শেষের পাতা
টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন
ভারত কেন ‘অংশগ্রহণমূলক’ নির্বাচন চায়?
মানবজমিন ডেস্ক
১০ মার্চ ২০২৫, সোমবারবাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনার বিষয়ে জোর দিয়েছে ভারত। ‘অংশগ্রহণমূলক’ নির্বাচন আহ্বান তাদের। গতকাল প্রভাবশালী অনলাইন ডেইলি টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এমন কথা বলা হয়েছে। সাংবাদিক দেবাদীপ পুরোহিতের লেখা ওই প্রতিবেদনের শিরোনাম ‘শেখ হাসিনা থ্রাস্ট ইন বাংলাদেশ পোল প্রোড: ইন্ডিয়া কলস ফর ইনক্লুসিভ ইলেকশন’। এতে আরও বলা হয়, সাত মাস আগে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। তারপর থেকে নয়াদিল্লি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেছে, বাংলাদেশের নির্বাচন হওয়া উচিত অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক। গত শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দু’টি খুব তীক্ষ্ণ বিষয়ের ইঙ্গিত দিয়েছে। তা হলো, বর্তমানে ভারতে থাকা শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বাইরে রাখা উচিত নয়। অন্যটি হলো বিদ্যুতের বর্ধিত লিজের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগকে হালকাভাবে দেখছে ভারত। পূর্বাঞ্চলীয় প্রতিবেশী বাংলাদেশ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন- ‘স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক ও প্রগতিশীল বাংলাদেশকে সমর্থন করি আমরা, যেখানে সব সমস্যার সমাধান হতে হবে গণতান্ত্রিক উপায়ে, একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে’।
টেলিগ্রাফ আরও লিখেছে, গত আগস্টে শেখ হাসিনা রাজপথের প্রতিবাদ-বিক্ষোভে ক্ষমতাচ্যুত হন এবং ড. ইউনূসের নেতৃত্বে ক্ষমতায় আসে অন্তর্বর্তী সরকার। তখন থেকেই বাংলাদেশ টালমাটাল। তাড়াতাড়ি নির্বাচন দেয়ার দাবি জোরালো থেকে আরও জোরালো হচ্ছে। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই সরকার আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছে। অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচনের একটি টাইমফ্রেম ঘোষণা করেছেন ড. ইউনূস। তবে কোনো রোডম্যাপের বিষয়ে জোর দেননি। কিছু কিছু তরুণ নেতা- যারা নিজেদের ছাত্র বলে দাবি করেন এবং ড. ইউনূসের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব আছে, তারা বলছেন নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সংস্কার হওয়া উচিত। বার বার তাদের এমন দাবির ফলে অস্থিরতা আরও বেড়েছে। জামায়াতে ইসলামী এবং নিষিদ্ধ হিযবুত তাহরীর থেকে বেরিয়ে আসা এমন কিছু তরুণ নেতা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দাবি করেন। তাদের একজন সারজিস আলম। তিনি নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনার বিচার করে তার ফাঁসি দাবি করেছেন। ফলে নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে গভীর সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। এখন রাজনৈতিক এই প্রেক্ষাপটে ড. ইউনূসের নির্বাচন তদারকি করার ক্ষমতা বা ম্যান্ডেট আছে কিনা তাও প্রশ্ন।
শেখ হাসিনার দলের প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্বেষ আছে। দেশ জুড়ে এ দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে যে দমনপীড়ন চলছে, তাতে সেই বিদ্বেষ প্রতিফলিত হয়। ফলে বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে কেউ কেউ বিশ্বাস করছেন নির্বাচন হওয়া উচিত একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার তানিয়া আমির বলেন, সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শক্রমে অন্তর্বর্তী সরকারকে শপথ পড়ানো হয়েছিল। তিনি বলেন, আমাদের সংবিধানে সর্বশেষ অবসরে যাওয়া