বাংলারজমিন
নওগাঁর রাসেলের লাশ দেশে ফিরানো অনিশ্চয়তা
পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি
২৬ মার্চ ২০২৫, বুধবারপরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা ফিরাতে ঋণ করে প্রায় ৭ বছর আগে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে শ্রমিকের কাজে পাড়ি জমান নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার ঘোষনগর ইউনিয়নের নোধনী পূর্ব পাড়ার যুবক রাসেল হোসাইন (২৭)। সে গত সোমবার দিবাগত রাতে (বাংলাদেশ সময় রাত্রি সাড়ে ১২) দিকে পেটের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
জানা যায়, নিহত রাসেলের বাবার নাম আজাদুর ইসলাম ও মা রশিদা বেগম। দুই ভাইয়ের মধ্যে রাসেল বড়। ছোট ভাই রাহেল অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। দালালের খপ্পরে পড়ে প্রায় ৭ লাখ টাকা দিয়ে সৌদি আরবের জেদ্দায় একটি কোম্পানির চাকরি জন্য যান রাসেল। কিন্তু যোগদানের কথা থাকলেও কোম্পানিতে কোন চাকরি না পেয়ে সৌদিতে এক বছর বেকার বসে থাকেন রাসেল। সৌদির এক বাংলাদেশীর সহযোগিতায় জেদ্দা শহরের হাঙ্গার স্টেশনে ফুড ডেলিভারিতে কাজ শুরু করেন রাসেল।
অসুস্থ বাবাকে কথা দিয়েছিলেন দ্রুত বাড়ি ফিরবেন। তবে এটাই যে রাসেলের শেষ যাওয়া ভাবতে পারেনি পরিবারের কেউ। স্বজনরা জানায়, ঈদের আগে বাড়ি ফিরে একসাথে ঈদ করার কথা থাকলেও হঠাৎ গতরাতে সৌদি থেকে ফোন করে জানানো হয় অসুস্থ হয়ে মারা গেছে রাসেল। এই ঘটনায় রাসেলের গ্রামের বাড়িতে চলছে এখন শোকের মাতম।
নোধূনী গ্রামের বাসিন্দা নিহতের ফুফাতো ভাই রবিউল ইসলাম বলেন, আমার মামাতো ভাই রাসেলের সাথে গতকাল দিনে শেষ কথা বলা হয়েছিল মুঠোফোনে। অসুস্থ ছিলেন। নিহতের মা রশিদা বেগম কান্নাস্বরে জানান, গতকাল সোমবার রাত ৯টার দিকে ছেলের (রাসেল) সাথে শেষ বারের মতো মুঠোফোনে কথা হয়। তখন পেটের ব্যথায় অসুস্থ ছিলেন। রাত দেড়টার দিকে অপরিচিত কেউ ছেলের মুঠোফোন নম্বর হতে জানায় রাসেল মারা গেছে।
ঘোষনগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুহুল আমিন বলেন, রাসেল পরিশ্রমী ও সৎ ছেলে ছিলেন। অভাবের কারণেই বিদেশে শ্রমিকের কাজে যান। মৃত্যু হয়েছে জেনেছি। তাঁর লাশ দেশে ফিরানোর বিষয়ে সরকারের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার সৌদি আরব প্রবাসী মিজানুর রহমান এই প্রতিবেদককে জানায়, আমি রাসেলের লাশ দেখতে আসি। হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। রাসেলের লাশ দেশে ফিরাতে প্রায় ৭-৮ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু, অভাবের সংসারে ছেলের লাশ ফিরিয়ে আনার মতো অর্থ নেই পরিবারের কাছে। শেষ বারের মতো ছেলের মুখ (লাশ) দেখার আকুল আবেদন করে বাংলাদে সরকারের নিকট সহযোগিতা কামনা করেন নিহতের পরিবার ও আত্মীয়রা।