অনলাইন
সহযোগীদের খবর
জাতীয় সংসদ নির্বাচন: পিআর পদ্ধতি নিয়ে জটিল সমীকরণ রাজনীতিতে
অনলাইন ডেস্ক
(১১ ঘন্টা আগে) ৩ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৮:৫৯ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৯:০৫ পূর্বাহ্ন

যুগান্তর
‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন: পিআর পদ্ধতি নিয়ে জটিল সমীকরণ রাজনীতিতে’-এটি দৈনিক যুগান্তরের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর (প্রোপোশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতি চালু করার প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক সমীকরণ জটিল পরিস্থিতিতে রূপ নিয়েছে। সংবিধান সংস্কার কমিশন এবং নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের ভিত্তিতে শুধু জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষে এ পদ্ধতি চালুর বিষয়ে কাজ করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তবে প্রস্তাবটি নিয়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রকাশ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।
বিএনপি ও সমমনা ৬টি দল ও জোট এ পদ্ধতির বিরোধিতা করছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), এবি পার্টিসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতি চালুর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তবে জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সংসদের উচ্চকক্ষ এবং নিম্নকক্ষ দুই জায়গায় পিআর পদ্ধতি চালুর দাবি জানিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, নির্বাচনের এ পদ্ধতি সংবিধান সংস্কারের সঙ্গে জড়িত। এ বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য না হলে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার আটকে যেতে পারে।
জানতে চাইলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার যুগান্তরকে বলেন, প্রাথমিক আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন মত পাওয়া গেছে। এ কারণে এ বিষয়ে আবারও আলোচনার প্রয়োজন হবে। আরও গভীর আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্য সৃষ্টির চেষ্টা করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি অন্যতম একটি মৌলিক বিষয়। এখনই এ বিষয়ে আর কিছু বলা ঠিক হবে না।
দেশে প্রথম ভোট সর্বোচ্চ (ফার্স্ট পাস্ট দ্য পোস্ট) পদ্ধতি চালু রয়েছে। একটি আসনে যে দলের প্রার্থী অন্যদের চেয়ে বেশি ভোট পান সেই দলের প্রার্থী জয়ী হন। একই ভাবে যেই দলের প্রার্থী বেশি আসন পান, সেই দল সরকার গঠন করে। বিগত নির্বাচনগুলোতে এভাবেই ফলাফল নির্ধারিত হয়েছে। বর্তমানে রাজনীতিতে আলোচিত পিআর বা সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব হচ্ছে, রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে আসন পাবে। অর্থাৎ কোনো দল নির্বাচনে ১০ শতাংশ ভোট পেলে ওই দল জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ৩০টি আসন পাবে। নির্বাচনে এই পদ্ধতি চালুর পক্ষে জোরালো প্রচারণা চালাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী আন্দোলন। যদিও বিএনপি এর ঘোর বিরোধিতা করছে। দলটি মনে করছে, এ পদ্ধতি চালুর নামে নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এমনকি এ পন্থায় আসন বাড়ার পথ তৈরি করতে চায় ছোট দলগুলো।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ২৯ জুন অনুষ্ঠিত বৈঠকে সংসদের নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ এবং পিআর পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়। ওই বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তাদের প্রস্তাবে সংবিধান সংস্কার কমিশন ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব একীভূত করে রাজনৈতিক দলগুলোর সমানে উপস্থাপন করে। সেখানে জাতীয় সংসদ নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ-এই দুই ভাগে বিভক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। নিম্নকক্ষে বিদ্যমান নিয়মানুযায়ী জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে সংসদ-সদস্য নির্বাচনের বিধান বহাল রাখা হয়েছে। তবে সংরক্ষিত নারী আসন সংখ্যা ৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ করা এবং শুধু নারী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে সরাসরি নির্বাচিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর উচ্চকক্ষে ১০০ জন প্রার্থী মনোনীত হবেন রাজনৈতিক দলগুলোর সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব হারে। উচ্চকক্ষের সদস্যরা অর্থ বিল বাদে সব ধরনের আইন প্রণয়নে পর্যালোচনা ও পরামর্শ দিতে পারবেন। সংবিধান সংশোধন, জাতীয় নিরাপত্তাসংক্রান্ত চুক্তি এবং যুদ্ধ ঘোষণাসংক্রান্ত বিল নিম্নকক্ষের সঙ্গে উচ্চকক্ষের অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা থাকবে। ওই দিন বৈঠকে সংসদ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট করার প্রস্তাবে বিএনপিসহ বেশির ভাগ দল উচ্চকক্ষের নির্বাচন প্রক্রিয়া ও ক্ষমতা নিয়ে মতভিন্নতা দেখা দেয়। ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন অবান্তর ধারণা বলে মত দেন বিএনপির নেতারা। তারা নিম্নকক্ষের আসন সংখ্যার অনুপাতে উচ্চকক্ষে আসন নির্ধারণের দাবি জানান। ওই মত সমর্থন করে ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এনডিএম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও লেবার পার্টি।
পিআর পদ্ধতির বিরোধিতা করে ১ জুলাই বিএনপি আয়োজিত ‘গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪ : জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনি ব্যবস্থা ঐক্যের পরিবর্তে বিভক্তিমূলক সমাজ এবং অস্থিতিশীল সরকার সৃষ্টির কারণ হয়ে ওঠতে পারে কিনা তা সব রাজনৈতিক নেতাকে ভেবে দেখার অনুরোধ করব। তিনি বলেন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনি ব্যবস্থার আড়ালে আবার দেশের রাজনীতিতে ফ্যাসিস্ট পুনর্বাসনের পথ সুগম করে দেওয়া হচ্ছে কিনা, তা সবার গুরুত্ব দিয়ে ভাবা দরকার। নিত্যনতুন ইস্যু সামনে আনলে ষড়যন্ত্রকারীরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
এনসিপি, নাগরিক ঐক্যসহ বেশিরভাগ দল ওই দিনই ওই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যদি নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষ গঠন করা হয়, তাহলে এটি নিম্নকক্ষের ‘রেপ্লিকা’ হবে।
আর এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, নিম্নকক্ষের আসনের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন হলে সেটার কোনো মানে হয় না। আর উচ্চকক্ষের ক্ষমতা না থাকলে সেটার প্রয়োজনীয়তা থাকে না। জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের নেতারা উচ্চকক্ষের পাশাপাশি নিম্নকক্ষেও সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে নির্বাচনের প্রস্তাব করেন।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এমন মতবিরোধ থাকলে সংস্কার বাস্তব মুখ দেখবে না বলে মনে করেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. মো. আব্দুল আলীম। তিনি যুগান্তরকে বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ নেপাল, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়াসহ বিশ্বের অন্তত ৯০টি দেশে পিআর পদ্ধতি চালু রয়েছে। বাংলাদেশে এই পদ্ধতি চালু হলে তা হবে নতুন। যদিও এই আলোচনা অনেক আগে থেকেই রয়েছে। এতে ভোটের অপচয় কম হয়। ভোটারদের কাছে দল দায়বদ্ধ থাকে। তবে এ পদ্ধতির ইতিবাচক দিকের পাশাপাশি কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে। এ কারণে রাজনৈতিক সংস্কৃতি যতদিন পরিবর্তন না হবে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হবে ততদিন এ পদ্ধতি কার্যকর করা কঠিন হবে।
প্রথম আলো
দৈনিক প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম ‘সাবেক সিইসির জবানবন্দি: তখন ভোট নিয়ন্ত্রণ করেছিল এনএসআই-ডিজিএফআই।’ প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে দিনের ভোট রাতে হয়েছে বলে আদালতের কাছে স্বীকার করেছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগের সরাসরি হস্তক্ষেপে দিনের ভোট রাতে করাসহ নানা অনিয়ম হয়েছে। তখন গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই ও ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পুরো নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল বলে তিনি পরে বুঝতে পারেন।
একাদশ জাতীয় সংসদের ভোট হয়েছিল ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর। ওই নির্বাচনের পরপরই দিনের ভোট রাতে করার বিষয়টি দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচিত হয়। প্রায় সাত বছর পর নির্বাচনের সেই অনিয়মের বিষয়টি তৎকালীন সিইসি নিজে আদালতের কাছে দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে তুলে ধরেছেন। জবানবন্দিতে তাঁর এই বক্তব্য সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সাবেক সিইসি নূরুল হুদা গত মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি রেকর্ড করেন সিএমএম আদালতের অ্যাডিশনাল সিএমএম মো. জিয়াদুর রহমান।