প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান আছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসন একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার দ্বারা প্রতিস্থাপিত হওয়া উচিত। জেল থেকে যেসব অভিযুক্ত সন্ত্রাসী মুক্তি পেয়েছেন সারা দেশে তাদের গ্রেপ্তারের পক্ষে পরামর্শ দিয়েছেন তানিয়া আমির। সরকারের আশীর্বাদে থাকা এসব দুর্বৃত্তদের কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধারের পক্ষে তিনি। ওইসব অস্ত্র গত ছয় মাসে বা তারও বেশি সময়ে আইনপ্রয়োগকারী এজেন্সির লোকদের কাছ থেকে লুট করা হয়েছিল।
রণধীর জয়সওয়াল বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে একই রকম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, যেখানে সব রকমের অপরাধ, বিশেষ করে নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে আমরা উদ্বিগ্ন। গুরুতর অপরাধের জন্য সাজা হয়েছিল এমন ভয়াবহ উগ্রপন্থিদের মুক্তি দেয়ার কারণে এই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহভাবে বেড়েছে। সম্প্রতি বিবিসিকে ড. ইউনূস এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তার সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশে অপরাধের হার বৃদ্ধি পায়নি। তার এই যুক্তির খণ্ডন হিসেবে দেখা যেতে পারে রণধীর জয়সওয়ালের বক্তব্য। ড. ইউনূসের প্রতি নমনীয় ঢাকার এমন একটি প্রকাশনা সম্প্রতি পুলিশের রিপোর্ট উল্লেখ করে বলেছে, গত ছয় মাসে বাংলাদেশে ডাকাতি বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ৫০ ভাগ। পুলিশের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, বেশির ভাগ অপরাধের রিপোর্ট করা হয় না। ফলে এর প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি।
ঢাকা-দিল্লির সম্পর্কের একটি স্পর্শকাতর বিষয়কে স্পর্শ করে জয়সওয়াল বলেন, হিন্দু ও অন্য সংখ্যালঘুদের সুরক্ষিত রাখা অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব। একই সঙ্গে তাদের সহায় সম্পত্তি ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রক্ষা করাও তাদের দায়িত্ব। জয়সওয়াল বলেন- ২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৩৭৪টি ঘটনার মধ্যে মাত্র ১২৫৪টি রিপোর্ট করা হয়েছে। এসব সংখ্যার সত্যতা যাচাই করেছে পুলিশ। এই ১২৫৪টি ঘটনার মধ্যে শতকরা ৯৮ ভাগকে মনে করা হয় ‘রাজনৈতিক প্রকৃতির’। আমরা আশা করি এসব খুন, অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করবে বাংলাদেশ এবং এর সঙ্গে জড়িতদের কোনো রকম ব্যতিক্রম না করে বিচারের আওতায় আনবে। জয়সওয়াল আরও বলেন, ৬ই মার্চ কলকাতায় ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গা পানি চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়ে নজরদারি করতে যৌথ কমিটির ৮৬তম বৈঠক হয়েছে। তিনি বলেন, এই বৈঠকের পর দুই পক্ষই গঙ্গা পানি চুক্তি, পানিপ্রবাহ পরিমাপ এবং পারস্পরিক স্বার্থের অন্যান্য বিষয় সম্পর্কিত প্রযুক্তিগত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে।
পাঠকের মতামত
ইন্ডিয়ানরা জারজ
দাদা বাবুদের আর কোন কথাই আমলে নেয়া যাবেনা ওরা আওয়ামীলীগকে চায়, বাংলাদেশের মানুষ কে নয় তারা এঝন বলছে অংশগ্রহ্ন মুলকএতোদিন বলেছে নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যান্তরিন বিষয়,তাই নির্বাচন নিয়ে ভারতের নাগ গলানো ঠিক না
ভারত এতোদিন বলেছে নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যান্তরিন বিষয়,তাই নির্বাচন নিয়ে ভারতের নাগ গলানো ঠিক না
India is main culprit for dictator Hasina mafia
ভারতের এই সব কথা হল আওয়ামি কথা , ভারতকে সিদ্ধান্ত নিতে তারা কি আওয়ামি কে চায় নাকি বাংলাদেশ কে চায়???
