ঢাকা, ৭ অক্টোবর ২০২৪, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩ রবিউস সানি ১৪৪৬ হিঃ

শরীর ও মন

যে একান্ত গোপন রোগসমূহের চিকিৎসা নেয়া প্রয়োজন

ডা. দিদারুল আহসান
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার

গনোরিয়ার জটিলতা: বিশ্ব জুড়ে এ রোগে প্রতিবছর আক্রান্তের সংখ্যা আনুমানিক সাড়ে ৬ কোটি। পুরুষের ক্ষেত্রে শুক্রনালি বন্ধ এবং উপশুক্রাশয় নষ্ট হয়ে যেতে পারে (এপিডিডাইমিস)। এসব ক্ষেত্রে স্ত্রীসঙ্গমে সমস্যা দেখা না দিলেও সন্তানের বাবা হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়। কারণ ওই ক্ষেত্রে বীর্য তৈরি হয় না সঠিকভাবে। হলেও ভালো নল দিয়ে তা আসতে পারে না। তাই সন্তানের জনক হওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে যায়।
দীর্ঘস্থায়ী হলে প্রস্টেট গ্রন্থির প্রদাহ হতে পারে। ফলে মূত্রনালির সমস্যা দেখা দেয়। যেমন- প্রস্রাব করতে অসুবিধা। এমনকি প্রস্রাব বের হতে বাধাগ্রস্ত ও ব্যথাও হয়। এতে মূত্রনালি সংকীর্ণ হয়ে আসতে পারে। নারীর ক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসা দেয়া না হলে ডিম্বনালির ছিদ্র বন্ধ এবং মা হওয়ার সম্ভাবনা হারিয়ে ফেলে। মূত্রাশয়ের প্রদাহ হওয়ায় ঘন ঘন প্রস্রাব হতে পারে। নারী যদি গর্ভবতী হন, তা হলে সন্তান জন্মদানের সময় শিশুর চোখ আক্রান্ত হতে পারে। এ ছাড়া নারী-পুরুষ উভয় ক্ষেত্রেই হাঁটু বা গোড়ালিতে পুঁজ জমে ফুলে যেতে পারে।
সিফিলিসের জটিলতা: এ ক্ষেত্রেও উপযুক্ত চিকিৎসা না হলে জটিল রূপ ধারণ করে। সঠিক চিকিৎসা না হলে সিফিলিস মেয়াদি সিফিলিসে পরিণত হতে পারে, যা দু’বছরের পর থেকে শুরু করে সিফিলিসের মধ্য থেকে ৩০ শতাংশ প্রাকৃতিকভাবে ভালো হয়ে যেতে পারে। বাকি ৭০ শতাংশের মধ্য থেকে ৩০ শতাংশ মেয়াদি সুপ্ত জীবনব্যাপী সিফিলিস হতে পারে অর্থাৎ সারা জীবন তিনি এ জীবাণুটি উপসর্গবিহীন অবস্থায় বয়ে বেড়াবেন। বাকি ৪০ শতাংশের মধ্য থেকে ১২.৫ শতাংশ স্নায়ুতন্ত্রের সিফিলিস ও ১২.৫ শতাংশ হৃদযন্ত্রের সিফিলিসের জটিলতাসহকারে দেখা দেয়।
আক্রান্ত মায়ের মাধ্যমে গর্ভস্থ শিশুর দেহে এ রোগের জীবাণু প্রবেশ করতে পারে এবং এ ক্ষেত্রে গর্ভপাতও ঘটতে পারে। মৃত সন্তান প্রসব হতে পারে অথবা সিফিলিসে আক্রান্ত হয়ে শিশু জন্মগ্রহণ করতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির হার্ট ও মস্তিষ্কে গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা থেকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে পারেন। কাজেই উপযুক্ত চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্ব আশা করি সবাই বুঝতে সমর্থ হবেন।
শেনকরোয়েডের জটিলতা: চিকিৎসা না হলে বা উপযুক্ত চিকিৎসা না হলে এ থেকে অনেক জটিলতা সৃষ্টি হয়। যেমন-আক্রান্ত ব্যক্তির কুঁচকির লসিকাগ্রন্থি আক্রান্ত হয়ে ওওঘএটওঘঅখ ইটইঙ-তে পরিণত হতে পারে, যা একপর্যায়ে ফেটে গিয়ে নিঃসরণ নালি তৈরি হতে পারে। ফাইমোসিস বা প্যারাফাইমোসিস দেখা দিতে পারে। ফলে পুরুষাঙ্গের ছিদ্র সরু হয়ে প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এ রোগের দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে।
জেনিটাল হারপিসের জটিলতা: এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ। একবার হলে কখনই ভালো হয় না। কিছুদিন পর দেখা দেয় আবার চলে যায় এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর দেখা দেয়। মায়ের এ রোগ থাকলে প্রসবের সময় শিশু আক্রান্ত হতে পারে। এমনকি শিশুর চোখ আক্রান্ত হতে পারে। গর্ভপাত হতে পারে। মায়ের জরায়ুগ্রীবায় ক্যান্সারও হতে পারে।
লেখক: চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি রোগ বিশেষজ্ঞ, সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আল-রাজি হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা। ফোন: ০১৭১৫৬১৬২০০, ০১৮১৯২১৮৩৭৮
 

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status