ভারত
পশ্চিমবঙ্গের চাকরিহারাদের মধ্যে যোগ্যদের চাকরি যাবে না বলে আশ্বস্ত করলেন মমতা
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা
(১ মাস আগে) ৭ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার, ২:৩১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৯:২৯ পূর্বাহ্ন

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গে প্রায় সাড়ে ২৫ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিলের পরে চাকরিহারাদের পরিবারে প্রবল হাহাকার তৈরি হয়েছে। তবে সোমবার কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে সেইসব চাকরিহারাদের সভায় যোগ্যদের চাকরি যাবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সভায় মমতা যোগ্যদের আশ্বস্ত করে বলেন, আমি বেঁচে থাকতে যোগ্যদের চাকরি কেড়ে নিতে দেব না। এটা আমার চ্যালেঞ্জ। শিক্ষাব্যবস্থাকে ভেঙে দেয়ার চক্রান্ত চলছে বলে মমতা অভিযোগ করেন।
সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকার রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাবেন বলে ঘোষণা করেছেন মমতা। তিনি বলেন, আদালতের কাছে আমরা ব্যাখ্যা চাইব। নতুন করে পরীক্ষা নেয়ার আগে আমাদের জানতে হবে, যারা স্কুলে পড়াতেন তাদের জন্য আদালতের ব্যাখ্যা কী? স্কুল কে চালাবে? বাকি কাজ কে চালাবে? কাউকে না খাইয়ে মারার অধিকার তো কারও নেই। চাকরি দিতে পারবেন না, আমার অনুরোধ তারা যেন চাকরি কেড়ে না নেন। যারা যোগ্য, তাদের চাকরি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের।
এর পরই সভায় উপস্থিত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কাজ চালিয়ে যেতে বলেন তিনি। মমতা বলেন, ‘আপনারা কি এখনও বরখাস্তের নোটিস পেয়েছেন? চাকরি করুন না! মানবতার স্বার্থে স্বেচ্ছায় সকলেই কাজ করতে পারেন। তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, আমরা দু’মাসের মধ্যেই বিকল্প ব্যবস্থা করে দেব। যোগ্যদের কারও চাকরি বাতিল হবে না। মানবিকতার খাতিরে সুপ্রিম কোর্ট আমাদের হাতে যোগ্য-অযোগ্যের তালিকা তুলে দিক। ব্যাখ্যা দিক। শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে দেয়ার অধিকার কারও নেই। ২ মাস কষ্ট করলে ২০ বছর শান্তিতে থাকতে পারবেন।
সভায় হাজির ছিলেন প্রচুর ‘অযোগ্য’ চাকরিপ্রার্থীও। তাদের উদ্দেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আগে যোগ্যদের বিষয়টি মিটে যাক। তার পর যাদের ‘অযোগ্য’ বলা হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কী কী তথ্য আছে আমি দেখব। আবার আপনাদের ডাকব। সব কাজগপত্র তদন্ত করে দেখব। সত্যি যদি তারা ‘অযোগ্য’ বলে প্রমাণিত হন, আমার তখন কিছু করার থাকবে না। কিন্তু কাকে কেন অযোগ্য বলা হয়েছে, কে তদন্ত করেছে, আলাদা করে সেটা দেখতে হবে। আলাদা করে সেটা নিয়ে আমি কথা বলব। সকলে নিশ্চিন্তে থাকুন। তিনি যোগ্য-অযোগ্যের মধ্যে গোলমাল না লাগানোর অনুরোধ জানান।
এদিকে, এদিন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বাইরে এসএসসি চাকরি বাতিলের জন্য রাজ্য সরকারকে দায়ী করে বিক্ষোভ দেখান বিরোধী দলনেতাসহ বিজেপি বিধায়করা। ‘মমতা চোর’ প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভে সামিল হন তারা। চাকরিহারাদের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। সোমবার সকালে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, যোগ্য অযোগ্যদের মিলিয়ে দিতেই এই বৈঠক ডাকা হয়েছে। সরকার চাইলে যোগ্য -অযোগ্যদের অনেক আগেই আলাদা করতে পারত।