প্রথম পাতা
হেফাজত থেকে নির্বাচন করতে চান যারা
আহমেদ জামাল
৫ মে ২০২৫, সোমবার
আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন হেফাজতে ইসলামের অনেক নেতা। তারা নিজ নিজ দলের হয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। হেফাজত অরাজনৈতিক সংগঠন হলেও এর নেতৃত্বে রয়েছেন বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতারা। তারা তাদের দলের হয়ে নির্বাচনে লড়তে চান। সংগঠনটির মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে নির্বাচন করতে চান বলে তার ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন। এমন আরও অন্তত ২০ থেকে ২৫ জন নেতা আছেন যারা নিজ নিজ এলাকায় নির্বাচনে অংশ নিতে চাইছেন। ইতিমধ্যে তারা এলাকায় নির্বাচনকেন্দ্রিক তৎপরতা শুরু করেছেন। কেউ কেউ জনসেবামূলক কাজে অংশ নিচ্ছেন। আগামী নির্বাচনের বিষয়ে সরকারের তরফে এখনো স্পষ্ট কোনো ঘোষণা না আসায় দলগুলো দ্বিধায় রয়েছে। নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট নিয়েও আছে নানা তৎপরতা। বিশেষ করে নির্বাচন সামনে রেখে ইসলামী দলগুলোর ভোট এক বাক্সে আনার চিন্তাও করা হচ্ছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এমন দলগুলোকে একত্র করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে পাঁচটি ইসলামী দল নির্বাচনে একসঙ্গে লড়ার বিষয়ে একমত হয়েছে। নিজ নিজ দলের হয়ে নির্বাচন করলেও দলগুলো পরস্পরের সমঝোতার ভিত্তিতে প্রার্থী দেয়ার চিন্তা করছে। এই পাঁচ ইসলামী দলের নেতারাই হেফাজতে ইসলামের মূল নেতৃত্বে রয়েছেন। নির্বাচনে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ অন্যান্য দলের অবস্থান দেখে ইসলামী দলগুলো তাদের কৌশল ঠিক করবে বলে জানা গেছে। এ কারণে এখন পর্যন্ত প্রার্থী দেয়ার বিষয়ে আলোচনা চূড়ান্ত করা হয়নি। প্রার্থী হতে ইচ্ছুক নেতারাও সরাসরি কোনো ঘোষণা দিচ্ছেন না।
হেফাজত নেতাদের প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, হেফাজতের নেতৃত্বদানকারী এসব রাজনৈতিক নেতা নির্বাচনে প্রার্থী হবেন নিজ দলীয় ব্যানারে। এ ক্ষেত্রে হেফাজত থাকবে সম্পূর্ণ আলাদা। তিনি বলেন, সম্ভাব্য এসব প্রার্থী নিজ নিজ এলাকায় অনেক জনপ্রিয়। আগামী নির্বাচন যে ভাবে হবে বলে শোনা যাচ্ছে তা যদি বাস্তব হয় তাহলে ইসলামী দলের অনেকে বিজয়ী হবেন বলে আশা করছি। তিনি বলেন, ইসলামপন্থি সব দলমত এক হওয়ার চেষ্টা চলছে। এটা সফল হলে সুফল পাওয়া যাবে।
সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে নির্বাচন করতে চান বলে তার ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন। যদিও তার পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা এখনো শোনা যায়নি। হেফাজত নেতাদের মধ্য থেকে নিজ দলীয় ব্যানারে আরও যেসব সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম শোনা যায়, তাদের মধ্যে সিলেটের জকিগঞ্জ-কানাইঘাট আসন থেকে মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক নির্বাচন করতে চান। জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা ফারুক এর আগেও এই আসনে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। বরিশাল-৫ (সদর) আসনে প্রার্থী হতে চান ইসলামী আন্দোলনের নেতা মুফতি মোহাম্মদ ফয়জুল করীম। হেফাজতে ইসলামে চরমোনাইপীরের দলের অংশগ্রহণ রয়েছে।
ইসলামী আন্দোলন অন্যান্য দলের সঙ্গে সমঝোতায় নির্বাচন করলেও সারা দেশে বেশির ভাগ আসনেই প্রার্থী দেয়ার প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে। সাধারণত দেশের ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেয়ার সক্ষমতা রয়েছে দলটির। হেফাজত নেতা মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম নীলফামারীতে ও মাওলানা মনির হোসেন কাসেমী নারায়ণগঞ্জে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ হবিগঞ্জ-২ আসন থেকে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। হেফাজতে ইসলামে খেলাফত মজলিসের সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে। দলটির মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের হবিগঞ্জের আরেকটি আসন থেকে নির্বাচন করতে চান। এ ছাড়া হেফাজত নেতা মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী কুমিল্লায়, মাওলানা জালাল উদ্দিন মাদারীপুর, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিনী কিশোরগঞ্জের ভৈরব, মাওলানা মুসা বিন এজহার চট্টগ্রাম, এডভোকেট শাহিনূর পাশা চৌধুরী সুনামগঞ্জ, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী, ময়মনসিংহ, মাওলানা তালহা নড়াইল, মাওলানা মুনতাসির আলী, সিলেট, মাওলানা নাসির উদ্দিন মনির চট্টগ্রামের হাটহাজারী, এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন পটুয়াখালী, মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী ঢাকার কামরাঙ্গীরচর, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী মানিকগঞ্জে, মুফতি মুসতাকুন্নবী কাসেমী লক্ষ্মীপুর, গাজী আতাউর রহমান গাজীপুর, ড. মাওলানা শোয়াইব আহমাদ সুনামগঞ্জ, অধ্যক্ষ আবু তাহের খান, ময়মনসিংহ, মাওলানা হোসাইন মোহাম্মদ শাহজাহান চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি ও মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী ঢাকার সাভারে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
নির্বাচনের অংশ নেয়ার বিষয়ে খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মুনতাসির আলী মানবজমিনকে বলেন, সিলেট-২ আসন থেকে আমি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। দলের পক্ষ থেকে আগেও আমি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। তিনি বলেন, প্রার্থী হলে আমরা দলের হয়ে লড়বো।
পাঠকের মতামত
হেফাজতে ইসলামকে বলতে চাই আপনাৰা জদি ইসলামেৰ হেফাজত কৰতে চান অবশ্যই অবশ্যই বাংলাদেশ জামায়াতি ইসলামেৰ সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নিৰ্বাচন কৰুন
বাংলাদেশ ইসলামী দলগুলা ইলেকশন আসলে ভালো হবে, তবে জুটবদ্ধভাবে আসতে হবে, তবে জামায়াত ইসলামকে একসাথে রাখতে হবে জামায়াতে ইসলাম ছাড়া সংসদীয় আসন পাওয়া মুশকিল হবে।
ইসলামী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করলে ভালো হবে বলে আশা করা যায়। কথায় আছে “দশের লাঠি একের বোঝা”। ঐক্যবদ্ধ থাকলে কেউ তাদের উপর খবরদারী করতে পারবে না। পুরো মুসলিম উম্মার জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে ইনশাল্লাহ। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সুরা আল ইমরানের ১০৩ নম্বর আয়াতে ঘোষণা করে বলেন, “আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ় হস্তে ধারণ কর; পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। আর তোমরা সে নেয়ামতের কথা স্মরণ কর, যা আল্লাহ তোমাদিগকে দান করেছেন”।
তৌহিদি জনতা চায় দেশের বড় ইসলামী দল জামায়াতকে নিয়েই ইসলামী মোর্চা হোক। তা না হলে ফলাফল হিতে বিপরীিত হতে পারে।
আমরাও চাই এরা নির্বাচন করুক, বাস্তবতা কত কঠিন তা জানুক।
আমার মতে বাংলাদেশের সকল দল নির্বাচনে অংশ গ্রহন করা উচিত। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হওয়া উচিত। এ সময়ের মধ্যে কোন দল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমালোচনা না করে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ভাবে করার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করা উচিত। আর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্মানের সাথে নির্বাচিত সরকারের নিকট ক্ষমতা বুঝিয়ে বিদায় নেয়া উচিত। আর ছাত্র জনতার পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দল গঠন করা ঠিক হয় নি। তাঁরা বিপ্লব করেছে। সাধারণ মানুষ সারাজীবন মনে রাখবে। আগামীতে যারা ক্ষমতায় আসবে ছাত্র জনতাকে ভয় পাবে। একক ভাবে কোন দল ক্ষমতায় না এলে দূর্নীতি কিছুটা কম হবে বলে আমার বিশ্বাস। বাংলাদেশ দূর্নীতি মুক্ত হলে, বাংলাদেশের মানুষ বিদেশে যেতে হবে না। বেকারত্ব সমস্যা থাকবে না। যোগাযোগ, শিক্ষা, চিকিৎসা, এবং সকল ব্যবসা বনিজ্যে উন্নতি সাধিত হবে।