দুই দিনে ভারত থেকে চেনাব নদীতে পানি কমেছে ৯১,০০০ কিউসেক, দাবি পাকিস্তানের

পেহেলগামে  সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত বলেছিলো, ‘রক্ত ও পানি একসাথে প্রবাহিত হতে পারে না’। এই আবহে পাকিস্তান দাবি করেছে যে, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ভারত থেকে চেনাব নদীতে জলপ্রবাহ ৯১,০০০ কিউসেক কমে গেছে। পাকিস্তানের পানি ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (ওয়াপদা) জানিয়েছে, গত দুই দিনে ভারত থেকে চেনাব নদীতে ৯১,০০০ কিউসেক জলপ্রবাহ হ্রাস পেয়েছে। ওয়াপদা-র  দাবির কথা জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন।

ওয়াপদার তথ্য অনুসারে, মারালা হেডওয়ার্কসে জলপ্রবাহ ২৯ মে ৯৮,২০০ কিউসেক থেকে ১ জুন মাত্র ৭,২০০ কিউসেক হয়েছে, এর মাঝে কোনও বহির্গমনের খবর পাওয়া যায়নি। পাকিস্তান আবহাওয়া বিভাগের বন্যা পূর্বাভাস বিভাগ জানিয়েছে যে, মে মাসের শুরু থেকে জলপ্রবাহ হ্রাস পেয়েছে, যখন ভারত সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধির সাথে সাথে পাকিস্তানে পানি নিষ্কাশন উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করেছিল।

ভারত গত ২৩শে এপ্রিল ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তিতে (IWT) অংশগ্রহণ স্থগিত করে। দিল্লি এই ঘটনার জন্য পেহেলগাম হামলায় পাকিস্তানের ভূমিকাকে দায়ী করেছে, যদিও ইসলামাবাদ কোনও জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। 

সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধির পর মে মাসে উভয় দেশ যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছালেও, ভারত চুক্তির অধীনে সহযোগিতা পুনরায় শুরু করেনি। নয়াদিল্লির দাবি, সীমান্ত সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলার সময় আইডব্লিউটি-র অধীনে পানি বণ্টন অব্যাহত রাখা জাতীয় স্বার্থকে ক্ষুণ্ন করে। ভারতীয় কর্মকর্তারা যুক্তি দিয়েছেন যে, চুক্তিটি বর্তমান বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করবে, যার মধ্যে পাকিস্তানের বারবার শান্তি লঙ্ঘনও অন্তর্ভুক্ত। চেনাব নদী পাকিস্তানের কৃষিক্ষেত্রের জন্য, বিশেষ করে পাঞ্জাব প্রদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর খালগুলো, যার মধ্যে রয়েছে উচ্চ চেনাব এবং বাম্বাওয়ালি-রাবি-বেদিয়ান (বিআরবি) খাল, কৃষিজমির বিশাল অংশে সেচের চাহিদা পূর্ণ করে। জলপ্রবাহে দীর্ঘস্থায়ী ব্যাঘাত ফসল উৎপাদন এবং গ্রামীণ জীবিকার উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। 

ভারত দীর্ঘদিন ধরে আইডব্লিউটি-র অধীনে পূর্বাঞ্চলীয় নদীগুলোর পানির উপর অধিকার এবং চেনাবসহ পশ্চিমাঞ্চলীয় নদীগুলোর উপর আংশিক অধিকার বজায় রেখেছে। ভারতের  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি বলেছেন যে পাকিস্তান শত্রুতা বৃদ্ধির সাথে সাথে পানি প্রবাহ অব্যাহত রাখার আশা করতে পারে না। ইসলামাবাদের প্রতি এক কড়া বার্তায় তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান সন্ত্রাস এবং পানি উভয়কেই হালকাভাবে নিতে পারে না।’ পাকিস্তান পানি প্রবাহ হ্রাসকে যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার দাবি করলেও, ভারতীয় কর্মকর্তারা বলছেন যে, এটি ভারতের বৈধ অধিকার এবং ক্রমাগত উস্কানির প্রেক্ষিতে একটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।

সূত্র : ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস