অনলাইন
পরিবেশগতভাবে মারাত্মক ক্ষতি করছে 'নরকের প্রবেশদ্বার'
মানবজমিন ডিজিটাল
(১০ ঘন্টা আগে) ৭ জুন ২০২৫, শনিবার, ১০:৫০ পূর্বাহ্ন
তুর্কমেনিস্তানে ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জ্বলছে এক বিশাল অগ্নিকুণ্ড। কেউ এখনও এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। 'Gateway to Hell' বা 'নরকের প্রবেশদ্বার' নামে পরিচিত, দারভাজা গ্যাস ক্রেটার হল একটি বিশাল গ্যাস কূপ যা ১৯৭১ সালে সোভিয়েত বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময় জ্বলে ওঠে। সেই সময়, তুর্কমেনিস্তান সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল, এবং বিজ্ঞানীরা এই অঞ্চলের অত্যধিক মিথেন গ্যাসের সমস্যার সমাধান খুঁজছিলেন। তারা কারাকুম মরুভূমির গভীরে ভ্রমণ করেছিলেন এবং সেই অঞ্চলে নির্গত মিথেন লিকগুলো অধ্যয়ন করার জন্য একটি বিশাল গর্ত খনন করেছিলেন। তারা দুর্ঘটনাক্রমে একটি ভূগর্ভস্থ গ্যাসক্ষেত্রে খনন করে ফেলেন। মিথেন গ্যাসের লিকেজ সমস্যা দূর করার দ্রুততম উপায় হলো এটি পুড়িয়ে ফেলা, এই ধারণা নিয়ে বিজ্ঞানীরা এটি জ্বালানোর সিদ্ধান্ত নেন। এরপর যা ঘটে তা ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘতম, মানবসৃষ্ট জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে পরিণত হয়েছে।যদিও এটি পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে তুর্কমেনিস্তানের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখে , তবে 'নরকের প্রবেশদ্বার' পরিবেশগতভাবে মারাত্মক ক্ষতি করছে।মিথেন সমস্যার সমাধান তো দূরের কথা, আগুন থেকে প্রচুর পরিমাণে মিথেন গ্যাস নির্গত হচ্ছে, যা জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যাপক অবদান রাখছে ।তুর্কমেনিস্তানের বর্তমান সরকার বিশাল অগ্নিকাণ্ড বন্ধে যথাসাধ্য চেষ্টা করার অঙ্গীকার করেছে। এই সপ্তাহে, এক ঘোষণায়, তারা বলেছে যে , অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে চলমান বিশাল গ্যাসক্ষেত্রের আগুন উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে তারা সক্ষম হয়েছে।কর্মকর্তারা বলেছেন যে আগুন তিনগুণ কমানো হয়েছে , তবে কত সময়সীমার মধ্যে তা নির্দিষ্ট করে বলেননি।রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জ্বালানি কোম্পানি তুর্কমেঙ্গাজের পরিচালক ইরিনা লুরিয়েভা সংবাদ সংস্থা এএফপির সাথে কথা বলতে গিয়ে বলেন, "যদিও আগে আগুনের বিশাল আভা কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে দেখা যেত, তাই এর নাম 'গেটওয়ে টু হেল', আজ কেবল অগ্নিকুন্ডের একটি ক্ষীণ উৎস অবশিষ্ট রয়েছে।" তিনি তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশগাবাদে এক পরিবেশ সম্মেলনে বলেন -'মিথেনের পরিমাণ কমাতে আগুনের চারপাশে অসংখ্য কূপ খনন করা হয়েছে। ' মনে করা হয় তুর্কমেনিস্তানে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম গ্যাসভান্ডার মজুদ রয়েছে। আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থার মতে বিশ্বের বৃহত্তম মিথেন গ্যাসের ভান্ডারও এখানেই আছে , যা গ্যাস লিকের মাধ্যমে বাইরে বেরিয়ে এসেছিলো । বৃটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, তুর্কমেনিস্তানের দুটি প্রধান জীবাশ্ম জ্বালানি ক্ষেত্র থেকে শুধুমাত্র মিথেন নির্গমনের ফলে প্রতি বছর যুক্তরাজ্যের মোট কার্বন নির্গমনের চেয়েও বেশি বৈশ্বিক তাপ উৎপন্ন হয়।
সূত্র : এনডিটিভি