকানা জটিলতায় পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না ক্রিকেটাররা

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) আসর শেষ হয়েছে ৪ মাস। কিন্তু এখনো শতভাগ টাকা বুঝে পায়নি ৬ দলের ক্রিকেটাররা। এর মধ্যে চিটাগাং কিংস, দুর্বার রাজশাহী ও সিলেট স্ট্রাইকার্স অন্যতম। ৮ই মার্চ শতভাগ টাকা পরিশোধ করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা করেনি দলগুলো। এর মধ্যে সিলেট স্ট্রাইকার্স এখনো দেশি ক্রিকেটারদের ২৫ শতাংশ  পরিশোধ করেনি। সেই সঙ্গে জানা গেছে টিম ম্যানেজম্যান্ট এখনো ২৫ শতাংশ পারিশ্রমিক পায়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে দলটির মালিকানা জটিলতার কারণে বর্তমান চেয়ারম্যান মাহিন মাজহার তিন মাস পেরিয়ে গেলেও ক্রিকেটার ও ম্যানেজম্যান্টের পাওনা পরিশোধ করেননি। জানা গেছে দলটির যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী পরিচালক জগরুর হুদা বিদেশি ক্রিকেটারদের পাওনা পরিশোধ করে দিয়েছেন। কিন্তু এই ফ্র্যাঞ্চ্যাইজি দলটির প্রথম চেয়ারম্যান সারওয়ার চৌধুরী বকেয়া পরিশোধ না করায় এখন পর্যন্ত দলটির নয়া  চেয়ারম্যান ক্রিকেটার ও ম্যানেজম্যান্টের পাওনা পরিশোধ করেনি। এ নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলেও দলটি পাওনা পরিশোধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এ নিয়ে চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করা না গেলেও দলটির প্রভাবশালী কর্মকর্তা গাজী নাঈম মানজুর মুঠোফোনে দৈনিক মানবজমিনকে বলেন, ‘আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছি ক্রিকেটার ও ম্যানেজম্যান্টের টাকা পরিশোধ করার। কিন্তু আমাদের সিলেট স্ট্রাইকার্সের পরিচালক সারওয়ার চৌধুরীর কোনো টাকা পরিশোধ না করায় কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে আমরা বিসিবি’র সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলটির বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার জানিয়েছেন সামনে ঈদ তাই তারা আশা করেছিলেন হয়তো তার আগেই পাওনা টাকা পরিশোধ করা হবে। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত ফ্র্যাঞ্চাজিটির পক্ষ থেকে কোরো রকম সাড়া পাচ্ছেন না। অন্যদিকে টিম ম্যানেজম্যান্টের পক্ষ থেকে অভিযোগ ক্রিকেটারদের সঙ্গে তারাও এখনো ২৫ শতাংশের জন্য অপেক্ষায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলটির এক কর্মকর্তা জানান, ‘বিসিবির নিয়ম অনুসারে গেল ৮ই মার্চ শতভাগ পাওনা পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু তারা মালিকানা জটিলতার কারণে সেটি এখনো করছে না। এ নিয়ে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনো রকম কিছু বলছেও না।’ বিসিবি’র একটি সূত্রে জানা গেছে দলটির চেয়ারম্যান যোগাযোগ করলেও কবে নাগাদ পাওনা পরিশোধ করবে তা নিশ্চিত করেনি। কিন্তু তারা বিসিবি থেকে টিকিট বাবদ যে ৪৫ লাখ টাকা পাবে  সেটি দাবি করেছে। কিন্তু বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে পর্যন্ত তারা ক্রিকেটারদের পাওনা পরিশোধ না করবে সেই পর্যন্ত টিকিটের রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের যে অর্থ তা তারা ছাড় দিবে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে জাতীয় দলের ক্রিকেটার তানজিম হাসান সাকিব ও জাকের আলী অনিক প্রায় ৬ লাখ ও  জাকির হাসান প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা এখনো বুঝে পাননি। আরো ১২ জন ক্রিকেটার এখনো ২৫ শতাংশ পাওনা বুঝে পাননি। যদিও দলটির কর্মকর্তা গাজী নাঈম মানজুরের দাবি তারা এই টাকা দিতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি ক্রিকেটার ও ম্যানেজম্যান্টের পাওনার অংকটা আমাদের চেয়ারম্যান ও তার করপোরেট  প্রতিষ্ঠানের এক্স সিরামিক্সের  জন্য খুব বড় কিছু নয়। দলের পক্ষ থেকে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বিসিবি’র সঙ্গে। কিছু জটিলতা কাটলেই দিয়ে দেয়া হবে।’ অন্যদিকে জানা গেছে সিলেট স্ট্রাইকার্সের বর্তমান ফ্র্যাঞ্জাইজির নতুন সাইকেলে বিপিএলে দল পাচ্ছে না। পারিশ্রমিক নিয়ে আগেও দলটির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল। যে কারণে নতুন করে তাদের দল দিতে বিসিবি কঠোর সিদ্ধান্ত নিবে। বিপিএলের নতুন সাইকেলে সিলেটের ফ্র্যাঞ্জাইজি হিসেবে এক্স সিরামিক্স থাকবে কিনা এ নিয় গাজী নাঈম বলেন, ‘আমরা যদি আসি তাহলে একক মালিকানাতে আসবো, কোনো পার্টনার নিয়ে নয়।’