রকমারি
হাতিরাও একে অপরকে নাম ধরে ডাকে
মানবজমিন ডিজিটাল
(৩ মাস আগে) ১৪ জুন ২০২৪, শুক্রবার, ১১:২০ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১১ পূর্বাহ্ন
প্রত্যেক মানুষের যেমন আলাদা আলাদা নাম আছে, ঠিক তেমনি স্বতন্ত্র ডাকের মাধ্যমে একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে আফ্রিকান হাতিরা। তাদের এই নামগুলির সঙ্গে মানুষের দেওয়া নামের খুব মিল রয়েছে। নতুন এক গবেষণায় এমন অদ্ভুত তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণা বলছে যে, হাতিরা তাদের অনুকরণ না করে অন্য হাতিদের সম্বোধন করার জন্য ব্যক্তিগত নামের মতো করে ডাকতে শিখেছে। এই ডাকটি শুনে তারা একে অপরকে চিনতেও পারে। গবেষণা বলছে, এর আবার তিনটি ধরণ আছে। দূরে বা দৃষ্টির আড়ালে থাকা হাতিদের সঙ্গে যোগাযোগে এক ধরনের ডাক ব্যবহৃত হয়। একেবারে পাশে থাকা হাতির সঙ্গে যোগাযোগে ব্যবহার করা হয় আরেক ধরনের ডাক। আবার প্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রী বা তরুণী হাতিরা যেসব হস্তী শাবকের যত্ন নেয়, তাদের জন্য অন্য এক ধরনের ডাক ব্যবহার করে।
গবেষকরা অ্যাম্বোসেলি ন্যাশনাল পার্ক এবং সাম্বুরু ন্যাশনাল রিজার্ভের ১০০ টিরও বেশি হাতির তৈরি কণ্ঠস্বর বিশ্লেষণ করে দেখেছেন বেশিরভাগ হাতি তাদের ভোকাল কর্ড ব্যবহার করে এই ডাকাডাকি করে। একটি মেশিন-লার্নিং মডেল ব্যবহার করে, গবেষকরা চিহ্নিত করেছেন যে এই ডাকগুলিতে একটি নাম-সদৃশ উপাদান রয়েছে, যা একটি নির্দিষ্ট হাতিকে চিহ্নিত করে। গবেষকরা তারপরে ১৭টি হাতির জন্য অডিওটি বাজিয়েছিলেন, তারা কীভাবে সাড়া দেবে তা পরীক্ষা করার জন্য। দৃশ্যত এর অডিও শুনে হাতিরা গড়ে আরও জোরালোভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল। অডিও উৎসের দিকে হেঁটে গিয়েছিল।
মেশিন-লার্নিং মডেল ব্যবহার করে ১৯৮৬ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে কেনিয়ায় অ্যাম্বোসেলি ন্যাশনাল পার্ক ও বাফেলো স্প্রিংস রিজার্ভে থাকা বন্য স্ত্রী হাতি ও বাচ্চা হাতির ৪৬৯টি ডাকের রেকর্ডিং পরীক্ষা করে গবেষকরা এমনটি আবিষ্কার করেছেন। নেচার ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশন জার্নালে সোমবার প্রকাশিত গবেষণার প্রধান লেখক কর্নেল ইউনিভার্সিটির আচরণগত বাস্তুবিজ্ঞানী এবং কলোরাডো স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন মিকি পারডোর মতে, গবেষণার ফলাফলগুলি ইঙ্গিত দেয় যে হাতিরা একটি নামের মতো কিছু দিয়ে একে অপরকে সম্বোধন করে। তার মতে, এই যে হাতিরা একে অপরকে ব্যক্তি হিসাবে সম্বোধন করে তা তাদের মধ্যে সামাজিক বন্ধনের গুরুত্ব তুলে ধরে। বন্য প্রাণীদের ক্ষেত্রে একে অন্যকে নাম ধরে ডাকার বিষয়টি খুবই বিরল।
পোষা কুকুর নাম ধরে ডাকলে সাড়া দেয়। ডলফিন শিশুদেরও নাম থাকে। নির্দিষ্ট শিস দিয়ে একে অন্যকে ডাকে। তোতা পাখিরাও সম্ভবত নাম ব্যবহার করে। যেসব প্রাণী নাম ধরে ডাকলে সাড়া দেয়, সেগুলোর সারা জীবনই নতুন নতুন শব্দ শেখার এবং সেগুলো উচ্চারণ করার ক্ষমতা রাখে। প্রাণীদের মধ্যে বিরল এই সক্ষমতা হাতিরও রয়েছে।
সূত্র : খালিজ টাইমস