শেষের পাতা
সাভারে বন্ধ কারখানা চালুর দাবিতে সড়ক অবরোধ
স্টাফ রিপোর্টার, সাভার থেকে
২৬ মার্চ ২০২৫, বুধবার
সাভারের হেমায়েতপুরে ঈদের ছুটি বৃদ্ধি ও কারখানা খুলে দিতে এবং শ্রমিকদের ওভারটাইম পরিশোধসহ আটক ৬ শ্রমিকের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শ্রমিকরা। মঙ্গলবার সকালে সাভারের হেমায়েতপুর-সিংগাইর-মানিকগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় জিন্স ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা। এ সময় কারখানা বন্ধের প্রতিবাদ জানিয়ে বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে শ্রমিকদের ওপর হামলা-মামলার প্রতিবাদ জানিয়ে দায়িত্বরত কর্তৃপক্ষের অপসারণ দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে তারা।
আন্দোলনকারী শ্রমিক ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই কারখানার দুই হাজার শ্রমিক ঈদের ছুটি বৃদ্ধিসহ ওভারটাইম পরিশোধের দাবিতে আন্দোলনসহ কর্মবিরতি পালন করে আসছিল। এ নিয়ে দফায় দফায় শ্রমিক ও মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় কোনো সমাধান না হওয়ায় কারখানায় দাঙ্গা-হাঙ্গামা, ভাঙচুর, সহিংসতা ও মারামারি করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করায় কোম্পানির সার্বিক নিরাপত্তায় বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ধারা ১৩(১) অনুযায়ী মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করেছেন কর্র্তৃপক্ষ। এদিকে সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগদান করতে এসে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখে বিক্ষোভ করেছে শ্রমিকরা।
কারখানাটির নারী শ্রমিক নিলা আক্তার বলেন, এই মাসে ছুটি দিলে আমরা পুরো মাসের বেতনটা পাই। সেখানে মালিকপক্ষ বলেছেন ২০ দিনের বেতন দিবে এবং ৮ দিনের ছুটি দিবে। আমরা দাবি করেছি ২০ দিনের বেতনের সঙ্গে প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে ৪০ ঘণ্টা ওভারটাইমের টাকা এবং ছুটি আরও ২ দিন বাড়িয়ে দিতে হবে। প্রয়োজনে আমরা ঈদের পরে এসে ২ দিন ছুটির ডিউটি করে দেবো। কিন্তু মালিকপক্ষ এতে রাজি না হয়ে ছুটি ১ দিন বাড়াতে চাইলেও বেতন ২০ দিনেরই দেবেন বলে জানায়। এ ঘটনায় শ্রমিকরা দাবি আদায়ে কাজ বন্ধ করে কর্মবিরতি পালন করলে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করতে চায়। তাদের কথা অনুযায়ী সকল শ্রমিক একত্রিত হলে কারখানার জিএম বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে এসে কারখানার ভেতরে রাখে। যেখানে আমরা শ্রমিকরা সকালে আইডি কার্ড না দেখিয়ে কারখানায় প্রবেশ করতে পারি না, সেখানে বহিরাগত লোকজন কীভাবে কারখানায় প্রবেশ করলো।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানায়, জিএম কেন বহিরাগত লোক নিয়ে এলো আমাদের মারার জন্য, আমাদের যে ৬ জনকে ধরে নিয়ে গেছে তাদেরকে ছেড়ে দিতে হবে এবং দাবি আদায়ে আন্দোলনের ঘটনায় কারও বিরুদ্ধে মামলা হয়নি সেটি নিশ্চিত করতে হবে, আগামী ৬ মাসের মধ্যে কোনো শ্রমিক ছাঁটাই করতে পারবে না, আমাদের দাবি-দাওয়া মেনে নিতে হবে এবং কোম্পানি চালাতে হলে পুরনো ম্যানেজমেন্টকে পরিবর্তন করতে হবে বলে জানায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।
শ্রমিকদের আটকের বিষয়ে সাভার মডেল থানার ওসি জুয়েল মিঞা বলেন, কারখানায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে ৪ জন শ্রমিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। তবে ৬ জন আটকের বিষয়টি সঠিক নয়।