প্রথম পাতা
‘দেশের জন্য যেকোনো ছাড় দিতে রাজি আছি’
আরিফ মাহফুজ, লন্ডন থেকে
২১ জুন ২০২৫, শনিবার
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের লন্ডন সফর ছিল ঐতিহাসিক। এই সফরের দিকে ছিল পুরো দেশের চোখ। হাই ভোল্টেজ এই বৈঠক নিয়ে জাতির প্রত্যাশা ছিল আকাশচুম্বী। ১৩ই জুন সকালে লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে অনুষ্ঠিত হওয়া এই বৈঠক পুরো দেশের জন্য এক ইতিবাচক বার্তা নিয়ে আসে। নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে সৃষ্ট ধোঁয়াশা কেটে যায়। আসছে মধ্য ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে পারে এ বিষয়ে সরকার প্রধানের পক্ষ থেকে আশ্বাস মেলে। এতে সন্তোষ প্রকাশ করেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। অন্যান্য দলের পক্ষ থেকেও বৈঠকের পাওয়া আশ্বাসের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়। এই আশ্বাসটুকু আদায় করতে বৈঠকের আগে কেমন প্রস্তুতি ছিল বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। এই বিষয়ে জানতে মানবজমিন মুখোমুখি হয়েছিল বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবিরের। ড. ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠকের আগে পরে তিনি বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে ছিলেন। একান্ত বৈঠকের আগের পরিচয় পর্বেও তিনি উপস্থিত ছিলেন। হুমায়ুন কবির বলেন, বৈঠকে অংশ নিতে যাওয়ার পথে তারেক রহমান খুব কম কথা বলেছেন। তিনি বলছিলেন, আজ দেশের জন্য যেকোনো ছাড় দিতে প্রস্তুত আছি।
বৈঠকে অংশ নিতে যাওয়ার যাত্রা পথের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, কিংস্টন থেকে পার্কলেন ডরচেস্টার হোটেল মাত্র ১১ মাইল রাস্তা। পৌঁছতে সময় লাগে প্রায় ১ ঘণ্টা। তারেক রহমান খুবই শান্ত ছিলেন। তিনি সহযাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলছিলেন, যাচ্ছি- দেখি গিয়ে দেশের জন্য কিছু করা যায় কিনা। তারেক রহমান বলছিলেন, দেশের জন্য আমার যদি কোনো বিশেষ ছাড় দিতে হয়, তাহলে যেকোনো ছাড় দেবো, অসুবিধা কি?’ এই মনোভাব নিয়েই এগুচ্ছিলেন। তারেক রহমান আরও বলছিলেন আজ এই জায়গায় পৌঁছার জন্য কতো নিরীহ মানুষ জীবন দিয়েছে, বহু রক্তের উপর দিয়ে আমরা এখানে এসেছি। জার্নিটা ছিল এক্সাইটমেন্ট, আবেগঘন।
তিনি বলেন, বৈঠক শেষ হওয়ার পর ফেরার যাত্রাপথ আবার ভিন্ন ছিল। বৈঠকের ফলাফল ইতিবাচক আসায় তারেক রহমান ছিলেন প্রফুল্ল। তিনি জাতির জন্য একটি সুসংবাদ দিতে পেরেছেন। এজন্য সবারই ভালো লাগছিল। বৈঠকে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে যদি, কিন্তু, হতে পারে এমন কথা আছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে এমন কী গ্যারান্টি আছে? এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারেক রহমানের এই উপদেষ্টা বলেন, একেবারেই ক্লিয়ার মেসেজ। আগামী রমজানের আগেই নির্বাচন হবে। এখানে কোনো যদি-কিন্তু নেই।
লন্ডনে অনুষ্ঠিত বৈঠক নিয়ে জামায়াত নাখোশ- এ বিষয়টিকে কীভাবে দেখেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তারা যদি মনে করে তারা বাংলাদেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন তাহলে এই বৈঠক নিয়ে তাদের দুঃখ-কষ্ট থাকতে পারে। আর যদি তারা বাংলাদেশের জনগণের অংশ হয়ে থাকে তাহলে তারা খুশি হওয়ার কথা।
জাতির স্বার্থে ড. ইউনূসকে বাংলাদেশে প্রয়োজন আছে তারেক রহমানের এমন মন্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে হুমায়ুন কবির বলেন, তারেক রহমান বলেছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতো বিজ্ঞজনের ভূমিকা ও উপদেশ জাতির জন্য প্রয়োজন আছে। সবার মতামতের ভিত্তিতেই যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে। নির্বাচনের মাধ্যমেই তার কাজ শেষ হয়ে যাবে না। জাতির জন্য একটি শ্রেষ্ঠ নির্বাচন দিতে বিএনপি তার সঙ্গে আছে। তারেক রহমান আমাকে বলেছেন, জনগণ যদি আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দেয় তাহলে প্রথম যে কয়জন ব্যক্তিকে আমি ভাববো এর মধ্যে ড. ইউনূসও থাকবেন।
প্রায় ১৮ বছর নির্বাসনে থেকে তারেক রহমানের রাজনৈতিক লড়াইয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, তারেক রহমান ইজ এ ইউনিক পলিটিশিয়ান। গত প্রায় দেড় যুগ দেশে না থেকেও বিচক্ষণতার সঙ্গে দলকে সুসংগঠিত করে রেখেছেন। বিএনপিকে ভাঙতে অনেক চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু তার দূরদর্শিতা, বিচক্ষণতার কারণে বিএনপিকে কেউ ভাঙতে পারেনি। ছাত্র-জনতার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি জুলাই-আগস্টের ফল একদিনে আসেনি, এটি তারেক রহমানের দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল। তারেক রহমানের চিন্তা-চেতনায় শুধু দেশের উন্নয়ন।
তারেক রহমান কবে দেশে ফিরবেন এই প্রশ্নে হুমায়ুন কবির বলেন, নির্বাচনের দিন তারিখ ঘোষণা করা হলেই তিনি ফিরবেন। তার দেশে ফেরার দিন, মাস এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে ২০২৫ সালেই তিনি দেশে প্রত্যাবর্তন করবেন এটা নিশ্চিত।
পাঠকের মতামত
আমাদের দেশের নেতারা ক্ষমতার বাইরে থাকার সময় , এমনকি নির্বাচনের আগেও অনেক সুন্দর সুন্দর কথা বলে। কিন্তু ক্ষমতায় যাবার পর তারা এক ভিন্ন রূপে আবির্ভূত হয়। এই তারেক সাহেবের ই একটি অত্যন্ত খারাপ রূপ আমরা দেখেছিলাম ২০০১-২০০৬ মেয়াদে। উনার কতটুকু পরিবর্তন হয়েছে সেটা বুঝার জন্য উনার আবার ক্ষমতায় যাবার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
He is a coward, a liar, a seditious, an ungrateful, an opportunistic, and an India-loving person. He does not have any leadership quality.
'দেশের জন্য যেকোনো ছাড় দিতে রাজি আছি’ except early election so that he can grab the power and his people can start stealing and extorting. Ha ha hah!
এই হলো নেতার মত কথা। দেশ আগে। ধন্যবাদ।
প্রিয় নেতা, দেশের জন্য ভারতকে কোন ছাড় দিতে পারবেন না। সেই প্রত্যাশা সকল রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি।