ঢাকা, ৬ জুলাই ২০২৫, রবিবার, ২২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৯ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

শরীর ও মন

এবার পরীক্ষাগারেই ডিএনএ তৈরি করতে চাইছেন গবেষকরা

মানবজমিন ডিজিটাল

(২০ ঘন্টা আগে) ৫ জুলাই ২০২৫, শনিবার, ১১:০৮ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৮:০৯ অপরাহ্ন

mzamin

প্রাণের বৈশিষ্ট্য যাকে ঘিরে, এবার সেই ডিএনএ-কে পরীক্ষাগারে তৈরি করতে চাইছেন গবেষকরা। বিশ্বের সবচেয়ে বড় চিকিৎসা অনুদান সংস্থা ‘দ্য ওয়েলকাম ট্রাস্ট’ ১০ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি দান করেছে এই প্রকল্পে। যার সঙ্গে যুক্ত অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ, ইম্পেরিয়াল কলেজের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের তাবড় জিন বিশেষজ্ঞ। লক্ষ্য পরীক্ষাগারেই ডিএনএ তৈরি করা। যার নাম দেয়া হয়েছে সিন্থেটিক হিউম্যান জিনোম (SynHG) প্রকল্প। যার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে।

মানুষের জীবনের একক ধরা হয় ডিএনএ-কে। প্রকল্পের অন্যতম অংশীদার ড. জুলিয়ান সেল বিবিসিকে বলেছেন, ‘মানুষের যত বয়স বাড়বে তত যেন তার স্বাস্থ্য আরও মজবুত হয়, কম অসুখ হয় সেটা নিশ্চিত করতে আমরা প্রয়োজনীয় থেরাপি আবিষ্কার করতে চাই।’

আর সেই কারণেই তাদের লক্ষ্য সম্পূর্ণ কৃত্রিম মানব ক্রোমোজোম তৈরি করা। যা মানুষের ডিএনএ-র প্রায় দুই শতাংশ। তবে চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো সম্পূর্ণ কৃত্রিম ক্রোমোজোম তৈরি করে ফেলা। তবে কিছু স্বাধীন বিজ্ঞানী সন্দেহ প্রকাশ করেছেন যে, অত্যাধুনিক জেনারেটিভ এআই এবং উন্নত রোবোটিক অ্যাসেম্বলি প্রযুক্তি থাকা সত্ত্বেও SynHG প্রকল্পটি এতদূর যেতে পারবে কিনা।

ফ্রান্সিস ক্রিক ইনস্টিটিউটের পুরস্কারপ্রাপ্ত জিনতত্ত্ববিদ রবিন লোভেল-ব্যাজ, যিনি SynHG প্রকল্পের সাথে জড়িত নন তিনি বলেন, তিনি এই উদ্যোগটি সম্পর্কে ‘খুবই উৎসাহী’, কারণ ‘আপনি যদি কোনও কিছুকে একেবারে শুরু থেকে তৈরি করতে পারেন তবেই আপনি সত্যিকার অর্থে সেটি বুঝতে পারবেন।’

এখনও পর্যন্ত জীবন্ত শরীরের ডিএনএ ব্যবহার করে পরিবর্তিত ডিএনএ নির্মাণ করা যায়। কিন্তু এই পরীক্ষা সফল হলে ডিএনএ কীভাবে কাজ করে তা সম্পূর্ণ বুঝে ফেলা যাবে। ড. জুলিয়ান বলছেন, ‘আমরা এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করে রোগ-প্রতিরোধী কোষ তৈরি করতে চাইছি যা আমরা ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করতে ব্যবহার করতে পারি। উদাহরণস্বরূপ, যকৃত, হৃদপিণ্ড, এমনকী রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার কথা বলা যায়।’

আজ পর্যন্ত একমাত্র মানব-নির্মিত জিনোম যার কাজ সম্পূর্ণরূপে শেষ  হয়েছে সেটি হলো এককোষী জীবের জন্য যাদের প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ বেস জোড়া থেকে সর্বাধিক ১৬টি ক্রোমোজোম তৈরি হয়েছে। এই আবিষ্কারটি করতে প্রায় এক দশকের কঠোর পরিশ্রম লেগেছে। তুলনা করলে, মানুষের সাধারণত ৪৬টি ক্রোমোজোম এবং ৩ বিলিয়ন বেস জোড়া সহ ৩০ ট্রিলিয়নেরও বেশি কোষ থাকে। কে জানে বিজ্ঞানীদের এই জটিলতার জট খুলতে কত সময় লাগবে? যদিও বিস্তারিত তথ্য অস্পষ্ট, SynHG টিম দাবি করে যে তারা তাদের গবেষণার নৈতিক, আইনি এবং সামাজিক প্রভাব পরীক্ষা করার জন্য একাডেমিক, সুশীল সমাজ, শিল্প এবং নীতি বিশেষজ্ঞদের সাথে কাজ করছে। কারণ এই ধরনের প্রকল্পগুলো সামাজিক ও নৈতিক বিতর্ককে অনুপ্রাণিত করতে পারে। 

প্রোগ্রেস এডুকেশনাল ট্রাস্ট (PET) এর পরিচালক সারাহ নরক্রস বলছেন, 'আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে এই ধরণের কাজ বিতর্কমুক্ত নয়। তাই গবেষক ও  জনসাধারণের একে অপরের সাথে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই গবেষণার মধ্যে কী কী বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে সে সম্পর্কে জনসাধারণের স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে।  

অন্যদিকে গবেষক এবং অর্থায়নকারীদের অবশ্যই এই বিজ্ঞানের মাধ্যমে জনসাধারণের কি লাভ হবে সে সম্পর্কে একটি পূর্ণাঙ্গ ধারণা থাকতে হবে।

সূত্র: সায়েন্স এলার্ট

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status