কালের কণ্ঠ
দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রথম পাতার প্রতিবেদন ‘পিআর পদ্ধতি: স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থাকবে না’। খবরে বলা হয়, দেশে সংসদ নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতি চালু হলে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের বাইরে স্বতন্ত্র কেউ প্রার্থী হতে পারবেন না। কারণ এ পদ্ধতিতে ব্যক্তিকে নয়, ভোট দিতে হবে দলকে। পিআর পদ্ধতির পক্ষে-বিপক্ষে চলমান আলোচনার মধ্যে এ তথ্যটি স্পষ্ট করেন নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের দুজন সদস্য অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ ও ড. মো. আবদুল আলীম। কালের কণ্ঠকে তাঁরা বলেন, পিআর পদ্ধতির নির্বাচন দলের জন্য প্রযোজ্য।
এ নির্বাচন আসনভিত্তিক এবং ব্যক্তির জন্য নয়। পদ্ধতিটি চালু হলে দেশে নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল, তা আর থাকবে না। ভোটাররাও দলের বাইরে কাউকে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন না।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, দেশের আগের সব সংসদ নির্বাচনেই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন এবং নির্বাচনে জয়ী হয়ে জাতীয় সংসদে আসন লাভ করেন।
সংসদ নির্বাচনগুলোর মধ্যে প্রথমটিতে পাঁচজন, দ্বিতীয়টিতে ১৬ জন, তৃতীয়টিতে ৩২ জন, চতুর্থটিতে ২৫ জন, পঞ্চমে তিনজন, ষষ্ঠতে ১০ জন, সপ্তমে একজন, অষ্টমে ছয়জন এবং নবমে চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হন। বিতর্কিত দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও অনেক স্বতন্ত্রপ্রার্থী অংশ নেন। দলে অন্যায় অবমূল্যায়নের শিকার হয়েও অতীতে অনেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে লড়েছেন এবং বিজয়ীও হয়েছেন। কিন্তু পিআর পদ্ধতি চালু হলে সে সুযোগ থাকবে না।
সমকাল
দৈনিক সমকালের প্রথম পাতার খবর ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারে একমত, গঠন প্রক্রিয়ায় ভিন্নমত’। খবরে বলা হয়, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনে একমত সংস্কারের সংলাপে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলো। তবে গঠন পদ্ধতি নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। গতকাল বুধবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে দলগুলো সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে বিশেষায়িত সাংবিধানিক কমিটি গঠনেও একমত হয়েছে।
বিএনপি চায়, সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে গঠন পদ্ধতি, তা ফিরিয়ে আনা হোক। অর্থাৎ সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হবেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। তবে দলটি জানিয়েছে, বিচার বিভাগকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার থেকে দূরে রাখতে কোনো উত্তম প্রস্তাব এলে আলোচনা করবে। এ ব্যাপারে বিএনপিরও নিজস্ব প্রস্তাবনা রয়েছে।
জামায়াতে ইসলামী জানিয়েছে, তারাও চায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হবেন সাবেক প্রধান বিচারপতি। তবে ২০০৬ সালের অভিজ্ঞতার কারণে রাষ্ট্রপতিকে প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্বে চায় না দলটি। জামায়াত স্থানীয় নির্বাচনও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে চায়।
এনসিপিও নির্বাচনকালীন সরকার চায়। দলটির প্রস্তাব, সংসদের নিম্নকক্ষে সরকারি ও বিরোধী দলের সমন্বয়ে গঠিত ১১ সদস্যের কমিটি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে প্রাপ্ত নাম বিবেচনা করে প্রধান উপদেষ্টা বাছাই করবে। কমিটির আট সদস্য যে নাম সমর্থন করবেন, তিনি হবেন প্রধান উপদেষ্টা। তা সম্ভব না হলে উচ্চকক্ষ ‘র্যাঙ্কড চয়েজ’ পদ্ধতিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাবিত নাম থেকে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচিত করবে।
নয়া দিগন্ত
