ঢাকা, ২৩ মে ২০২৫, শুক্রবার, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৪ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

অবরোধ-জলাবদ্ধতা অসহনীয় যানজটে অচল ঢাকা

স্টাফ রিপোর্টার
২৩ মে ২০২৫, শুক্রবার
mzamin

চরম জনভোগান্তি। দীর্ঘ যানজটে স্থবির ঢাকা। বিপর্যস্ত জনজীবন। এমন জনভোগান্তির কারণ রাজধানীর শাহবাগ, কাকরাইলসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ করে দিনভর চলেছে আন্দোলন-অবরোধ। এদিকে, সকাল থেকে বৃষ্টিতে নগরীর বেশকিছু সড়ক ও অলিগলি ডুবে যায়। বৃষ্টির পানিতে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। এতে দুর্ভোগে পড়েন শত শত কর্মব্যস্ত মানুষ। অধিকাংশ যাত্রী গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে তাদের গন্তব্যে ছুটেছেন। 

সরজমিন দেখা যায়, আন্দোলন-অবরোধে ঢাকার শাহবাগ, সাইন্সল্যাব ও বাংলামোটর এলাকায় তীব্র যানজট।  বাংলামোটর থেকে শাহবাগগামী সড়ক ছিল বন্ধ। বাস থেকে নেমে যাত্রীরা পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছেছেন। অবরোধকারীরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ও শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। এ সময় ঢাবি শিক্ষার্থী সাম্য হত্যার বিচার চেয়ে ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেয়া নেতাকর্মীরা স্লোগান দেন- ‘বিচার চাই, বিচার চাই’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে।’ সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে নামা ছাত্রদল নেতাকর্মীরা প্রায় সাত ঘণ্টা পর রাজধানীর শাহবাগ ও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় ছাড়েন। এদিকে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানোর আন্দোলনে ৪৮ ঘণ্টার জন্য স্থগিত করে সড়ক ছেড়ে দেন তার সমর্থকরা। অবরোধ কর্মসূচি শেষ হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

শুধু শাহবাগ, বাংলামোটর, কাকরাইল নয়, সকাল থেকেই ধানমণ্ডি, কাওরান বাজার, নিউ মার্কেট, মগবাজার, গুলিস্তান, মহাখালী, পল্টনসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তীব্র যানজটে স্থবির হয়ে পড়ে। এতে কর্মব্যস্ত মানুষরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। দুপুরের পর এ যানজট আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। 

কাওরান বাজার থেকে হেঁটে আসা যাত্রী ফরহাদ বলেন, ‘আমি আমার সন্তানকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাচ্ছি। আমার ছোট ভাই সেখানে তিনদিন ধরে ভর্তি। তার সঙ্গে আমার স্ত্রী রয়েছে। তাদের জন্য বাসা থেকে খাবার নিয়ে যাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘এই ছোট বাচ্চাকে নিয়ে কীভাবে এতদূর হেঁটে যাবো। কাওরান বাজারে এসে বাস আর চলে না। কোনো উপায় না পেয়ে এখন বাস থেকে নেমে হেঁটে যেতে হচ্ছে।’

যাত্রী, বাসচালকসহ অনেকের সঙ্গে কথা হয়। একজন বাস যাত্রী শাহানা বলেছেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে বসে কাটিয়ে দিতে হচ্ছে এই ভোগান্তির শেষ কোথায়? দাবি-দাওয়া নিয়ে সব সময় কেন সড়ককেই বেছে নিতে হবে। আমাদের কি সময়ের কোনো মূল্য নেই। দুই ঘণ্টা ধরে এই বাসের মধ্যে বসে আছি। আমি মিরপুর থেকে গুলিস্থানে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বেরিয়ে এই ভোগান্তির মধ্যে পড়েছি। আরেক যাত্রী মাসুম বলেন, আমি নারায়ণগঞ্জ যাবো। মিরপুর থেকে সকালে বের হই। এখন দুপুর গড়িয়ে যাচ্ছে তবুও বাংলামোটর পার হতে পারছি না। এখানে দীর্ঘ সময় বসে আছি বাসে। কখন পৌঁছাবে সেটি জানা নেই।
এদিকে, পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, প্রতিদিন এমন সড়ক অবরোধের কারণে তারা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছেন। গাড়ির মালিককে খরচের টাকা দিতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। শিকড় পরিবহনের চালক মেজবাহ বলেন, মিরপুর থেকে সকাল ১১টায় বাস নিয়ে রাস্তায় বের হয়েছি। এখনো গুলিস্থানে যেতে পারছি না, কাওরান বাজার আটকে আছি দুই ঘণ্টা ধরে। যাত্রীরা সব এক এক করে নেমে যাচ্ছে।

গতকাল সকাল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টির পানি জমে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। নিউ মার্কেটসহ বেশকিছু সড়ক, অলিগলি পানিতে ডুবে যায়।

 

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status