নির্বাচিত কলাম
খোলা চোখে
শুধু আজিজ কেন, হু আর নট ‘দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স ম্যান’?
রুমিন ফারহানা
২৩ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবারজেনারেল আজিজের এই ঘটনার অল্প কিছুদিন আগেই ভীষণভাবে আলোচনায় এসেছিলেন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। তার প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির খবর নিয়ে অনুসন্ধানী রিপোর্ট ছাপে একটি জাতীয় দৈনিক। আসলে তো কেবল একজন আজিজ বা একজন বেনজীর নয়, বিভিন্ন ক্ষেত্রে কিছু মানুষকে চোখ বন্ধ করে যাচ্ছেতাই করতে দিয়েছে এই সরকার। অবশ্য যাচ্ছেতাই করতে দেয়া ছাড়া আর কোনো পথও ছিল না সরকারের হাতে। এর আগে র্যাবের কর্মকর্তাদের ওপরে আসা নিষেধাজ্ঞার কারণ ছিল মানবাধিকার লঙ্ঘন। এবার প্রথমবারের মতো এলো দুর্নীতির অভিযোগে। দুর্নীতির অভিযোগে নিষেধাজ্ঞার ছিপি যখন খুললোই, নিশ্চয়ই আরও নিষেধাজ্ঞা আসতে যাচ্ছে অনেক রাঘববোয়ালের নামে। একটি সরকার যখন ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসে কিংবা থাকে তখন জনগণের চাওয়া-পাওয়াই তার কাছে মুখ্য হয়। এর বাইরে যাওয়ার কোনো উপায় তখন সরকারের হাতে থাকে না। কিন্তু সরকার যখন নির্বাচিত না হয় অথচ ক্ষমতায় থাকার নিশ্চয়তা চায় তখন কিছু গোষ্ঠীকে অকল্পনীয় সুযোগ-সুবিধা দিয়ে কাছে রাখতে হয়, তাদের সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে হয়। তারা অন্যায্যভাবে সরকারকে ক্ষমতায় রাখে তার বদলে অবিশ্বাস্য দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ পায় তারা। এটা একটা দুষ্টচক্র যারা পরস্পরের সঙ্গে যোগসাজশে নিজেরা লাভবান হয় এবং একে অন্যের স্বার্থরক্ষা করে চলে। সরকারকে ক্ষমতায় রাখার এই দুষ্টচক্রে বিদেশি শক্তির পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরীণ শক্তির মধ্যে আছে সামরিক-বেসামরিক আমলা, পুলিশ এবং ব্যবসায়ীরাও
এই সকালটা আর দশটা সকালের মতো ছিল না। আমি একদম ছোটবেলা থেকেই রুটিন মেনে ঘড়ি ধরে চলা মানুষ। আমার প্রতিদিনের কাজ ঘণ্টা হিসাবে লেখা থাকে, আমি সেটা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলার চেষ্টা করি। আজকে একেবারে দিনের শুরুতেই ছন্দপতন। চায়ের কাপে চুমুক দিতে যাবো এমন সময় চোখ আটকে গেল একটা খবরে। দেখি দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই খবরের পরে নিত্যদিনের রুটিন মেনে কাজ করবো তা হয় না। ৭ই জানুয়ারির পর এত ইন্টারেস্টিং খবর আর চোখে পড়েনি। আমি হেডলাইন দেখেই ঢুকে গেলাম ফেসবুকে। খুঁজে বের করার চেষ্টা করলাম ‘íam prime minister’s man’ স্ট্যাটাস দেয়া বন্ধুদের। দেখার চেষ্টা করলাম তারা আজ আজিজের এই দুঃসময়ে তার পক্ষে কি ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে। আফসোস! কারও টিকির দেখা পেলাম না। খুব বেশি দিন আগের কথা না। আপনাদের মনে আছে নিশ্চয়ই মাত্র বছর তিনেক আগে ২০২১ সালে আল জাজিরায় আজিজ সাহেব ও তার মাফিয়া ভাইদের বীভৎসতার খবর বা ডকুমেন্টারি প্রকাশের পর সরকারের শুভাকাঙ্ক্ষী বন্ধুরা জেনারেল আজিজ সাহেবের পক্ষে দাঁড়িয়ে নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর লোক বলে পরিচয় দিয়ে গর্বিত ভঙ্গিতে স্ট্যাটাস দিচ্ছিলেন। পুরো ফেসবুক ঘেঁটে দেখলাম তারা আজ বেমালুম গায়েব। একে তো তিনি সাবেক তার ওপর খোদ যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা।
এমন কঠিন সময়ে কোন বীর বাঙালি যে তার কিংবা তার ত্রাতাদের পক্ষে ফেসবুকে অস্ত্র ধরবে না সেটাই স্বাভাবিক। ভুল আমারই; আমার বোঝা উচিত ছিল। যাই হোক কি আর করা। মনকে বুঝ দিলাম এই বলে যে মানুষ এমনই। সুসময় বন্ধু বটে অনেকেই হয়, অসময় হায় হায় কেউ কারও নয়। তবে হ্যাঁ, চক্ষু লজ্জা বলে একটা কথা চালু আছে বাংলায়। তাই দেখতে গেলাম যাদের জন্য এতদিন এত কিছু করলেন জেনারেল আজিজ তাদের প্রতিক্রিয়া কি? প্রথমেই চোখে পড়লো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কমেন্ট। উনি বিচক্ষণ ব্যক্তি, কথা বলেন মেপে। বাংলাদেশে নিকট অতীতে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে যারা ছিলেন সম্ভবত দায়িত্ব ছাড়ার পর তাদের পরিণতি দেখে তিনি অনেকটাই পরিণত। এই বিষয় নিয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন এটি নিয়ে তার কোনো মন্তব্য নেই। কেন এই নিষেধাজ্ঞা আসছে সেই কারণ নাকি এখনো তার কাছে আসে নাই। তিনি কেবল একটা বিজ্ঞপ্তির কথা শুনেছেন। তাই এই বিষয়ে বিস্তারিত না জেনে জবাব দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি। বুদ্ধিমান মানুষ, মুখে কুলুপ আঁটা রপ্ত করেছেন ভালোই। তবে কিনা এটি নিছকই একটি বিজ্ঞপ্তি কিংবা এই নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে কিছুই বলেনি যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টি বোধ হয় তেমন নয়।