ঢাকা, ৩ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৫ জিলহজ্জ ১৪৪৬ হিঃ

বিশ্বজমিন

স্টেটসম্যানের সম্পাদকীয়

বাংলাদেশে আপস অনিবার্য

মানবজমিন ডেস্ক

(১ দিন আগে) ১ জুন ২০২৫, রবিবার, ১০:৪৫ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৭:০০ অপরাহ্ন

mzamin

শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে নিয়োগ করার পর থেকেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা তীব্র ও উদ্বেগজনক মোড় নিয়েছে। একসময় এ প্রক্রিয়া অন্তর্বর্তীকালীন ন্যায়বিচার ও গণতান্ত্রিক নবায়নের ক্ষেত্রে সাহসী পরীক্ষা হিসেবে প্রশংসিত হচ্ছিল, এখন তা অকার্যকর হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। এই সমস্যার মূলে রয়েছে একটি মৌলিক ভুল বা বিচ্যুতি। তা হলো ড. ইউনূসের ‘সংস্কার প্রথম, নির্বাচন পরে’র দৃষ্টিভঙ্গি। বাংলাদেশের বড় বড় রাজনৈতিক দলের মধ্যে যে তাৎক্ষণিক রাজনৈতিক প্রত্যাশা আছে তার সঙ্গে এই প্রবণতা মেলে না। ওইসব রাজনৈতিক পক্ষ অন্তর্বর্তী পর্যায়কে একটি রূপান্তরের সুযোগ হিসেবে দেখে না, বরং ক্ষমতায় ফেরার একটি কৌশলগত সুযোগ হিসেবে দেখে। ভারতের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য স্টেটসম্যানের ‘স্টলমেট’ শীর্ষক এক সম্পাদকীয়তে এসব কথা বলা হয়েছে। 

এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা দল এবং স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাসে আধিপত্য বিস্তারকারী শক্তি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা ছিল একটি ভূমিকম্পের মতো পদক্ষেপ। বছরের পর বছর কর্তৃত্ববাদী হয়ে ওঠার সংশোধন হিসেবে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়। বিরোধীদের জন্য, বিশেষ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির জন্য এটা ছিল দীর্ঘ প্রতীক্ষিত রাজনীতির মাঠকে পরিষ্কার করা। কিন্তু এই পথ থেকে আওয়ামী লীগকে সরিয়ে দেয়ার পর দ্রুতই ধৈর্যের বাধ ক্ষীণ হয়েছে। বিএনপি এবং অন্য অংশীদাররা এখন নির্বাচনের জন্য কঠোর চাপ দিচ্ছে, সংক্ষিপ্ত সময়ে পরিবর্তন চাইছে এবং ন্যূনতম সংস্কার চাইছে। 

অন্যদিকে ড. ইউনূসের সংস্কারের যে ম্যান্ডেট, তা এক সময় সবার কাছে ঐক্যবদ্ধ আদর্শ ছিল, তা এখন বিভক্তির প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে। অন্তর্বর্তী সরকার কাঠামোতে, বিশেষ করে এর উপদেষ্টা পরিষদ পক্ষপাতিত্ব ও স্বচ্ছতার অভাবের অভিযোগে ব্যাপকভাবে সমালোচিত। 

অভিযোগের মধ্যে বলা হচ্ছে, কিছু উপদেষ্টা নবগঠিত ন্যাশনাল সিটিজেন্স পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে যুক্ত। এই অভিযোগ সরকারের নিরপেক্ষতাকে আরো ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সিভিল সার্ভিসে অসন্তুষ্টি দেখা দিয়েছে। তা আরো ত্বরান্বিত হয়েছে বিতর্কিত পাবলিক সার্ভিস (অ্যামেন্ডমেন্ট) অর্ডিন্যান্সের বিতর্কে। এসব অস্থিরতায় আরো একটি ধাপ যুক্ত করেছে। ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভে ব্যুরোক্রেটিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার হুমকিতে রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রশাসন এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে পঙ্গু হয়ে পড়ছে। জনগণের আস্থাও কমছে। 

অনেক নাগরিক এক সময় ড. ইউনূসের সংস্কারে সমর্থন দিয়েছিলেন। এখন তারা আশা ও হতাশার মধ্যে আটকে আছেন। বাস্তব অগ্রগতি অথবা একটি স্পষ্ট সময়সীমা ছাড়া, জনগণের অনুভূতি আশাবাদ থেকে মোহভঙ্গের দিকে ঘুরে যেতে পারে। এটা হলে অন্তর্বর্তী শাসনব্যবস্থার ভিত্তিকে দুর্বল করে দেবে। চূড়ান্ত চাপের জন্য কেউ কেউ একটি বাহিনীর দিকে ইঙ্গিত করেন। বলা হয়, বাংলাদেশের বেসামরিক প্রশাসনের ওপর সব সময়ই তাদের নীরব প্রভাব আছে। ড. ইউনূসের প্রতি সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানের ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন নিশ্চিত করার যে বার্তা দিয়েছেন সম্প্রতি, তা প্রাতষ্ঠানিক অধৈর্যের ইঙ্গিত দেয় এবং তা উপেক্ষা করা যায় না। 