‘সরকার পরিবর্তনের ছক আ’লীগের’-এটি দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, তৃতীয় শক্তির উত্থানের মাধ্যমে প্রথমত সরকার পরিবর্তনের ছক কষছে পতিত আওয়ামী লীগ। কিভাবে তৃতীয় শক্তির উত্থান ঘটানো যায় সেজন্য গ্রাউন্ড তৈরি করছে দলটির পালিয়ে থাকা শীর্ষ নেতৃত্ব। বিশেষ করে ভারতে অবস্থান করা দলটির প্রধান শেখ হাসিনা ওই দেশেরই একটি গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার পরিবর্তনের জন্য বড় ধরনের পরিকল্পনা সাজিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এ দিকে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ এখনো ঘোষণা না হলেও ২০২৬ সালের এপ্রিলের আগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ধরে নিয়ে পতিত আওয়ামী লীগ ও তার সমর্থিত দলগুলো বাদে দেশের অন্য দলগুলোর মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। অপর দিকে সরকার পরিবর্তনের ছক বাস্তবায়নে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সর্বোচ্চ তৎপরতা চালানোর চিন্তাভাবনা রয়েছে পতিত আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের। যদি এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয় তাহলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য, দ্বিতীয়ত: বিকল্প হিসেবে রাজনৈতিক সমঝোতার দিকে আওয়ামী লীগ আগাবে বলে দলটির নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে নজিরবিহীন পতনের পর জুডিশিয়াল ক্যু’র মাধ্যমে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করার জন্য ভয়াবহ পরিকল্পনা করেছিল আওয়ামী লীগ। সেটি ব্যর্থ হওয়ার পর গ্রাম পুলিশের আন্দোলন, আনসারদের আন্দোলন, পোশাক শ্রমিকদের অসন্তোষ, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীদের আন্দোলন, সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলন, সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সর্বশেষ এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনসহ গত ১১ মাসে গড়ে উঠা বড় বড় আন্দোলনের ওপর ভর করে সরকার পরিবর্তনের তৎপরতা চালিয়ে আসছে দলটি। ওই সব পরিকল্পনা ব্যর্থ হওয়ার পর পতিত আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা আবারো সরকার পরিবর্তনের নতুন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
বণিক বার্তা
দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম ‘রিজার্ভ চুরির সুরাহা: আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে কমিটিও পূর্বের পথেই হাঁটছে’। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আর্থিক কেলেঙ্কারিগুলোর একটি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি। আওয়ামী লীগ সরকারের টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ২০১৬ সালে সংঘটিত এ সাইবার চুরির ঘটনা গোটা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছিল। বহুল আলোচিত এ ঘটনার আট বছরেও তদন্ত শেষ করতে পারেনি শেখ হাসিনা সরকার। উল্টো প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতে তদন্তের গতিপথ বদলে দেয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী দেশের মানুষের প্রত্যাশা ছিল রিজার্ভ চুরির ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটিত হবে। তদন্ত ও বিচারের আওতায় আসবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের অপরাধীরা। কিন্তু গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পার হতে চললেও এ বিষয়ে এখনো কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যায়নি। চলতি বছরের ৩ মার্চ এ বিষয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের নেতৃত্বাধীন একটি কমিটি গঠন হলেও সেটি কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। ছয় সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের ওই কমিটির দায়িত্ব ছিল তিন মাসের মধ্যে সুপারিশ দেয়ার। চার মাস পেরোলেও রিজার্ভ চুরির রহস্য উদ্ঘাটনে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতিই হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০০ কোটি ডলার চুরির চেষ্টা চালানো হয় ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি। এর মধ্যে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করতে সক্ষমও হয় অপরাধীরা। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এ আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা তদন্তে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের নির্দেশে একটি কমিটি করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি ওই বছরেরই ২০ মার্চ কাজ শুরু করে।
আজকের পত্রিকা