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে স্পষ্ট করেই বলা হয়, জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও আইনের শাসনকে শক্তিশালী করতে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার পুনরায় নিশ্চিত করা হলো। এদেশে সরকারি সেবা আরও স্বচ্ছ ও নাগরিকদের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর পথ প্রশস্ত হলো। সেই সঙ্গে ব্যবসা ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং মুদ্রা পাচার ও অন্যান্য অর্থনৈতিক অপরাধের অনুসন্ধান ও বিচার নিশ্চিতে সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশে দুর্নীতিবিরোধী প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার বিষয়টি খোলাসা হলো। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারকে উদ্ধৃত করে প্রচারিত বিবৃতিতে বলা হয়, ব্যাপক দুর্নীতিতে সম্পৃক্ততার কারণে সাবেক জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদকে, পূর্বে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর প্রধান, ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট, ফরেন অপারেশন অ্যান্ড রিলেটেড প্রোগ্রামস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস অ্যাক্টের ৭০৩১ (সি) ধারার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ফলে আজিজ আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য হলেন। এখানেই শেষ নয়। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আজিজ আহমেদের কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহের অবমূল্যায়ন এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান ও প্রক্রিয়ার ওপর জনগণ আস্থাহীন হয়ে পড়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, আজিজ আহমেদ তার এক ভাইকে বাংলাদেশে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহি এড়াতে সহযোগিতা করেন।
এটা করতে গিয়ে তিনি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য দুর্নীতি করেন। এ ছাড়া অন্যায্যভাবে সামরিক খাতে কন্ট্রাক্ট পাওয়া নিশ্চিত করার জন্য তিনি তার ভাইদের ঘনিষ্ঠভাবে সহায়তা করেন। তিনি নিজ স্বার্থ তথা সরকারি নিয়োগের বিনিময়ে বিরাট অঙ্কের ঘুষ নেন। যুক্তরাষ্ট্রের কথা পরিষ্কার, কথায় কোনো ভেজাল আছে বলে মনে হলো না। এই পরিষ্কার কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে কেন পরিষ্কার না সেটা আবার আমার কাছে পরিষ্কার না। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চুপ থাকলেও সাবেক তথ্য ও বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ চুপ থাকবেন তা হয় না। আমি সঠিক ভাবেই অনুমান করেছিলাম তিনি মুখ খুলবেন এবং তিনি খুলেছেন। তার মারফতেই জানতে পারলাম দেশের মানুষের কাছে বিষয়টি আচানক হলেও সরকার বিষয়টি আগেই জানতো। এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জনসমক্ষে আনার আগে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসকে জানিয়েছিল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। তবে কিনা রাজনীতিতে মুখরক্ষা বড় জরুরি জিনিস। তাই শেষমেশ সরকারি দলের যুক্তি গিয়ে ঠেকলো কোন আইনের অধীনে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা দেয়া হয়েছে সেটি। এটি কি ভিসা নীতি নাকি অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন আইন নামে ভিন্ন কোনো আইন? আইনের নাম যাই হোক ফলাফল একই। দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার আর স্বজনপ্রীতির দায়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবে না আজিজ ও তার পরিবার। আনিস, হারিস ও জোসেফ জেনারেল আজিজ আহমেদের তিন ভাই। তিনজনই খুনের মামলার যাবজ্জীবন ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।
