শরীর ও মন
রোজায় প্রবীণদের স্বাস্থ্য সচেতনতা
ডা. মহসীন কবির লিমন
৭ মার্চ ২০২৫, শুক্রবাররোজায় প্রবীণদের জন্য স্বাস্থ্য সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শরীরের সহনশীলতা কমে যায় এবং দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে নানা শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো-
১. পানি ও পানীয় গ্রহণ:
* ইফতার ও সেহরির মধ্যে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
* চা, কফি বা ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় কম পান করুন, কারণ এগুলো শরীর থেকে পানি শোষণ করে ফেলে।
* ডাবের পানি, লাবাং, ওরস্যালাইন খাওয়া যেতে পারে।
২. সঠিক খাবারের নির্বাচন:
* সেহরিতে ধীরে হজম হয় এমন খাবার যেমন- ওটস, লাল ভাত, ডাল, শাক-সবজি, ডিম, দই ও ফল খাওয়া ভালো।
* ইফতারে ভাজাপোড়া বা অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবারের পরিবর্তে খেজুর, ফল, ডাল-চিঁড়া, স্যুপ ও সবজি গ্রহণ করুন।
* প্রোটিনের জন্য মাছ, মুরগি, ডাল বা সয়াবিন খাওয়া ভালো।
* অতিরিক্ত লবণ ও চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
৩. ওষুধ ও রোগব্যবস্থাপনা:
* যারা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি সমস্যা বা হৃদরোগে ভুগছেন, তারা রোজা রাখার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
* ওষুধের সময়সূচি সামঞ্জস্য করতে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
* রক্তচাপ বা রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করুন।
৪. পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ব্যায়াম:
* অতিরিক্ত ক্লান্তি এড়াতে পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন।
* মৃদু শরীরচর্চা যেমন- হালকা হাঁটা বা স্ট্রেচিং করা যেতে পারে।
* অতিরিক্ত পরিশ্রম বা রোদে বেশি সময় থাকা এড়িয়ে চলুন।
৫. বিপজ্জনক লক্ষণগুলো খেয়াল রাখুন:
* শরীর অত্যধিক দুর্বল লাগলে, মাথা ঘুরলে, বুকে ব্যথা হলে বা খুব বেশি ডিহাইড্রেশন হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
* ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা খুব কমে গেলে বা বেড়ে গেলে রোজা ভেঙে নিতে হতে পারে।
৬. মানসিক ও আধ্যাত্মিক সুস্থতা:
* রোজায় ধীরস্থির থাকা এবং মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন।
* কোরআন তেলাওয়াত, দোয়া ও ইবাদতে সময় দিন, তবে দীর্ঘক্ষণ একটানা দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে কষ্ট হলে বসে নামাজ আদায় করা যেতে পারে।
সঠিক স্বাস্থ্য সচেতনতা মেনে চললে প্রবীণরাও সুস্থভাবে রোজা রাখতে পারবেন।
লেখক: জেরোনটোলজিস্ট অ্যান্ড জেরিয়েট্রিক ফিজিক্যাল থেরাপিস্ট
উপ-পরিচালক, জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ রিটায়ারমেন্ট হোমস অ্যান্ড হসপিটাল।