এই পর্যায়ে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অস্বস্তিকর একটি সত্যের মুখোমুখি। তা হলো- কঠোর রাজনৈতিক এজেন্ডা এবং পদ্ধতিগত প্রতিরোধের মুখে মহৎ উদ্দেশ্য যথেষ্ট নয়। ব্যাপক ঐকমত্য ছাড়া ব্যাপক সংস্কারগুলি টেকসই পরিবর্তনের পরিবর্তে বিচ্ছিন্ন পদক্ষেপে পরিণত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়তে পারে। ঘড়ির কাঁটা টিক টিক করে এগিয়ে চলছে। অন্তর্বর্তী সরকার তার দুটি লক্ষ্য সংস্কার অথবা নির্বাচন এর কোনোটি অর্জন না করা পর্যন্ত তার বৈধতা হারাতে পারে না। এক্ষেত্রে আপোস অনিবার্য। হয়তো ড. ইউনূস সংস্কারের মাধ্যমে বিশ্বাসযোগ নির্বাচনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা পুনর্বিবেচনা করবেন অথবা সর্বোতভাবে তার অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে থাকবেন।  বাংলাদেশ এক নাজুক মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে। সামনের পথ আদর্শবাদের ওপর কম নির্ভর করবে। বেশি নির্ভর করবে বাস্তববাদী রাজনৈতিক সমঝোতার ওপর।

 

পাঠকের মতামত

ভারতীয় মিডিয়ার তথ্য মানবজমিন কেন প্রকাশ করবে,

Md.Forkan Uddin
২ জুন ২০২৫, সোমবার, ৫:৪৮ অপরাহ্ন

Alhamdulillah we are on right track since India is burning.

Amzad
২ জুন ২০২৫, সোমবার, ২:৫৭ অপরাহ্ন

তথাকথিত স্ট্যাটসমেন পত্রিকা পরিষ্কার ভারতীয় ভাষ্য প্রকাশ করেছে যা বানোয়াট ও একদেশদর্শী।

হৃদয়ে বাংলাদেশ
২ জুন ২০২৫, সোমবার, ১০:১২ পূর্বাহ্ন

স্বাভাবিক ভাবেই ভারত তার নিজের স্বার্থ সবার আগেই দেখবে , এটা খুবই স্বাভাবিক কারন হচ্ছে বাংলাদেশের অবস্থান এমন এক জায়গায়ে যেটা কি না ভারতের পেটের ভিতরে এবং সেভেন সিস্টার বাংলাদেশের মাধ্যমেই অনেক কিছুই করা যেতে পারে । তাই ভারত যে করেই হউক বাংলাদেশকে নিজেদের কন্ট্রলে রাখতে চাবেই চাবে সেটা ছলে বলে কলা কৌশলে । ভারতের জায়গায়ে অন্য কেও হলেও এই একই কাজটা করে যেতো কিন্তু বাংলাদেশের স্বার্থ বাংলাদেশকেই দেখতে হবে তাই স্বদেশ প্রেম , অর্থনীতি এবং পরাস্ট্র মন্ত্রানালয়ের সুজগ নীতি এখন আমাদের খুবই দরকার হয়ে পড়েছে ।

hafiz mohammed
২ জুন ২০২৫, সোমবার, ১০:০৮ পূর্বাহ্ন

ভারতীয় মিডিয়ার তথ্য মানবজমিন কেন প্রকাশ করবে,

Md. Shahid Ullah
২ জুন ২০২৫, সোমবার, ৯:৫২ পূর্বাহ্ন

৫ বছর পর ইলেকশান চাই।

Abu sayed Mahmud
২ জুন ২০২৫, সোমবার, ৯:১৮ পূর্বাহ্ন

ভারতীয় পত্রিকা এরকমই লিখবে, অবাক হওয়ার কিছু নেই।

কে. জামান
২ জুন ২০২৫, সোমবার, ৯:০২ পূর্বাহ্ন

why do you have to quote from Indian garbase media?

Akram
২ জুন ২০২৫, সোমবার, ৬:৪৩ পূর্বাহ্ন

Indian media shouldn't be used as a reference.

Firoz Mannan
২ জুন ২০২৫, সোমবার, ৬:৩২ পূর্বাহ্ন

বিএনপিকে একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিপক্কতা দেখাতে হবে। অন্যথায়, বাঙালিরা তাদের জীবন শিক্ষা দেবে।

Nadim Ahammed
১ জুন ২০২৫, রবিবার, ১১:৪৩ অপরাহ্ন

manabzaminer kachhe arakom mullyohin report asha kori ni .

Jony
১ জুন ২০২৫, রবিবার, ১০:২৯ অপরাহ্ন

সব কথার শেষ কথা, নির্বাচন যত বিলম্বিত হবে, দেশ তত অস্থিরতার দিকে মোড় নেবে।

মুহাম্মদ ইসমাঈল বুখা
১ জুন ২০২৫, রবিবার, ৮:৫২ অপরাহ্ন

ভারতের সব মিডিয়া হল মূদির সুরে গদি মিডিয়া। এগুলো কেউই বিশ্বাস করে না।

ঠাকূঢ়
১ জুন ২০২৫, রবিবার, ৮:২৩ অপরাহ্ন

ভারতীয় মিডিয়া বায়াসড প্রমাণিত হয়েছে। তাদের রিপোর্ট না আনাই এখানে উত্তম।

Amin
১ জুন ২০২৫, রবিবার, ৭:২১ অপরাহ্ন

বাংলাদেশের প্রতি ভারতের আচরন জানোয়ারের চেয়েও খারাপ। এদের ব্যাপারে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে।

Matinur Chowdhury
১ জুন ২০২৫, রবিবার, ৬:২২ অপরাহ্ন

ভারতের সব মিডিয়া আধা জল খেয়ে নেমেছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। স্বাধীনতার পর থেকেই ভারত সব সময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তাবেদারীই কামনা করে। এই পর্যন্ত বাংলাদেশে যারাই ক্ষমতায় এসেছে ভারতের তাবেদারী করেছে। বিগত হাসিনা সরকার তো তাবেদারীর সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে।

জামশেদ পাটোয়ারী
১ জুন ২০২৫, রবিবার, ৪:২২ অপরাহ্ন

বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status