ভারত
পশ্চিমবঙ্গে সাড়ে ২৫ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিলে বেকায়দায় মমতা
নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতা
(১ মাস আগে) ৪ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার, ২:৪১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৬ পূর্বাহ্ন

নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ে পশ্চিমবঙ্গে সাড়ে ২৫ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকুরি বাতিলে ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে কান্নার রোল। সকলের প্রশ্ন অযোগ্যদের দায়ে যোগ্যরাও কেন বঞ্চিত হলেন চাকরি থেকে। বঞ্চিত শিক্ষকদের ক্ষোভের মুখে পড়েছে রাজ্য সরকার। বিরোধী রাজনীতিবিদরাও চাকরি বাতিলের দায়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীসহ গোটা মন্ত্রিসভার পদত্যাগ দাবি করেছেন। ফলে রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য রাজনীতিতে প্রবল বেকায়দায় পড়েছেন। অবশ্য তিনি পরিস্থিতি সামাল দিতে চাকরি হারাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে তাদের নিয়ে বৈঠক করছেন। পাশাপাশি এই চাকরি বাতিলের সব দায় চাপিয়ে দিয়েছেন বিজেপি ও সিপিআইএমের উপরে। এমনকি ব্যাক্তিগতভাবে যে আদালতের এই রায় তিনি মানছেন না সেকথাও বলেছেন। তবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মদতে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের দুর্নীতির কারণেই এ পরিণাম ভোগ করছে সাধারণ মানুষ। এ নিয়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রকাশের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, শিক্ষাসচিবসহ রাজ্য সরকারের নিয়োজিত আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকের পর মমতা একহাত নেন সিপিআইএম ও বিজেপিকে। মমতা সাংবাদিকদের বলেছেন, আমি বিশ্বাস করি এটা বিজেপি করিয়েছে, সিপিআইএম করিয়েছে। আমি অবাক হয়ে যাই, এখানে মামলাটা করেছেন কে? আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য (সিপিএমের রাজ্যসভার সংসদ সদস্য)। তিনি কটাক্ষ করে বলেন, তিনি তো পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহত্তম আইনজীবী। তিনি কেন এখনো নোবেল পাচ্ছেন না আমি জানি না। পাওয়া উচিত। ভাবছি, একটা সুপারিশ করব। যদিও মমতার এ মন্তব্যের জবাব দিয়ে বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেছেন, নোবেল দিলে দিক না? তবু তো একটা কিছু পেতে পারি! মানুষ বিপদে পড়লে ঈশ্বরের নাম নেয়, আর তৃণমূল কংগ্রেস আমার নাম নিচ্ছে। রাজ্যের বিজেপি সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, যোগ্য আর অযোগ্যর ফারাক করে দিতে না পারায় একসঙ্গে সবার চাকরি চলে গেল। এ জন্য দায়ী মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তিনি আরও বলেন, যে পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে, তাতে একা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় দায়ী হতে পারেন না। মুখ্যমন্ত্রী ও তার পুরো মন্ত্রিসভার কারাগারে থাকা উচিত।
শুক্রবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে সুকান্ত মজুমদার বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় সামনে আসার পর মমতা বন্দ্যোপাথ্যায় সিপিআই(এম), আদালত, বিচারব্যবস্থা সহ সব পক্ষকেই দোষারোপ করেন। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের যে নেতারা টাকা নিয়ে বেআইনিভাবে অযোগ্যদের চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন তাদের নাম নিলেন না, এদিন সেই প্রশ্ন তোলেন সুকান্ত।
এদিকে, জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের অন্যতম নেতা দেবাশিস হালদার প্রায় সাড়ে ২৫ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর শাসকদল তৃণমূলকে বিঁধে লিখেছেন,এই কান্না, এই অসহায়তা জাস্ট দেখা যাচ্ছে না। এই চোখের জল আগুন হয়ে এই রক্তচোষাদের পুড়িয়ে ধ্বংস করুক— এ ছাড়া এই মুহূর্তে আর কিচ্ছু চাওয়ার নেই।
পাঠকের মতামত
শিক্ষা বিভাগের দুর্নীতির আলোচনা বহু পুরাতন। এখন মমতা সরকারি কর্মকর্তাদের লাগাম টানতে পারেন নি সময় মত