প্রথম পাতা
সাবেক সিইসি শামসুল হুদা আর নেই
স্টাফ রিপোর্টার
৬ জুলাই ২০২৫, রবিবার
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এটিএম শামসুল হুদা ইন্তেকাল করেছেন। শনিবার সকালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। তিনি স্ত্রী ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। শামসুল হুদার শ্যালক আশফাক কাদেরী জানিয়েছেন, সকাল ৯টার দিকে গুলশানের বাসায় এটিএম শামসুল হুদা অচেতন হয়ে পড়েন। পরে তাকে বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আশফাক কাদেরী আরও বলেন, শামসুল হুদার মরদেহ ইউনাইটেড হাসপাতালে রাখা হয়েছে। তার মেয়ে সিমিন হুদা যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। তিনি দেশে ফিরলে জানাজা হবে। বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
সাবেক এই সিইসি নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেতৃত্ব দেন। ড. ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি এটিএম শামসুল হুদা সিইসি’র দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তিনি কাজ করেছেন ২০১২ সাল পর্যন্ত। কমিশনার হিসেবে তার সঙ্গী হন মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও এম. সাখাওয়াত হোসেন। এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০০৮ সালে যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করে সেই নির্বাচন নিয়ে দলগুলো বড় কোনো প্রশ্ন তুলতে পারেনি। অনেকে বলে থাকেন দেশের ইতিহাসে ভালো নির্বাচনগুলোর একটি আয়োজন করেছিলেন শামসুল হুদা কমিশন।
এটিএম শামসুল হুদা ১৯৪২ সালে ফরিদপুর জেলার সদর উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তিনি পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস থেকে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে যোগদান করেন। তিনি বাগেরহাট মহকুমার প্রশাসক, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও ব্যাংকিং বিভাগের সচিব এবং বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বপালন করেন।
সাবেক সিইসি এটিএম শামসুল হুদার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ইসি’র সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আশাদুল হক স্বাক্ষরিত এক বার্তায় এই শোক প্রকাশ করা হয়। শোকবার্তায় বলা হয়, ‘নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছে। মহান আল্লাহ্তাআলা তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন।
গুলশান সোসাইটির এক শোকবার্তায় বলা হয়, এটিএম শামসুল হুদা ছিলেন এক নিবেদিতপ্রাণ রাষ্ট্রচিন্তক, যিনি জাতির নানা ক্রান্তিলগ্নে আপসহীন নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার নিরপেক্ষতা, দূরদর্শিতা এবং নৈতিক দৃঢ়তা আমাদের গণতন্ত্রের পথকে সুদৃঢ় করেছিল। প্রশাসনে, নির্বাচন কমিশনে কিংবা সোসাইটির নেতৃত্বে যেখানে ছিলেন, সেখানেই ছিলেন একজন আলোকবর্তিকা।
আরও বলা হয়, শামসুল হুদার মৃত্যুতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। গুলশান, ঢাকা এবং সারা বাংলাদেশ একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিককে হারালো। আল্লাহ্? যেন তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসীব করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারকে এই কঠিন সময়ে ধৈর্য ধারণের তৌফিক দেন।