শেষের পাতা
শাহজাহানের প্রত্যয়ন, কয়েস জামায়াতকর্মী
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
২৫ মে ২০২৫, রবিবার
মিসবাউল ইসলাম কয়েস। সিলেটের আলোচিত আওয়ামী লীগ নেত্রী হেলেন আহমদের ব্যবসায়িক পার্টনার। বিগত সরকারের সময় হেলেনের নানা অপকর্মের সহযোগী ছিলেন কয়েস। এ কারণে নানা সময় আলোচনায় এসেছেন তিনি। গণ-অভ্যুত্থানের পর কয়েস নিরাপদই ছিলেন। প্রকাশ্যেই চলাফেরা করতেন। এই অবস্থায় ১২ই এপ্রিল রাতে নগরের জিন্দাবাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বর্তমানে একাধিক মামলায় কারান্তরীণ রয়েছেন কয়েস। সেই কয়েস জামায়াতকর্মী- নগর জামায়াতের সেক্রেটারি মো. শাহজাহান আলীর দেয়া একটি প্রত্যয়নপত্রকে ঘিরে সিলেটে তোলপাড় চলছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্নবাণে জর্জরিত হচ্ছেন নগর জামায়াতেই ওই নেতা। প্রশ্ন উঠেছে; কয়েস কীভাবে জামায়াত কর্মী হয়েছেন। ভার্চ্যুয়াল মিডিয়ায় সমালোচকরা বলছেন; বিগত ১৬ বছর সিলেটের আওয়ামী লীগ নেত্রী হেলেনের পার্টনার হিসেবে কয়েস পরিচিত ছিল। ওই সময় কখনো কখনো সে নিজেকেও আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিতো। কয়েস সিলেটে দাপট খাটিয়েছে একতরফা। তার দায়ের করা মামলাও একাধিক। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাও একাধিক। ঢাকা-সিলেটে মামলার লড়াইয়ে একাধিকবার আলোচিত হয়েছেন কয়েস। এবার গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে তাকে নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। এই আলোচনায় সম্প্রতি যুক্ত হয়েছেন সিলেট নগর জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মো. শাহজাহান আলী।
তিনি ১৯শে ডিসেম্বর কয়েসকে জামায়াতকর্মী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে একটি প্রত্যয়নপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। সেই প্রত্যয়নপত্র নিয়ে এখন সিলেটে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। আইনজীবীরা জানিয়েছেন- গত ১২ই এপ্রিল পুলিশ তাকে আটক করে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করে। এরপর থেকে মিসবাউল ইসলাম কয়েস এসব মামলায় জামিন নিয়ে শাহজাহান আলীর দেয়া প্রত্যয়নপত্রটি আদালতে দাখিল করছেন। জামায়াত নেতা মো. শাহজাহান আলী স্বাক্ষরিত প্রত্যয়পত্রে বলা হয়- ‘এডভোকেট মোহাম্মদ মিসবাউল ইসলাম, পিতা-মরহুম আলহাজ মোহাম্মদ নিমার আলী, মাতা-মোছাম্মত হোসনে আরা বেগম, এইচ এম ভবন, ফরিদাবাদ, বড়শলা, পো. সিলেট ক্যাডেট কলেজ, থানা-এয়ারপোর্ট, এসএমপি সিলেট। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একজন সক্রিয় কর্মী। প্রত্যয়নপত্রে তিনি উল্লেখ করেন- ‘আমার জানা মতে তিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দলনের পক্ষে আন্দোলন করেছেন। দক্ষিণ সুরমা থানার মামলা নং৩। ওই মামলার এজাহারে বর্ণিত ১৮নং আসামি (মিসবা কয়েছ, ৪৫ পিতা-নিমার আলী, ঠিকানা, খানা গোলাপগঞ্জ, সিলেট)। ১৮নং বিবাদীর নাম ঠিকানার সহিত তার নাম ঠিকানার আংশিক মিল রয়েছে। ঠিকানার মিল নেই। বিগত ১৫ বছর একটি কুচক্রি মহল হয়রানি করার জন্য এডভোকেট মোহাম্মদ মিসবাউল ইসলামের বিরুদ্ধে নামে-বেনামে একাধিক মিথ্যা মামলা এবং বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা কাল্পনিক অভিযোগ দায়ের করিয়াছে যা তদন্তে মিথ্যা সাজানো প্রমাণিত হয়েছে।’