এর মধ্যে ২০১৯ সালের ২৮শে মার্চ হারিস ও আনিসের সাজা মওকুফ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আর তাদের মা রেনুজা বেগমের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জোসেফের সাজা মওকুফ করেন রাষ্ট্রপতি। ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ যারা দেখেছেন তারা জানেন ঠিক কি ধরনের পরিবারে জন্ম নিয়ে, কি ধরনের পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন তারা। পরবর্তীতে তাদের কর্ম, চিন্তা, জীবনাচার, ধ্যান ধারণা, অপরাধ জগতে বিচরণ, রাজনীতির আড়ালে খুন খারাবি, মাফিয়া চক্র গড়ে তোলা সব কিছুতেই সেই ছাপটা স্পষ্ট ছিল। নিজের নামের সঙ্গে সঙ্গে মা-বাবার নামও বদল করেছেন জেনারেল আজিজের ভাইরা। নিজেদের ছবি দিয়ে নতুন নাম, ভিন্ন ভিন্ন বাবা-মা আর ভিন্ন ঠিকানা ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র আর পাসপোর্ট সংগ্রহ করেছেন তারা। এই সব কিছুই ভয়াবহ জালিয়াতি এবং আইনের চোখে ভয়ঙ্কর অপরাধ। বলার অপেক্ষা রাখে না এই অপরাধ তারা করতে পারলো এবং করার পরও খুনের মামলায় সাজা মাফ থেকে শুরু করে বিদেশ পর্যন্ত যেতে পারলো কেমন মাত্র তাদের ভাইয়ের পরিচয় ব্যবহার করে। কেউ কেউ বলবেন তিনি তো তখন সেনাপ্রধান ছিলেন না। সেনাপ্রধান না হলেও জেনারেল আজিজ বাহিনীতে উচ্চপদে ছিলেন এবং তারা সব ভাই-ই ক্ষমতাসীন দলের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। এই সরকার বেশ কিছু খেল দেখালো মানুষকে।
এই সরকারের আমলেই প্রথমবারের মতো ভিসা নীতির প্রয়োগ দেখলো বাংলাদেশ, রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞার খড়গও প্রথমবারের মতো আসলো এদের সময়েই, উন্নয়নের চাপে পিষ্ট মানুষ দেখলো গণতন্ত্র সম্মেলনে জায়গা হলো না আমাদের, নিয়মিত বিরতিতেই উপদ্রবের মতো বিদেশি গণমাধ্যমগুলোর শিরোনাম হতে শুরু করলো বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রহসন কিংবা মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো ভয়াবহ সব খবর। আইনের শাসন বা মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে মনের সুখে নামতে থাকলাম আমরা, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে রিজার্ভও যে সরানো যায় সেটাও প্রত্যক্ষ করলো জাতি, দুর্নীতি, টাকা পাচার আর লুটপাটকে মোটামুটি শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেলাম আমরা। জেনারেল আজিজের এই ঘটনার অল্প কিছুদিন আগেই ভীষণভাবে আলোচনায় এসেছিলেন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। তার প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির খবর নিয়ে অনুসন্ধানী রিপোর্ট ছাপে একটি জাতীয় দৈনিক। আসলে তো কেবল একজন আজিজ বা একজন বেনজীর নয়, বিভিন্ন ক্ষেত্রে কিছু মানুষকে চোখ বন্ধ করে যাচ্ছেতাই করতে দিয়েছে এই সরকার। অবশ্য যাচ্ছেতাই করতে দেয়া ছাড়া আর কোনো পথও ছিল না সরকারের হাতে। এর আগে র্যাবের কর্মকর্তাদের ওপরে আসা নিষেধাজ্ঞার কারণ ছিল মানবাধিকার লঙ্ঘন। এবার প্রথমবারের মতো এলো দুর্নীতির অভিযোগে।
দুর্নীতির অভিযোগে নিষেধাজ্ঞার ছিপি যখন খুললোই, নিশ্চয়ই আরও নিষেধাজ্ঞা আসতে যাচ্ছে অনেক রাঘববোয়ালের নামে। একটি সরকার যখন ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসে কিংবা থাকে তখন জনগণের চাওয়া-পাওয়াই তার কাছে মুখ্য হয়। এর বাইরে যাওয়ার কোনো উপায় তখন সরকারের হাতে থাকে না। কিন্তু সরকার যখন নির্বাচিত না হয় অথচ ক্ষমতায় থাকার নিশ্চয়তা চায় তখন কিছু গোষ্ঠীকে অকল্পনীয় সুযোগ-সুবিধা দিয়ে কাছে রাখতে হয়, তাদের সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে হয়। তারা অন্যায্যভাবে সরকারকে ক্ষমতায় রাখে তার বদলে অবিশ্বাস্য দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ পায় তারা। এটা একটা দুষ্টচক্র যারা পরস্পরের সঙ্গে যোগসাজশে নিজেরা লাভবান হয় এবং একে অন্যের স্বার্থরক্ষা করে চলে। সরকারকে ক্ষমতায় রাখার এই দুষ্টচক্রে বিদেশি শক্তির পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরীণ শক্তির মধ্যে আছে সামরিক-বেসামরিক আমলা, পুলিশ এবং ব্যবসায়ীরাও। একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যদি জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় থাকে, তাহলে তখন রাষ্ট্রীয় পদে অধিষ্ঠিত মানুষরা হন ‘পিপলস ম্যান’। একটার পর একটা টার্ম অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার পর এই টোটালিটারিয়ান রাষ্ট্রে কেউ গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পারে না, কেউ বড় ব্যবসায়ী হতে পারবে না, যদি না তারা হন ‘প্রাইম মিনিস্টার’স ম্যান’। তাই, শুধু আজিজ কেন, হু আর নট ‘দ্য প্রাইম মিনিস্টারস ম্যান’?
