খেলা
পাকিস্তানের বিপক্ষে হেরেও বিশ্বকাপের টিকিট পেলো বাংলাদেশ
স্পোর্টস রিপোর্টার
২০ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার
টানা ৩ ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপের টিকিট পাওয়ার খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিল বাংলাদেশ নারী দল। পরের দুই ম্যাচে ১ পয়েন্ট পেলেই টিকিট নিশ্চিত। কিন্তু পরপর দুই ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে হেরে অনিশ্চয়তায় পড়ে যায় টাইগ্রেসরা। তাকিয়ে থাকতে হয় থাইল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের দিকে। সেখানে ক্যারিবীর নারীরা সমীকরণ মেলাতে না পারায় পাকিস্তানের বিপক্ষে হেরেও বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল।
লাহোর সিটি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন গ্রাউন্ডে গতকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাটিং ব্যর্থতায় মাত্র ১৭৮ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ নারী দলের ইনিংস। ৩ উইকেট হারিয়ে ১০.২ ওভার বাকি রেখেই সেটা টপকে যায় পাকিস্তান। এতে বাংলাদেশের রান রেট কমে দাঁড়ায় +০.৬৩৯। বাছাইয়ে ৫ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট পাওয়া বাংলাদেশের চোখ তখন থাইল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচে। যেখানে প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করা থাই নারীরা করতে পারে ১৬৬ রান। বাংলাদেশকে হঁটিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এই রান টপকাতে হতো ১০ ওভারে। আর দুদলের স্কোর সমান হয়ে যাওয়ার পর যদি ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানরা চার অথবা ছক্কা মেরে যেতে তবে হিসাবটা একটু অন্যরকম হতো। স্কোর সমান হওয়ার পর চার মেরে জিতলে ১০.৪ ওভারে জিতলেও চলতো ক্যারিবীয়দের। আর যদি স্কোর সমান হওয়ার পর ছক্কা মেরে জিততে চায় তবে ১১ ওভারের মধ্যে জিতলেও চলবে। তবে মারকুটে ব্যাটিংয়ে সম্ভাবনা জাগালেও শেষ পর্যন্ত এর কোনো সমীকরণই মেলাতে পারেনি ক্যারিবীয়রা। আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ভারতের মাটিতে হতে যাওয়া বিশ্বকাপের টিকিট পায় নিগার সুলতানা জ্যোতির দল।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং ভালোই মনে ভয় ধরিয়েছিল মারুফা-সুপ্তাদের। প্রথম ৩ ওভারেই ৪৫ রান তুলে ফেলে তারা। থাইল্যান্ডের বোলারদের রীতিমতো কচুকাটা করতে থাকেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটাররা। অধিনায়ক হ্যাইলি ম্যাথুস খেলেন ২৯ বলে ৭০ রানের বিষ্ফোরক ইনিংস। তবে শেষ পর্যন্ত আর সমীকরণ মেলাতে পারেনি তারা। ১০ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫৬ রান। তখনই বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত হয় জ্যোতির দলের। ১০.৫ ওভারে জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের নারীরা। এই বাড়তি ৫ বল খেলাতেই লাভ হয়েছে বাংলাদেশের। ৫ ম্যাচ শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও বাংলাদেশ, দুই দলের জয় সমান ৩টি। তবে ক্যারিবীয় নারী দলের +০.৬২৬ রান রেট থেকে টাইগ্রেসদের রান রেট বেশি +০.৬৩৯। এ কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টপকে বিশ্বকাপের টিকিট পেলো বাংলাদেশ।
এর আগে একই দিনে বাংলাদেশের ব্যাটাররা কেউই দলের হাল ধরতে পারেননি। প্রথম ৩ ম্যাচে রান করা জ্যোতি ও শারমিন আক্তার সুপ্তাও এদিন ব্যাট হাতে নিষ্প্রভ ছিলেন। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ২১ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। ৭ বলে খেলে রানের খাতা খুলতে না পারা ফারজানা হক তৃতীয় ওভারে বোল্ড হন ফাতিমা সানার বলে। পরপর দুই ওভারে বিদায় দেন দিলারা আক্তার ও নিগার সুলতানা। রিতু মনিকে নিয়ে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন সুপ্তা। কিন্তু জুটি বড় হয়নি। ৪টি চারে ২৪ রান করে তিনি ফিরলে ভাঙে রিতুর সঙ্গে ৪৪ রানের জুটি। পরে নাহিদা আক্তারকে নিয়ে আরেকটি ৪৪ রানের জুটি গড়েন রিতু। মন্থর ব্যাটিংয়ে ৫১ বলে ১৯ রান করেন নাহিদা। ৫ চারে সর্বোচ্চ ৪৮ রান করেন রিতু মনি। চারটি চারে ৪৪ রান করে অপরাজিত থাকেন ফাহিমা খাতুন। আর কেউ ২৫ রানও করতে পারেননি।
রান তাড়ায় দ্বিতীয় বলেই শাওয়াল জুলফিকারকে এলবিডব্লিউ করে দলকে ভালো শুরু এনে দেন মারুফা আক্তার। কিন্তু এরপর আলগা বোলিং আর বাজে ফিল্ডিংয়ে পাকিস্তানি ব্যাটারকে চাপেই ফেলতে পারেননি টাইগ্রেসরা। সিদ্রা আমিনকে নিয়ে ৮০ রানে জুটিতে পাকিস্তানকে জয়ের পথে অনেকটা এগিয়ে নেন মুনিবা। ৪টি চারে ৩৩ রান করা সিদ্রাকে কট বিহাইন্ড করে তাদের যুগলবন্দী ভাঙেন রাবেয়া খান।৬৭ বলে ফিফটি করা মুনিবা খেলেন ৮ চারে ৬৯। এই মুনিবাকে ১২ ও ১৬ রানে দুইবার জীবন দেন বাংলাদেশে ফিল্ডাররা। এছাড়া আলিয়া রিয়াজ ১ ছক্কা ও ৬টি চারে করেন ৫২ রান।