ঢাকা, ৯ মে ২০২৫, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

প্রথম পাতা

যে প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হয়েছে লন্ডন বৈঠকে

শান্তনা রহমান
২৩ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার
mzamin

বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে তা এখনো অজানা। লন্ডনে বা ঢাকায় কোনো দলের পক্ষ থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই বলা হয়নি। এ কারণেই হয়তো বিস্তর কৌতূহল। দু’দলের মধ্যে যে দূরত্ব বেড়েছিল তার কি কিছুটা অবসান হয়েছে? কেন দূরত্ব তৈরি হলো, কারা এর জন্য দায়ী তা নিয়ে দু’দলের নেতারা আলোচনা করেছেন। খুঁজেছেন উত্তর। চলমান রাজনীতি ও ভবিষ্যৎ নির্বাচন নিয়ে দীর্ঘসময় আলোচনা হলেও সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্তের দিকে হাঁটেননি নেতারা। পর্যবেক্ষকরা পরস্পরবিরোধী অবস্থান থেকে এক কক্ষে বসাটাকেও ইতিবাচক বলে মনে করছেন।  কারণ দু’দলের মধ্যে উদ্বেগ ছিল, ছিল বেদনা। একে অপরকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবতে শুরু করেছিল। গেল সপ্তাহে বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতারা এক বৈঠকে মিলিত হন। যদিও বৈঠকটি ছিল মূলত মানবিক। তবে এক ঘণ্টার এই বৈঠকে বেশির ভাগ সময় রাজনীতির চর্চাই হয়েছে। অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতেই জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান সেখানে যান। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় তারা মিলিত হন। ডা. শফিকুর রহমান ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমন্ত্রণে ব্রাসেলস গিয়েছিলেন। ইউরোপীয় নেতাদের কাছে তারা তাদের অবস্থান তুলে ধরেছেন। জামায়াত কী চায় তাও স্পষ্ট করেছেন। প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত এই বৈঠককে তারা অত্যন্ত সফল বলে বর্ণনা করছেন বিভিন্ন মাধ্যমে। বেগম জিয়ার সঙ্গে বৈঠক হবে এ নিয়ে কোনো জল্পনা ছিল না। অনেকটা নাটকীয়ভাবেই ডা. শফিকুর রহমান সেখানে হাজির হন। দু’দলের শুভাকাঙ্ক্ষীরা এই বৈঠকের ব্যাপারে নানাভাবে তাগিদ দিয়ে আসছিলেন। এর আগে অবশ্য ফোনালাপ হয় দু’পক্ষের মধ্যে। তারেক রহমান নিজেই জামায়াতের আমীরকে স্বাগত জানান। যা ছিল অত্যন্ত আন্তরিকতায় ভরা। নিজ হাতে তিনি তাদের আপ্যায়িত করেন তার বাসভবনে। আলোচনার শুরুটা ছিল আবেগময়। অসুস্থ খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কেমন, কীভাবে তার দিন কাটছে তা জানার চেষ্টা করেন ডা. শফিকুর রহমান। কবে দেশে ফিরবেন তাও জানতে চান ডা. শফিকুর রহমান। এরপর ধীরে ধীরে রাজনৈতিক আলোচনা শুরু হয়।

২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে চারদলীয় জোট গঠিত হয়। ক্ষমতায় আসে জোট। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সরকারে স্থান পায় জামায়াত। মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ মন্ত্রী হন। যা নিয়ে বিএনপি প্রচণ্ড সমালোচনার মুখে পড়ে। ওয়ান-ইলেভেনের আগ পর্যন্ত তাদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কই ছিল বহাল। এরপর থেকে দূরত্ব বাড়তে থাকে। বেগম জিয়া যান কারাগারে মিথ্যা মামলায়। জামায়াত নেতাদের ফাঁসি কার্যকর হয়। জাতীয়-আন্তর্জাতিক নানা খেলায় দু’দলের ঐক্যে ফাটল ধরে। অনেকটা প্রকাশ্যেই একে অপরকে দোষারোপ করতে থাকেন। সুযোগ নেয় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার। 

লন্ডন বৈঠকে বেগম জিয়া খুব কম কথা বলেছেন। তবে তার কথাবার্তার মধ্যে ঐক্যের সুর ছিল। তারেক রহমান আলোচনা এগিয়ে নিয়েছেন। ডা. শফিকুর রহমান বার কয়েক বলেছেন, কোথা থেকে কী হলো জানি না। কিন্তু আমাদের তরফে ঐক্য ভাঙার কোনো চেষ্টা ছিল না। বিএনপি’র নেতাদের বক্তৃতা-বিবৃতি পর্যালোচনা করলেই এর জবাব খুঁজে পাওয়া যাবে। তারেক রহমান তার অবস্থান খোলাসা করেন। বলেন, এত বড় পার্টির কোথায়, কোন নেতা কী বলেছেন তা মনিটর করা সম্ভব নয়। কিন্তু দলের কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না আমি যতটুকু জানি। তখন বেগম জিয়া অত্যন্ত স্বল্প কথায় বিএনপি-জামায়াত ঐক্যের পটভূমি বর্ণনা করেন। যাতে বৈঠকের পরিবেশ অন্যদিকে মোড় নেয়। এরপর ডা. শফিক আলোচনার প্রসঙ্গ পাল্টে চলমান রাজনীতির দিকে আলোকপাত করেন। ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে একটি বাইরের শক্তি নানা ষড়যন্ত্র করছে তা নিয়েও তারা আলোচনা করেন এবং তারা একমত হন।  কবে নির্বাচন হতে পারে তা নিয়ে বেশ কিছু সময় আলোচনা হয়। নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে দু’দলের অবস্থান কাছাকাছি নয়, বিপরীতমুখী। দু’দলের মধ্যে দূরত্ব কমাতে কিছু করণীয় নিয়েও কথাবার্তা হয় তাদের মধ্যে। আরও ধৈর্য, আরও সংযমের ওপর জোর দেন নেতারা। ঢাকায় একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, ভবিষ্যতে দু’দলের সম্পর্কে ফাটল ধরে এমন কোনো কাজকে প্রশ্রয় দেবেন না কেউই- সেই বিষয়েও তারা এক অলিখিত সিদ্ধান্তে পৌঁছান।
 

পাঠকের মতামত

এই দুই দল নিপিড়ন, নির্যাতনের সম্মুখীন আর এখন এই নির্যাতনের বিচারের সময় দুই দলে ভাঙ্গন ধরা মানি ফ্যাসিস্টদেরকে সুযোগ এবং দেশ কে ধ্বংস লিলায় পরিনত করার শামিল। যাহা করেন দুই দলের মতামত এক রাখার চেষ্টা করবেন, এটাই আমার জোর দাবী। ধন্যবাদ জানাই সকলকে।

মহিবুল ইসলাম
২৪ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৭:৫৫ পূর্বাহ্ন

রাজনৈতিক দল ভোটের সময় নিজে নিজ দলের পক্ষে সমর্থন চাইলেও এটি কোন শত্রুতার বিষয় নয়।জোর পূর্বক কাউকে ভোট দিতে বাধ্য করা গনতন্ত্রের পরিপন্থি। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল এই মনোভাব ত্যাগ না করলে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান সম্ভব নয়।

Kazi
২৩ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ৪:১১ পূর্বাহ্ন

আলহামদুলিল্লাহ

মোঃ মাকছুদুর রহমান
২৩ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ১:১৪ পূর্বাহ্ন

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status