বিশ্বজমিন
টেলর সুইফটের রেকর্ড ভেঙে দিলেন লুসি গুয়ো
মানবজমিন ডেস্ক
(২ দিন আগে) ৪ জুন ২০২৫, বুধবার, ১২:২৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৪ পূর্বাহ্ন

বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছেন লুসি গুয়ো। মাত্র ৩০ বছর বয়সে বিশ্বের সবচেয়ে কমবয়সী ‘সেলফ-মেড’ নারী বিলিয়নিয়ার হিসেবে ফোর্বসের সর্বশেষ তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করেছেন তিনি। এই তালিকায় এর আগে শীর্ষস্থানে ছিলেন পপস্টার টেলর সুইফট। কিন্তু লুসি গুয়োর কাছে টিকে থাকতে পারেননি টেলর। তাকে সরিয়ে দিয়ে ওই স্থানে চলে এসেছেন লুসি। অন্যদিকে শীর্ষ স্থান থেকে এ তালিকার একেবারে ২১তম স্থানে চলে গিয়েছেন টেলর। লুসি গুয়ো’র বয়স মাত্র ৩০ বছর। বর্তমানে তার সম্পদের পরিমাণ ১৩০ কোটি ডলার। তিনি একজন প্রযুক্তি বিষয়ক উদ্যোক্তা, ফিটনেস অনুরাগী এবং ডিজিটাল কমিউনিটি গড়ার প্ল্যাটফর্ম ‘প্যাসেস’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। লস অ্যানজেলেসে বসবাসরত এই চীনা অভিবাসী পরিবারের সন্তান লুসি পড়াশোনা করছিলেন কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স ও হিউম্যান-কম্পিউটার ইন্টারঅ্যাকশন নিয়ে। কিন্তু ডিগ্রি শেষ না করেই তিনি বেরিয়ে আসেন, বড় স্বপ্নের পেছনে ছুটতে।
২০১৬ সালে তিনি সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে যুক্ত হন ‘স্কেল এআই’তে। এই প্রতিষ্ঠান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ডেটা অ্যানোটেশন সরবরাহ করে। ২০১৮ সালে তিনি প্রতিষ্ঠানটি ছাড়েন, কিন্তু নিজের অংশীদারিত্ব ধরে রাখেন- যা পরবর্তীতে তার সম্পদ বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হয়ে ওঠে। ২০২২ সালে লুসি প্রতিষ্ঠা করেন ‘প্যাসেস’। এটি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে কনটেন্ট নির্মাতারা সরাসরি তাদের ফ্যানদের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন, লাইভ স্ট্রিম করতে পারেন, ওয়ান-টু-ওয়ান বার্তা বিনিময় করতে পারেন এবং এক্সক্লুসিভ পডকাস্ট ব্যবহার করতে পারেন। মাত্র দুই বছরের মধ্যেই কোম্পানিটি ৫০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ সংগ্রহ করে। লুসি এরই মধ্যে দুটি বাড়ির মালিক। এর একটিতে লস অ্যানজেলেসে, আরেকটি মায়ামিতে। অফিসে যান ইলেকট্রিক স্কেটবোর্ডে অথবা সহকারীর গাড়িতে। নিজে রান্না করেন না, বরং ‘উবার ইটস’ থেকেই সব খাবার অর্ডার করেন। ছুটিতেও তিনি কাজ করেন। লুসি বলেছেন, ভ্যাকেশনেও দিনে ৮ ঘণ্টা কাজ করি। লুসির আরেক পরিচয়-ফিটনেস ফ্রিক হিসেবে। তিনি প্রতিদিন ‘ব্যারিস বুটক্যাম্পে’ দুটি হাই-ইনটেনসিটি ওয়ার্কআউট ক্লাস নেন।
সম্প্রতি তিনি ৩০০০টি ক্লাস সম্পন্ন করার মাইলফলক উদযাপন করেছেন। নিজের ৩০তম জন্মদিন উপলক্ষে বড় করে ‘লুসিপালুজা’ পার্টি দেন লুসি। তবে ইনস্টাগ্রামে খোলাখুলি জানান, এই বয়সে বিয়ে না করা বা সন্তান না থাকার কারণে কিছুটা ভয় কাজ করেছে তার মধ্যে। তিনি লিখেছেন- আমার অভিবাসী চীনা সংস্কৃতি আমাকে শেখায় ২৫-এ সন্তান নিতে হবে। ৩০-এ বিয়ে না করলে আমি সারাজীবন একা থাকব। কিন্তু প্রতি বছরই আমি আরও আত্মবিশ্বাসী হচ্ছি। লুসি গুয়ো এখন শুধু একজন বিলিয়নিয়ার নন, বরং একজন নতুন প্রজন্মের প্রতিচ্ছবি- যিনি প্রযুক্তি, ফিটনেস ও উদ্ভাবনকে জীবনের চালিকা শক্তি হিসেবে বেছে নিয়েছেন। তার গল্পটি তরুণ উদ্যোক্তা ও নারীদের জন্য এক নতুন অনুপ্রেরণা।