শরীর ও মন
পায়ুপথের রোগ ফিস্টুলা
ডা. মোহাম্মদ তানভীর জালাল
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, শনিবারফিস্টুলা সাধারণত মলদ্বারের রোগ। এটি অন্ত্র, ত্বক, যোনি এবং মলদ্বারের মধ্যে বিকশিত হয়। এই রোগের যথাসময়ে চিকিৎসা না করালে জটিলতা বাড়তে থাকে। ফিস্টুলোটমি হলো- একটি অস্ত্রোপচার পদ্ধতি, যা ফিস্টুলার চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য হলো- মলদ্বারের ত্বক এবং মলদ্বারের শেষের দিকে বেড়ে ওঠা ছোট ছোট ছিদ্র থেকে পুঁজ বের করা। অস্ত্রোপচারের কৌশলটি রোগীকে মলদ্বারে পূর্বের ক্ষত, সংক্রমণ বা প্রদাহের কারণে ঘা দ্রুত বন্ধ করতে এবং নিরাময়ে সহায়তা করবে। মনে রাখা দরকার, ফিস্টুলার প্রধান চিকিৎসা অপারেশন।
লক্ষণ:
* ফোলাভাব, * ত্বকের জ্বালা, লালভাব এবং কোমলতা, * চুলকানি এবং অস্বস্তি, * আক্রান্ত স্থান থেকে পুঁজ বা রক্ত বের হওয়া, * জ্বর সংক্রমণ, * কোষ্ঠকাঠিন্য এবং বেদনাদায়ক মলত্যাগ।
কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন: আপনি যদি ফিস্টুলার অবিরাম লক্ষণগুলো অনুভব করেন তবে আপনার ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন। ডাক্তার যদি নিশ্চিত হন আপনার ফিস্টুলা আছে, তাহলে নির্ণয় নিশ্চিত করতে আপনাকে একজন কোলোরেক্টাল সার্জনের কাছে পাঠাতে পারেন।
চিকিৎসা: অ্যানাল ফিস্টুলা নিরাময়ের জন্য প্রায় সব সময়ই সার্জারি প্রয়োজন। অস্ত্রোপচারটি কোলন এবং রেকটাল সার্জন করে থাকেন। অস্ত্রোপচারের লক্ষ্য হলো অ্যানাল স্ফিংকটার পেশিগুলোকে রক্ষা করে ফিস্টুলা থেকে মুক্তি, যাতে মলদ্বার পায়খানা ধরে রাখতে পারে।
যে ফিস্টুলাগুলোতে সামান্য স্ফিংকটার পেশি জড়িত থাকে না, তাদের ফিস্টুলোটমি অপারেশন করা হয়। আরও জটিল ফিস্টুলার ক্ষেত্রে, সেটন নামে একটি বিশেষ ড্রেন স্থাপন করতে হতে পারে, যা কমপক্ষে ছয় সপ্তাহের জন্য থাকে। একটি সেটন স্থাপন করার পর একটি দ্বিতীয় অপারেশন প্রায় সবসময় করা হয়। যেমন একটি ফিস্টুলোটমি বা একটি অ্যাডভান্সমেন্ট ফ্ল্যাপ বা একটি ফিস্টুলেকটমি উইথ প্রাইমারি রিপেয়ার পদ্ধতি।
ক্রোনস ডিজিজ ফিস্টুলার একটি নতুন চিকিৎসা হলো ফিস্টুলায় স্টেম সেল ইনজেকশন করা। কলোরেকটাল সার্জন অস্ত্রোপচারের আগে সব বিকল্প পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করবেন। ফিস্টুলা সার্জারির পর রোগী একই দিনে বাড়ি চলে যেতে পারেন। যেসব রোগীর খুব বড় বা গভীর ফিস্টুলা টানেল আছে, তাদের অস্ত্রোপচারের পর একদিনের জন্য হাসপাতালে থাকতে হতে পারে। কিছু ফিস্টুলা থেকে মুক্তি পেতে বেশ কয়েক ধাপে অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে। বেশির ভাগ ফিস্টুলা অস্ত্রোপচারে ভালো হয়। অস্ত্রোপচারের পর হিপ বাথ বা সিটজ বাথ নিতে হয় এবং এক সপ্তাহের জন্য মল সফটনার বা জোলাপ গ্রহণ করতে হয়। যদি ফোড়া ও ফিস্টুলা সঠিকভাবে চিকিৎসা করা হয়, তবে তা সম্পূর্ণ নিরাময় হয় এবং বারবার হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক (কলোরেক্টাল সার্জারি বিভাগ) কলোরেক্টাল, লেপারোস্কপিক ও জেনারেল সার্জন বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, ঢাকা।
চেম্বার: ১৯ গ্রীন রোড, এ. কে. কমপ্লেক্স, লিফ্ট-৪, ঢাকা।
ফোন-০১৭১২-৯৬৫০০৯