ঢাকা, ৯ মে ২০২৫, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

বিশ্বজমিন

ইরানের চারপাশে মার্কিন রণপ্রস্তুতি

মানবজমিন ডেস্ক

(৩ সপ্তাহ আগে) ১২ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৮:১৭ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৩:০৩ অপরাহ্ন

mzamin

তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ওমানে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা শুরু হয়েছে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে। ২০১৮ সালে এই দুই দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে সর্বশেষ বৈঠক হয়। শনিবার বৈঠক শুরুর আগে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, তার দেশ একটি ন্যায্য চুক্তি চায়। তবে তার মুখপাত্র বলেছেন, মন্ত্রী দীর্ঘ আলোচনা প্রত্যাশা করেন না। যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে। তবে বার বার ইরান এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। এমন প্রেক্ষাপটে শনিবার দুই দেশের দুই প্রতিনিধি আলোচনার জন্য একই কক্ষে বসেছেন কিনা এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ওদিকে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এবার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর বেশ কিছু জোরালো পদক্ষেপ নিয়েছেন। তার মধ্যে ইরান অন্যতম। 

তিনি বলেছেন, ইরান যদি চুক্তি না করে তাহলে সেখানে বোমা ফেলা হবে। এমনভাবে বোমা ফেলা হবে যা এর আগে কখনো দেখা যায়নি। অর্থাৎ এই হুমকির মধ্য দিয়ে তিনি ইরানকে রাজি করানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু ইরান সরাসরি আলোচনায় অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ইরান যদি চুক্তিতে রাজি না হয় তাহলে কিভাবে হামলা চালাবেন ট্রাম্প! এ জন্য এরই মধ্যে অনেক প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন তিনি।  যুক্তরাষ্ট্র কয়েক দশক ধরে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে তাদের ঘাঁটি পরিচালনা করে আসছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ঘাঁটি হলো কাতারে আল উদেইদ বিমান ঘাঁটি। ১৯৯৬ সালে নির্মাণ করা হয় এই ঘাঁটি। এ খবর দিয়ে অনলাইন আরব নিউজ বলছে, অন্য যেসব দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা আছেন তার মধ্যে আছে বাহরাইন, কুয়েত, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। অর্থাৎ ইরানকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলার প্রস্তুতি আছে তাদের। সাধারণ অবস্থায় এ অঞরচলে থাকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৩০হাজার সেনা সদস্য। ২০১১ সালে আফগানিস্তানে ছিলো কমপক্ষে এক লাখ মার্কিন সেনা সদস্য। অন্যদিকে ২০০৭ সালে ইরাকে ছিল কমপক্ষে এক লাখ ৬০ হাজার সেনা সদস্য। সিরিয়ায় আছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় দুই হাজার সেনা। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ছোট্ট ছোট্ট ঘাঁটিগুলোতে তাদের অবস্থান। বাগদাদে ইউএস ইউনিয়ন থ্রি স্থাপনা সহ ইরাকের বিভিন্ন স্থানে আছে প্রায় ২৫০০ মার্কিন সেনা সদস্য। 

সম্প্রতি পেন্টাগন বলেছে, এরই মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে তাদের অতিরিক্ত সেনা বৃদ্ধি করা হয়েছে। মার্চে ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপ ডিয়েগো গার্সিয়ায় মার্কিন-বৃটিশ সামরিক ঘাঁটিতে মোতায়েন করা হয়েছে ৬টি বি-২ বোমারু বিমান। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অবস্থানে থাকার কারণে তারা মধ্যপ্রাচ্যে দ্রুততার সঙ্গে হস্তক্ষেপ করতে পারবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেছেন, এটা তেহরানকে কোনো বার্তা দেবে কিনা সে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ইরানকে। এছাড়া একটি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যাটালিয়ন সহ অধিক পরিমাণ আকাশ প্রতিরক্ষা সামগ্রী এবং অন্য যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থান করছে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি যুদ্ধবিমান বহনে সক্ষম জাহাজ। প্রতিটি বহন করছে কয়েক হাজার সেনা সদস্য ও কয়েক ডজন যুদ্ধবিমান। 

কোথায় সেনা অবস্থান করছে
বিভিন্ন কারণে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থান নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা। ইরাকের মতো কিছু দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা যুদ্ধ করছে দায়েশ ও স্থানীয় শক্তির বিরুদ্ধে। এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র জর্ডান। তাদের আছে কয়েক শত মার্কিন ট্রেইনার। তারা সারাবছরই বড় আকারে মহড়া চালায়। কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অন্য দেশগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা হিসেবে আঞ্চলিক সামরিক শক্তিগুলোকে সহায়তা করে মার্কিন সেনারা। ইয়েমেনে ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। 

যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক ঘাঁটিগুলোতে কি হামলা হয়
যুক্তরাষ্ট্রের যেসব ঘাঁটি আছে তা উচ্চ মাত্রায় প্রহরা বেষ্টিত। এর মধ্যে আছে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা থেকে রক্ষা করা হয়। কাতার, বাহরাইন, সৌদি আরব ও কুয়েতের মতো দেশগুলোতে এমব ঘাঁটিতে সাধারণত হামলা চালানো হয় না। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঘন ঘন ইরাক ও সিরিয়ার ঘাঁটিগুলোতে মার্কিন সেনাদের ওপর হামলা হয়েছে। ২০২৩ সাল থেকে ইয়েমেন উপকূলে হুতি বিদ্রোহীরা বিভিন্ন জাহাজে কমপক্ষে ১০০ বার হামলা করেছে। হুতিদের দাবি, গাজা যুদ্ধে ইসরাইল যেভাবে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালাচ্ছে, তাতে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশের জন্য তারা এসব হামলা করছে। এসব হামলায় ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র। তবে এখন পর্যন্ত হুতিদের কোনো হামলায় মার্কিন কোনো যুদ্ধজাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। 

পাঠকের মতামত

yes

shohag
১৩ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার, ৪:৫১ অপরাহ্ন

ইসলাম ও মুসলমানদের জঘন্য শত্রুরা ইরানকে আর একটি গাজ্জা বানাতে চাচ্ছে।

নুরুল হুদা
১৩ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার, ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন

বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status