বাংলারজমিন
হবিগঞ্জের সাবেক এমপি মজিদকে জেলহাজতে প্রেরণ
স্টাফ রিপোর্টার, হবিগঞ্জ থেকে
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বুধবার
ঢাকা থেকে গ্রেপ্তারকৃত হবিগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. আব্দুল মজিদ খানকে বানিয়াচংয়ের ৯টি হত্যা মামলায় শ্যোন এরেস্ট দেখিয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করেছেন হবিগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। মঙ্গলবার সকালে কড়া নিরাপত্তায় ঢাকা থেকে একটি মাইক্রোবাসযোগে তাকে হবিগঞ্জের আদালতে আনা হয়। পরে তাকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল আলীমের আদালতে তোলা হলে পুলিশ তাকে ৯টি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের আবেদন করে। পরে বিচারক তাকে শ্যোন এরেস্ট দেখিয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
এ সময় তার পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। পরে রাষ্ট্রপক্ষের সিএসআই শুনানি করেন। গ্রেপ্তারকৃত মজিদের বিরুদ্ধে বানিয়াচংয়ে ৯ হত্যা মামলাসহ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ রয়েছে বলে জানায় পুলিশ। এর আগে সোমবার রাত ৯টায় ঢাকার উত্তরা এলাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
জানা যায়, গত ৫ই আগস্ট বানিয়াচংয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে পুলিশ-আওয়ামী লীগ ও ছাত্র-জনতার সংঘর্ষে নয়জন নিহত হন। এ ঘটনায় দায়ের করা একাধিক মামলায় মজিদকে ২ নম্বর আসামি করা হয়। এ ছাড়াও হবিগঞ্জ শহরে রিপন শীল হত্যা মামলায় তার নাম ৩ নম্বরে রয়েছে বলে ওসি আলমগীর কবীর জানিয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিশু হাসান মিয়া (১২) নিহতের ঘটনায় সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ খানসহ ৪ শতাধিক জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত (২২শে আগস্ট) নিহত হাসানের পিতা ছানু মিয়া বাদী হয়ে বানিয়াচং থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। এ ছাড়া শহরের রাজনগর এলাকার বাসিন্দা ফজল মোহাম্মদের ছেলে ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ সালেহ আহমেদ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বরাবর মজিদসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেন। তাছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চোখে গুলিবিদ্ধ রিমন মিয়ার মা মরম চান বাদী হয়ে মজিদ খানসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ একটি মামলা করেন। শুধু তাই নয়, বানিয়াচংয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নয়জন হত্যার ঘটনায় মজিদ খানসহ ৩০০ জনের নামে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়। এতে ২৬৪ জনের নামোল্লেখ ও বাকিরা অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়। এ ছাড়াও আরও একাধিক মামলায় তাকে আসামি করা হয়।
আব্দুল মজিদ খান ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে হবিগঞ্জ-২ আসন থেক সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করে আওয়ামী প্রার্থী ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েলের কাছে হেরে যান। পরে হবিগঞ্জের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) হিসেবে দায়িত্ব পান। ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতা শহরের টাউন হল সড়কের তার বাসাটি ভেঙে লুটপাট করে আগুন ধরিয়ে দেয়। ওইদিনই তিনি লাইভে এসে শহরবাসীর উদ্দেশ্যে আবেগঘন বক্তব্য দিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম জানান, মজিদকে সকালে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল হালিমের আদালতে হাজির করা হয়। তিনি ৯ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হওয়ায় আদালত ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।