আমাদের কে নিয়ে ভারতের নাক গলানোর কোন দরকার নাই
ভারত সরকার আর কতোদিন আওয়ামিলীগের দালালী করবে? এখন ভারত সকল দলের অংশগ্রহণ মাধ্যমে নির্বাচন চাচ্ছে! ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে তাঁদের অবস্হান ছিলো ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ এবং তাদের পালিত কিছু দোসরের মাধ্যমে নির্বাচন করা!! দেশ প্রেমিক সকল বাংলাদেশী ভারতের এরকম নির্লজ্জ দালালীর কথা কখনো ভূলবেনা।
দাদারা এখনও ফেরাঊনের ল্যাসপেন্সার রয়েই গেল !! বলি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন এখন যেমন চাচ্ছেন ঠিক তেমনি বিগত ১৬ বছরে কেন চাননি ?? তাঁর চেয়ে বড় কথা আমার দেশের অভ্যান্তরিন এবং স্পর্শকাতর মৌলিক বিষয়ে তোমাদের কেন পাছা চূলিকায় ?? আমরা কখনও তোমাদের নির্বাচন নিয়ে কিছু বইলি বা বলেছি ?? মায় পোড়েনা পোড়ে মাসি'র আরো পোড়ে প্রতিবেশীর ?? হাসিনা আর আওয়ামীলীগ নামক যে থুতু এদেশ তাঁর মুখ থেকে ফেলে দিয়েছে সেটাকে আর কখনই এদেশ আবার মুখে নিবেনা। ফুলস্টপ !! এখানে আর কোন বাট, থট, রিথিংক কিম্বা মার্সি'র স্থান নেই। নিজেদের চর্কায় তৈল দাও আর নিজেদের ধূতি হেফাজত কর। ইনকিলাব জিন্দাবাদ !!
this is internal matters in Bangladesh, India should keep distance
বাংলাদেশ বিজিপি ও মোদি মুক্ত ভারত দেখতে চায়। ভারতে ব্যাপক মুসলমান হত্যা ও ভারতীয় র এশিয়ার জন্য উদ্বেগের কারণ। বাংলাদেশ চায় বিজেপি ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করে নতূন অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচন দিবে।
২০১৪,২০১৮ ও ২০২৪ এর নির্বাচনের সময় এই কথাগুলো বলে নাই। সুতরাং এখন তারা এই কথা বলার অধিকার রাখে না।
ভারতের উচিৎ, তাদের মাতায় তৈল দেওয়া,, আগে খুনি হাসিনা কে আমাদের কাছে হস্তান্তর করুক
এদেশের নির্বাচনে কে এলো না এলো তা দেখার ভারত কে?
বাংলা দেশের বেপারে ভারতের লম্প জম্প প্রমান করে বাংলাদেশ সঠিক পথে আছে।আগে প্রতিত স্বৈরাচারীর বিচার, পরে নির্বাচন।
Bah? what happened. Bangladesh nea dadader Ghum nasta hoe jacche.
অন্তর্ভুক্তি নিয়ে ১৬ বছর টুটি বন্ধ ছিল কেন ? এদেশের নির্বাচনে কে এলো না এলো তা দেখার ভারত কে? খুনিকে কেন তোমরা আশ্রয় দিয়েছ ?
India also shameless like Hasina. I must say to India "Oil your own machine".
কেন ভারত অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন চায়? এটা বোঝার জন্য বুদ্ধিজীবী হওয়ার কোন দরকার নেই।
এতো দিন কোথায় ছিল ভারত
কই আগে তো অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচনের কথা বলে নাই
১৪,১৮ এবং ২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় উনাদের মুখে কি গোবর লাগানো ছিলো।
ভারতীয় রা কেন গত ১৬ বছর অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচন চাইয় নাই?