অর্থ-বাণিজ্য
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বিরতির সুযোগ কাজে না লাগালে বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
(১ সপ্তাহ আগে) ১২ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৮:০৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ২:৫৮ অপরাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর আরোপিত উচ্চ শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেই সুযোগকে কাজে লাগানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও নীতিনির্ধারকরা। বক্তারা বলেন, এই সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উচ্চ শুল্ক পুনর্বিবেচনার বিষয়ে আলোচনা না করলে, বাংলাদেশের বাণিজ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। শনিবার রাজধানীর গুলশান ক্লাবে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশন (বিটিএমএ) আয়োজিত ‘ইউএস ট্যারিফ অন বাংলাদেশেজ এক্সপোর্ট: রিসিপ্রোক্যাল স্ট্র্যাটেজিক্যাল অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড ফর নেগোসিয়েশন’ শীর্ষক আলোচনার উদ্বোধনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন শওকত আজিজ। এতে বক্তব্য দেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ, বিজিএমইএ প্রশাসক আনোয়ার হোসেন, বিপিজিএমইএ সভাপতি শামিম আহমেদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ যদি এখনই সক্রিয় না হয়, তাহলে তিন মাস পরে উচ্চ শুল্ক আবার কার্যকর হলে তা রপ্তানিতে ধস নামাতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়বে।
মাসরুর রিয়াজ বলেন, আগামী ৯০ দিনের পর কী হবে, তা এখনও অনিশ্চিত। তাই এখনই বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে হবে, সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে কী কী প্রস্তাব দিতে পারি, তা বিশ্লেষণ করতে হবে। রপ্তানি বাড়িয়ে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর সক্ষমতা বাংলাদেশের রয়েছে। তিনি বলেন, সরবরাহ শৃঙ্খলের ওপর নির্ভরতা কমানোর জন্য কিছু কৌশলগত প্রস্তাব দেয়া জরুরি। এতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ কমতে পারে। শুধু কূটনৈতিক আলোচনার ওপর নির্ভর না করে বাজারভিত্তিক সমাধান খোঁজার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি। এজন্য ব্র্যান্ড ও বায়ারদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে খাতভিত্তিক এই শুল্কের প্রভাব বিশ্লেষণ করাও গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন মাসরুর রিয়াজ।
বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেছেন, ‘ট্রাম্প ৯০ দিনের জন্য রিসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ স্থগিত করায় প্রাথমিকভাবে খুশি এবং স্বাগত জানাই। তবে আমরা এ নিয়ে চিন্তিত। আমরা জানি না ৯০ দিন পরে কী হবে। তাই আমাদের কী করা দরকার, কোন জায়গায় কী সুযোগ নিতে পারি, ট্রাম্প প্রশাসনকে কী প্রস্তাব দেয়া যায়, এগুলো বিষয়ে আলোচনা করে ঠিক করতে হবে। তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনকে সামনে রেখে কী করা দরকার সেটি নিয়ে আলোচনা দরকার। বর্তমানে শুল্ক সুবিধা থাকলেও বন্দরে বিশেষ ওয়্যারহাউজ সুবিধা নেই। তাই চট্টগ্রাম বন্দরে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের তুলার জন্য পৃথক ওয়্যারহাউজ প্রস্তুত করার প্রস্তাব দিয়েছেন বিটিএমএ’র সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) প্রশাসক এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, ইতিমধ্যে সরকার বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখা শুরু করেছে। তবে ট্রাম্প ট্যারিফ শুধু বাণিজ্য কেন্দ্রীক নয় বলে মনে করছে সরকার। এজন্য ভূরাজনৈতিক ইস্যুকে মাথায় রেখে সঠিক পথে এগুনোর চেষ্টা করছে সরকার।
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) প্রশাসক হাফিজুর রহমান বলেন, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে তুলার দাম একটি বড় বিষয়। সে হিসেবে, শুধু যুক্তরাষ্ট্রের পোশাকের বাজারের জন্য তাদের কাছ থেকে বড় আমদানির প্রস্তুতি নেয়া যেতে পারে। কিন্তু এটা বাংলাদেশের মোট পোশাক রপ্তানির জন্য চিন্তা করলে, তা টেকসই হবে না।