‘৯ জুলাইয়ের মধ্যে শুল্ক চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা’-এটি দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের পর দেশটির সঙ্গে ‘পারস্পরিক শুল্ক চুক্তি’ নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এই আলোচনায় গতি থাকলেও সমঝোতার পথ সুগম হয়নি এখনো। কারণ, চুক্তি নিয়ে দুই দেশের অবস্থানের মধ্যে রয়েছে বিস্তর ফারাক। ফলে ৯ জুলাইয়ের মধ্যে চুক্তি চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পারস্পরিক শুল্ক চুক্তি নিয়ে মূল জটিলতা সৃষ্টি করেছে দুই পক্ষের নীতিগত অবস্থান। যুক্তরাষ্ট্র চায়, বাংলাদেশের রপ্তানি মার্কিন আইন অনুযায়ী পরিচালিত হোক এবং দেশটি যদি কোনো তৃতীয় দেশের ওপর শুল্ক বা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, বাংলাদেশও যেন একই ধরনের ব্যবস্থা নেয়। যুক্তরাষ্ট্রের এই চাওয়া বাংলাদেশের বহুপক্ষীয় বাণিজ্যনীতি ও কৌশলগত অবস্থানের পরিপন্থী।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে, যেসব পণ্যে তারা শুল্কছাড় পাবে, সেসব পণ্যে বাংলাদেশ যেন অন্য কোনো দেশকে একই সুবিধা না দেয়। অন্যদিকে বাংলাদেশ বলছে, এই দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। ঢাকা চায়, চুক্তির আওতায় দুই দেশ পারস্পরিক পণ্যে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ হারে শুল্ক ধার্য করুক এবং কোনো পক্ষ একতরফাভাবে শুল্ক বা বাণিজ্যিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে না।
দেশ রূপান্তর
দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রথম পাতার খবর ‘ফেব্রুয়ারি-এপ্রিল তবু সংশয়’। প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্দিষ্ট সময়সূচি এখনো চূড়ান্ত হয়নি, তবে সম্ভাব্য সময় হিসাবে সরকারপক্ষ থেকে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিলের কথা বলা হচ্ছে। যদিও নির্বাচন কমিশন এখনো সরকারের কাছ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা পায়নি, তবুও নির্বাচন আয়োজনের বিশাল প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে কমিশন কিছু কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে।
‘সংস্কার’, ‘বিচার’, ‘নির্বাচন’ প্রশ্নে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো একমত। তবে নির্বাচনের সুর্নিষ্ট রোডম্যাপ না থাকায় নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়েও জনমনে সংশয় রয়েছে।
নির্বাচন কমিশন যেসব কার্যক্রম শুরু করেছে তার মধ্যে রয়েছে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, আইন ও বিধিমালা সংশোধন, সংলাপ আয়োজন, আসন পুনর্বিন্যাস, নতুন দল ও পর্যবেক্ষক নিবন্ধন প্রক্রিয়া। নির্বাচন কমিশনের ভাষ্য, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ ঘিরেই তাদের প্রস্তুতি এগিয়ে রাখছেন। সরকারের পক্ষ থেকে যখনই সিদ্ধান্ত আসবে, তখনই নির্বাচন কমিশন শিডিউল ঘোষণা করবে।
বাংলাদেশ প্রতিদিন
‘ছাত্রলীগের তালিকায় দেওয়া হয়েছিল বিসিএসে নিয়োগ!’-এটি দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় আর পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) মিলেমিশে নিয়ম লঙ্ঘন করে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ক্যাডার-ননক্যাডার কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধার সনদ নেই এবং ওই কোটায় প্রার্থী উল্লেখ না করলেও বিশেষ বিবেচনায় নিয়োগ পেয়ে চাকরি করছেন। এভাবে ১৭ জনের চাকরির তথ্য পাওয়া গেছে। পিএসসি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বর্তমান সচিবরাও বলছেন এটি বিধিবহির্ভূত বড় নিয়মের লঙ্ঘন। দুই মাসের অনুসন্ধানে উঠে আসে ২৯ বিসিএস নিয়ে ভয়ংকর তথ্য।
২৯ বিসিএসের ১৭ জনের নিয়োগে বড় অনিয়ম আর মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩১ জনকে বিনা কারণে চাকরিতে হয়রানির তথ্য উঠে আসে। ৩১ জনকে হয়রানি ও ভুয়া ক্যাডার প্রমাণ করতে সর্বোচ্চ আদালতের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের রায় গোপন রেখে নামে-বেনামে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে পিএসসি-জনপ্রশাসনে। হয়রানি করতে দৌড়াচ্ছে দুদকে। অথচ অবৈধ নিয়োগ পাওয়া ১৭ জনের কিছুই হচ্ছে না, কারণ তাঁদের সহযোগিতা করছেন আওয়ামী লীগের সুবিধা নেওয়া ব্যাচমেটরাই।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ২৯ বিসিএসে সুপারিশ করে পিএসসি। যার গেজেট প্রকাশ হয় জুলাই মাসে। ভাইভা শেষ হওয়ার পর পিএসসি সুপারিশের ১৪ দিন আগে ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৭ ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতার নামে বিধিবহির্ভূত একটি প্রত্যয়নের চিঠি দেয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। যাঁরা মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ক্যাডার ও ননক্যাডারে নিয়োগ পেয়েছেন।