অনলাইন
সেই খাস্তগীরের নিয়োগ বাতিল
কূটনৈতিক রিপোর্টার
(৮ মাস আগে) ৬ অক্টোবর ২০২৪, রবিবার, ৮:২৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০১ পূর্বাহ্ন

পোল্যান্ডে বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূত কূটনীতিক খোরশেদ আলম খাস্তগীরের নিয়োগ বাতিল করেছে সরকার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সমর্থনকারী মালয়েশিয়া প্রবাসীদের দমনে কুয়ালালামপুরের কাজাং থানায় রিপোর্ট (মামলা) এবং আন্দোলনকারীদের পাসপোর্ট বাতিলের সুপারিশ করার অভিযোগ উঠার প্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে রোববার এ সিদ্ধান্ত আসে। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে প্রচারিত অভিন্ন বার্তায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে খাস্তগীরের নিয়োগ বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এ নিয়ে রোববার মানবজমিন বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশ করে। দায়িত্বশীল সূত্রের বরাতে মানবজমিনের রিপোর্টে বলা হয়, ছাত্র জনতার আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি পড়ুয়া এবং শিক্ষকরা এক সমাবেশ থেকে দেশে চলমান ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সমর্থন ও সহমর্মিতা জানান।
১৯শে জুলাইয়ের ওই সমাবেশ থেকে মালয়েশিয়ান নাগরিক এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতাও কামনা করা হয়। এই যখন অবস্থা তখন কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন ছাত্র-শিক্ষকদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে কাজাং থানায় রিপোর্ট করে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষকরা নানামুখি হেনস্তার শিকার হন। এই মামলায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীর। শুধু তাই নয়, খোরশেদ আলম খাস্তগীর দেশের আন্দোলনকারীদেরও ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যায়িত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। পররাষ্ট্র ক্যাডারদের সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএসএ) হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে (ফাঁস হওয়া চ্যাটে দেখা যায়) তিনি আন্দোলনে সমর্থনকারী মালয়েশিয়া প্রবাসীদের পাসপোর্ট বাতিলের সুপারিশ করেন। ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে আর পতিত স্বৈরশাসনের পক্ষে নগ্নভাবে অবস্থানগ্রহণকারী সেই খাস্তগীরকে ১০ দিন আগে পোল্যান্ডে বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূত হিসাবে নিয়োগের ঘোষণা দেয় ছাত্র-জনতার রক্তের উত্তরাধিকার বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বিতর্কিত ওই কূটনীতিককে পদায়নের ঘোষণায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয় মালয়েশিয়া প্রবাসীদের মধ্যে। তার নিয়োগ বাতিলের দাবি উঠে।
স্মরণ করা যায়- বিদায়ী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে খোরশেদ আলম খাস্তগীরকে বাহরাইনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছিলো। কিন্তু তার অতীত রিপোর্ট পর্যালোচনা করে মানামা তাকে প্রত্যাখ্যান করে। পরবর্তীতে ওয়ারশোতে রাষ্ট্রদূত হিসাবে প্রস্তাব করে শেখ হাসিনা সরকার, যা শেষ পর্যন্ত বহাল রাখে অন্তর্বর্তী সরকার! ৫ মাস ধরে ঝুলে থাকা সেই এগ্রিমো অর্থাৎ খোরশেদ আলম খাস্তগীরকে গ্রহণে অনাপত্তি জ্ঞাপন করে পোল্যান্ড। যার প্রেক্ষিতে ২৫শে সেপ্টেম্বর গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে রাষ্ট্রদূত হিসাবে তার নিয়োগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়। খোরশেদ আলম বিসিএস (ফরেন অ্যাফেয়ার্স) ক্যাডারের ২০তম ব্যাচের কর্মকর্তা। ২০০১ সালে তিনি ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইউরোপ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক সংস্থা অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। তাছাড়া জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন, নিউ ইয়র্কে প্রথম সচিব ও মাস্কাটে বাংলাদেশ দূতাবাসে কাউন্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
পাঠকের মতামত
এইসব বর্বর দের খুঁজে বের করার জন্য মানবজমিন কর্তৃপক্ষকে শুভেচ্ছা জানাই।
সকল অপরাধীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক অবিলম্বে।
অশেষ ধন্যবাদ মানবজমিনকে। এমন অনুসন্ধানমূলক খবর আরো চাই।
এ সমস্ত নিয়োগতো গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে হয়। খাস্তগীর ছিল স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পালিত মানুষ। নিয়োগ বাতিল হয়ে গেল। বেচারা আর হালুয়া রুটি খেতে পারলেন না।