ভারত
শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ দাবিতে বামপন্থী ছাত্রদের ধর্মঘট
শাসক দলের ছাত্রদের সঙ্গে সংঘর্ষে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা
(১ মাস আগে) ৩ মার্চ ২০২৫, সোমবার, ৪:৩৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০২ পূর্বাহ্ন

পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর পদত্যাগের দাবিতে বামপন্থী ছাত্রদের ডাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সোমবার সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বামপন্থী ছাত্র ইউনিয়নের ছাত্রদের সঙ্গে শাসক দলের ছাত্র ইউনিয়নের সংঘর্ষের সংবাদ পাওয়া গেছে। পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর থেকে কোচবিহার, দার্জিলিং এর কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ব্যাপক সংঘর্ষে বিক্ষোভকারী ছাত্ররা মারধরের শিকার হয়েছেন। ছাত্রীরাও আক্রমণের হাত থেকে বাদ পড়েনি। বামপন্থী ছাত্র ইউনিয়ন এসএফআই ও এআইডিএসওর নেতারা অভিযোগ করেছেন, সব জায়গাতেই তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র ইউনিয়ন ছাত্র পরিষদের ‘গুন্ডারা’ আক্রমণ চালিয়েছে। পুলিশও বিক্ষোভকারীদের ধরে নিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে হেনস্থার শিকার হন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে মন্ত্রীকে ঘিরে ছাত্র বিক্ষোভের সময় আহত হন মন্ত্রী। তার পরেই অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে যাদবপুরে। তাতে জখমও হন শিক্ষামন্ত্রীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো দুই পড়ুয়া। তাদের মধ্যে এক জন সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই-এর কর্মী। অন্যজন আরএসএফের। অভিযোগ, দুই পড়ুয়ার মধ্যে এক জনকে মন্ত্রীর গাড়ি ইচ্ছাকৃতভাবে চাপা দিয়েছে। এক জনের পায়ের উপর দিয়ে গাড়ির চাকা চলে গেছে। এরই প্রতিবাদে রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে এসএফআই।
অধিকাংশ জায়গায় ধর্মঘটের সমর্থনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে গন্ডগোল বাধে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষের জেরে জখমও হন দু’জন। সকালে মেদিনীপুর কলেজেও একই ছবি দেখা গেছে। পড়ুয়াদের কলেজে ঢুকতে বাধা দেয়া নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হওয়ায় পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটক করেও নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। ডিএসও কর্মীদের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া কলেজে। টিএমসিপি কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিলেন ডিএসও কর্মীরা। দু’পক্ষের হাতাহাতিতে জখমও হন কয়েক জন।
বিক্ষোভকারী এক ছাত্রীকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সেখানে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অশান্তির ঘটনায় মোট সাতটি এফআইআর দায়ের হয়েছে। মামলা হয়েছে একাধিক জামিনযোগ্য ও জামিন-অযোগ্য ধারায়। তৃণমূল কংগ্রেসের অনুগামী অধ্যাপকদের সংগঠন ওয়েবকুপা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পডুয়ারা, লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছে দু’পক্ষই। পুলিশ ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রাক্তনীকে গ্রেপ্তার করেছে। ক্যাম্পাসে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর অভিযোগে পড়ুয়াদের তরফেও পাল্টা এফআইআর দায়ের হয়েছে। এ ছাড়াও, স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে দু’টি এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। যে বা যারা শনিবারের অশান্তির সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাদের চিহ্নিতকরণের কাজ চলছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এদিকে যাদবপুরের ঘটনা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট একাধিক জনস্বার্থে মামলা দায়ের হয়েছে।