কলকাতা কথকতা
১৪৪ বছরে পা দিয়ে দার্জিলিং টয় ট্রেন প্রথম জন্মদিন পালন করল
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা
(৬ ঘন্টা আগে) ৪ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার, ৬:২৬ অপরাহ্ন

পোশাকি নাম দার্জিলিং হিমালয়ান রেল। কিন্তু সকলের কাছে প্রিয় দার্জিলিং টয় ট্রেন বা খেলনা ট্রেন হিসেবে পরিচিত। সমতলের শিলিগুড়ি থেকে ৭২১৮ ফুট উচ্চতায় দার্জিলিং পর্যন্ত ৪৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয় বাষ্পচালিত ইঞ্জিনে চলা ট্রেনটি। মন্থর গতিতে ইঞ্জিন থেকে ধোঁয়া উড়িয়ে কু ঝিক ঝিক করতে করতে কখনো জঙ্গলের পাশ দিয়ে কখনো রাস্তার পাশাপাশি এই টয় ট্রেন ২ ফুট গেজের রেলপথ দিয়ে পাড়ি দেয় দীর্ঘ পথ। গন্তব্যে পৌঁছুতে ছয়টি জিগ জাগ এবং পাঁচটি লুপ ব্যবহার করে এগিয়ে চলে এই ট্রেন। মাঝে ভারতের সর্বোচ্চ রেল স্টেশনে ঘুম ছুঁয়ে যায়। তবে টয় ট্রেনের এই চলা মাঝে মাঝেই থমকেছে নানা কারণে। দুর্ঘটনা এর নিত্যসঙ্গী। তবুও পাহাড়ের সৌন্দর্য অবলোকনের জন্য পর্যটকদের কাছে এই খেলনা গাড়ি বা টয় ট্রেনের আকর্ষণ এতটুকু কমেনি।
দেখতে দেখতে শুক্রবার ১৪৪ বছরে পা দিয়েছে এই দার্জিলিং টয় ট্রেন। আর এই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে এই প্রথম উদযাপিত হয়েছে টয় ট্রেনের জন্মদিন। দার্জিলিং হিমালয়ান রেল (ডিএইচআর) এর উদ্যোগে ৪ জুলাই সুকনা স্টেশনে আয়োজিত এই জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিল ছাত্র শিক্ষক থেকে বহু মানুষ। ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যের শিরোপা দিয়েছে।
শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিংয়ের পাহাড়কে টয় ট্রেনের মাধ্যমে যুক্ত করার জন্য ১৮৭০ সালে প্রথম বার পরীক্ষামূলক ভাবে টয় ট্রেন চালানো হয়েছিল। তবে ১৮৭৯ থেকে বাণিজ্যিক ভাবে চালানোর জন্য কাজ শুরু হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ১৮৮১ সালের ৪ জুলাই শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিংয়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল প্রথম টয় ট্রেন। ওই দিনটিকে স্মরণে রেখে এ বছর ৪ জুলাই টয় ট্রেন দিবস পালন করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
দার্জিলিং হিমালয়ান রেল কর্তৃপক্ষের আশা, টয় ট্রেনের মাধ্যমে আগামী দিনে পর্যটন ব্যবসায় জোয়ার আনবেন তাঁরা। দার্জিলিংয়ের টয় ট্রেনের নাম সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জয় রাইডের সংখ্যা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আমদাবাদ, বেঙ্গালুরু থেকে অত্যাধুনিক টয় ট্রেনের ইঞ্জিন নিয়ে আসা, প্রত্যেক স্টেশনের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করা, মিউজিয়াম ও ওয়ার্কশপগুলিকে ঢেলে সাজানোর কাজে উদ্যোগী হয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তবে তার থেকেও বেশি টয় ট্রেনকে ঘিরে এই ধরনের অনুষ্ঠান এবং উৎসব পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে বলে আশাবাদী রেল আধিকারিকেরা। সুকনা স্টেশনের ম্যানেজার তপন মালাকার বলেন, এই প্রথম টয় ট্রেন দিবস বা তার জন্মদিন পালনে উদ্যোগী হয়েছি। সুকনা স্টেশন ব্রিটিশ রেল স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন। কাজেই প্রথম বার জন্মদিনে এই স্টেশনকে বেছে নেওয়া হয়েছে। টয় ট্রেন বা পর্যটনের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন সংগঠন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে এই অনুষ্ঠানে। আমরা আশা রাখছি, ‘টয় ট্রেন ডে’ পর্যটকদের কাছে আলাদা করে জায়গা করে নেবে।