প্রত্যয়নপত্রে তিনি জানান- ‘আমার ধারণা হচ্ছে মামলার সংবাদদাতা বা বাদীর অজ্ঞাতে ওই কুচক্রি মহল তাকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে মামলার এজাহারে তার আংশিক নাম ঠিকানা ঢুকিয়ে ‘স্বাধীন বাংলাদেশ’ নামক ফেক আইডির মাধ্যমে তার ছবি সংযুক্ত করে মামলার রেফারেন্স দিয়ে একাধিকবার পোস্ট ও শেয়ার করে গ্রেপ্তার করানোর অপচেষ্টাসহ অভিযোগপত্রে তার সঠিক নাম ঠিকানা ঢুকানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত আছে। মামলাটির তদন্ত রিপোর্ট বা অভিযোগপত্র প্রদান করার সময় ন্যায় বিচারের স্বার্থে তাকে মামলার দায় হতে অব্যাহতি প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সবিনয় অনুরোধ করা যাচ্ছে।’ এ ব্যাপারে সিলেট নগর জামায়াতে ইসলামের সেক্রেটারি মো. শাহজাহান আলী মানবজমিনকে জানিয়েছেন- সিলেট ল’ কলেজে পড়ার সময় কয়েস শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। তিনি তাকে চিনেন এবং তিনি কয়েসকে জামায়াতকর্মী হিসেবে প্রত্যয়ন করেছেন বলে জানান। তিনি বলেন- ‘কয়েসকে আওয়ামী লীগের সময় জামায়াত ও বর্তমান সময়ে আওয়ামী লীগ সাজানো হচ্ছে। সে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দায়ের করা তিনটি মামলার কাগজ নিয়ে আমার কাছে এসেছিল। আমি ‘লাইটলি’ তাকে প্রত্যয়ন করেছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণে কথা জানিয়েছি। কিন্তু এটি নিয়ে যা হচ্ছে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ নগর জামায়াতে ইসলামের দায়িত্বশীল নেতা মানবজমিনকে জানিয়েছেন, ‘ল’ কলেজে পড়ার সময় পরিচয়ের সূত্র ধরে একটি প্রত্যয়নপত্র দেয়া হয়েছে বলে শুনেছি। বিষয়টি কী সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
পাঠকের মতামত
তদন্ত হউক
জামাত শিবিরকে কলংকিত করার জন্য একটি কুচক্রী মহল জামাতের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। তাই এই মহল থেকে সবাই সাবধান।
একজন এডভোকেট ব্যক্তিগত প্যাডে কাউকে জামাতকর্মী বললেই হয়ে যায় না। যেহেতু জাতীয় পত্রিকায় এসেছে তাই বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য জামাতের কেন্দ্রীয় দপ্তরকে অনুরোধ করছি।
আহ জামায়াতে ইসলামীও আওয়ামীলীগ পুনর্বাসন করে!! তারা মুখে আর ফেইসবুকে বিএনপিকে ধুয়ে দিয়ে নিজেরা সাধু সাজার চেষ্টা করে কিন্তু তাদের মধ্যেই ভূত আছে তারা সেটা মানেনা কারন এটা তাদের স্বভাবজাত অভ্যাস। ধিক্কার জানাই এসব ইসলামধারী দলকে যারা ইসলাম ও মানুষের আবেগ নিয়ে খেলে পর্দার আড়ালে
জামাতীরাও দূর্নীতিগ্রস্থ