অনলাইন
৯,৩০০ ঘণ্টার অভিজ্ঞতা এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত বিমানের পাইলটদের এক অপূর্ণ প্রতিশ্রুতি
মানবজমিন ডিজিটাল
(২ সপ্তাহ আগে) ১৩ জুন ২০২৫, শুক্রবার, ১০:০৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৪:২৪ অপরাহ্ন

বৃহস্পতিবার বিকেলে ভারতের আহমেদাবাদ শহরে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ২৪১ জন যাত্রী এবং ক্রুদের মধ্যে রয়েছেন ক্যাপ্টেন সুমিত সাভারওয়াল এবং ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্ডার। একসাথে, তাদের ৯,৩০০ ঘন্টা উড়ানের অভিজ্ঞতা ছিল। তারা দুজনেই এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার ফ্লাইটের ২৩০ জন যাত্রী এবং ১০ জন ক্রু সদস্যদের নিয়ে লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরে যাচ্ছিলেন। তবে, বিমানটি উড্ডয়নের ৩২ সেকেন্ডের মধ্যেই বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনায় বেঁচে যান কেবল একজন বৃটিশ-ভারতীয় যাত্রী, বিশ্বাস কুমার রমেশ। বিমান দুর্ঘটনায় কেবল ২৪১ জন প্রাণ হারিয়েছেন তা নয়, বরং শত শত স্বপ্ন ভেঙে গেছে এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে বহু পরিবারের আশা। অভিজ্ঞ পাইলট, ক্যাপ্টেন সুমিত সাভারওয়ালের ৮,৩০০ ঘন্টা বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল। পাওয়াইয়ের বাসিন্দা, সাভারওয়াল, তার বাবাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তিনি তার চাকরি ছেড়ে দেবেন এবং পুরো সময় বাবার দেখাশোনা করবেন।
সাভারওয়াল অবিবাহিত ছিলেন এবং তার বয়স্ক বাবার সাথে থাকতেন। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাভারওয়ালদের বাড়িতে সমবেদনা জানাতে আসা শিবসেনা আইন প্রণেতা দিলীপ ল্যান্ডে বলেন, ‘মাত্র কয়েকদিন আগে, তিনি তার বাবাকে বলেছিলেন যে বাবার পুরো সময় দেখাশোনা করার জন্য চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন।’
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সাভারওয়াল পরিবার বিমান পরিষেবার সাথে গভীরভাবে জড়িত। ক্যাপ্টেন সাভারওয়ালের বাবা সিভিল এভিয়েশন ডিরেক্টরেট জেনারেল (ডিজিসিএ) থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন এবং তার দুই ভাগ্নেও পাইলট।
হিন্দুস্তান টাইমসকে এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, যখনই উড়ে যেত, সুমিত আমাদের বলে যেত তার বাবার খেয়াল রাখতে।
সুমিতের সহ-পাইলট ক্লাইভ কুন্ডারের ১,১০০ ঘন্টা বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল। তিনিও বিমান চালনায় উৎসাহী এক পরিবার থেকে এসেছেন, তার মা ছিলেন এয়ার ইন্ডিয়ার একজন সাবেক বিমান পরিচারিকা।
কুন্দারের বাবা-মা বর্তমানে সিডনিতে তাদের মেয়ের সাথে দেখা করতে গেছেন। অভিনেতা বিক্রান্ত ম্যাসি তার কাকা ক্লিফোর্ড কুন্ডারের ছেলে কুন্ডারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টে ম্যাসি লিখেছেন, 'আজ আহমেদাবাদে অকল্পনীয় মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের পরিবার এবং প্রিয়জনদের জন্য আমার হৃদয় ভেঙে গেছে। আমার চাচা ক্লিফোর্ড কুন্ডার তার ছেলে ক্লাইভ কুন্ডারকে হারিয়েছেন জেনে আরও বেশি কষ্ট হচ্ছে, যিনি সেই দুর্ভাগ্যজনক বিমানে প্রথম অফিসার ছিলেন। ঈশ্বর আপনাকে, আপনার পরিবারকে, চাচাকে এবং গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সকলকে শক্তি দিন।
ডিজিসিএ জানিয়েছে, বিমানের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কিছুক্ষণ আগে পাইলট ক্যাপ্টেন সাভারওয়াল বিমান নিয়ন্ত্রণে আনতে না পেরে ‘মেডে’ কল করেন। ‘মেডে’ কল হল একটি বিপদ সংকেত যা মূলত বিমান এবং সামুদ্রিক যোগাযোগে ব্যবহৃত হয় ,যা জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ জরুরি অবস্থা নির্দেশ করে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১:৩৮ মিনিটে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমানটি যাত্রা শুরু করে। ৮২৫ ফুট উচ্চতায় ওঠার পর সেটি ভেঙে পড়ে ঘটে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ।
সূত্র : এনডিটিভি