বাংলাদেশের রাজনীতির দুর্বত্তায়ন আর দুর্নীতিকরন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছেঃ দেশটির জন্মলগ্ন থেকেই। এখন ফুলে-ফেঁপে এত বড় আকার ধারন করেছে, যা সবার নজরে পড়ে।
অন্যায় প্রতিবাদী, দেশ প্রেমিক, স্বচ্ছ ব্যক্তিরা,'দ্য আর নট প্রাইম মিনিস্টার ম্যান
জেনারেল আজিজের এই ঘটনার অল্প কিছুদিন আগেই ভীষণভাবে আলোচনায় এসেছিলেন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। তার প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির খবর নিয়ে অনুসন্ধানী রিপোর্ট ছাপে একটি জাতীয় দৈনিক। আসলে তো কেবল একজন আজিজ বা একজন বেনজীর নয়, বিভিন্ন ক্ষেত্রে কিছু মানুষকে চোখ বন্ধ করে যাচ্ছেতাই করতে দিয়েছে এই সরকার। অবশ্য যাচ্ছেতাই করতে দেয়া ছাড়া আর কোনো পথও ছিল না সরকারের হাতে। এর আগে র্যাবের কর্মকর্তাদের ওপরে আসা নিষেধাজ্ঞার কারণ ছিল মানবাধিকার লঙ্ঘন। এবার প্রথমবারের মতো এলো দুর্নীতির অভিযোগে। দুর্নীতির অভিযোগে নিষেধাজ্ঞার ছিপি যখন খুললোই, নিশ্চয়ই আরও নিষেধাজ্ঞা আসতে যাচ্ছে অনেক রাঘববোয়ালের নামে। একটি সরকার যখন ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসে কিংবা থাকে তখন জনগণের চাওয়া-পাওয়াই তার কাছে মুখ্য হয়। এর বাইরে যাওয়ার কোনো উপায় তখন সরকারের হাতে থাকে না। কিন্তু সরকার যখন নির্বাচিত না হয় অথচ ক্ষমতায় থাকার নিশ্চয়তা চায় তখন কিছু গোষ্ঠীকে অকল্পনীয় সুযোগ-সুবিধা দিয়ে কাছে রাখতে হয়, তাদের সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে হয়। বিজ্ঞাপন তারা অন্যায্যভাবে সরকারকে ক্ষমতায় রাখে তার বদলে অবিশ্বাস্য দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ পায় তারা। এটা একটা দুষ্টচক্র যারা পরস্পরের সঙ্গে যোগসাজশে নিজেরা লাভবান হয় এবং একে অন্যের স্বার্থরক্ষা করে চলে। সরকারকে ক্ষমতায় রাখার এই দুষ্টচক্রে বিদেশি শক্তির পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরীণ শক্তির মধ্যে আছে সামরিক-বেসামরিক আমলা, পুলিশ এবং ব্যবসায়ীরাও
Yes, who are the not Prime Ministers’ Men? ধন্যবাদ, সাহসী উপস্থাপনার জন্য।
হু আর নট ‘দ্য প্রাইম মিনিস্টারস ম্যান’?
এরূপ লেখা সুশীল হলে তবুও মানাতো কিন্তু দুর্নীতির ৫ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দল বিএনপিতে থেকে এরূপ লেখা কপটতা
তারেক জিয়ার নামে কেন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল বলবেন কি ?