খেলা
তবুও আত্মবিশ্বাসী শান্ত
স্পোর্টস রিপোর্টার
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার
ইনজুরি কাটিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে (বিপিএল) ফিরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে ফরচুন বরিশালের হয়ে ৫ ম্যাচের বেশি খেলা হয়নি। ফর্মহীনতা ও দলের তরুণ ক্রিকেটার রিশাদ হোসেনকে সুযোগ করে দিতেই তিনি বিপিএলে খেলা থেকে বিরত থাকেন। তাই বলে বসে থেকেছেন এমন নয়। বিপিএলের শেষ দিকে শান্তর অনুশীলনের ঠিকানা বদলে গিয়েছিল। ফরচুন বরিশালের সঙ্গে একাডেমি মাঠ নয়, তিনি অনুশীলন করেছেন ইনডোরের মাঠে জাতীয় দলের কোচিং স্টাফদের সঙ্গে। তাই চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে বিপিএলে ম্যাচ খেলতে না পারাকে তিনি দেখছেন আশীর্বাদ হিসেবেই। শান্ত বলেন, ‘খেলতে পারি নাই, এর ভেতরেও ইতিবাচক কিছু দিক ছিল। নিয়মিতই অতিরিক্ত ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছি। কীভাবে আরেকটু প্রস্তুত হতে পারি, ওখানে কোচরা সাহায্য করেছে। পাশাপাশি আমি ফিটনেসটা নিয়েও কাজ করেছি। বিপিএলের ওই সময়টা খুব ভালো প্রস্তুতি নিতে পেরেছি। আশা করছি যে যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিটা ভালো যাবে।’
অনেক দিন পর ম্যাচ খেলবেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বলার অপেক্ষা রাখে না, ম্যাচ প্রস্তুতি ছাড়াই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে মাঠে নামতে হবে। তবে এ নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত নন শান্ত। তিনি বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) একটা ম্যাচ সিনারিও হয়েছে, আজকেও (গতকাল) হবে। সামনে একটা প্রস্তুতি ম্যাচ আছে। হয়ে যাবে। এই ফরম্যাটটা তো ছোটবেলা থেকে অনেক বেশি খেলি, মানিয়ে নিতে খুব বেশি সমস্যা হবে না। অনেক দিন পর ম্যাচ খেলব, ম্যাচ প্রস্তুতিটা এখানে হচ্ছে।’
তবে নিজের খেলা শেষ ওয়ানডেতে দারুণ ইনিংস আছে শান্ত। ওই স্মৃতি মনে করার স্বস্তি আছে তার। তিনি বলেন, ‘ওয়ানডের স্মৃতিটা আমার ভালো, শেষ ম্যাচে ভালো ইনিংস খেলেছিলাম আফগানিস্তানের সঙ্গে। টি-টোয়েন্টিতে ভালো অবস্থানে নেই। জিনিসটা হলো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে গত বছর মোটামুটি রান করেছি, কিন্তু স্ট্রাইক রেট হয়তো ওরকম আপ টু দ্য মার্ক ছিল না। কিন্তু সব মিলিয়ে যদি রানের কথা বলেন, রান মোটামুটি ভালো করেছি। যদিও আমার সক্ষমতা, আমি বিশ্বাস করি এর চেয়েও আমি ভালো ব্যাটসম্যান। ওই ফরম্যাট নিয়ে চিন্তা করছি না, ওয়ানডে ফরম্যাটটা ভালো যাচ্ছে।’
সাকিব প্রশ্নে শান্তর অস্বস্তি!
২০২৩ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কাকে হারানো ওই বিতর্কিত ম্যাচটি দিয়েই বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলা নিশ্চিত হয়। সেই ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ে ব্যাট ও বল হাতে বড় অবদান রেখেছিলেন সাকিব আল হাসান। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম টাইমড আউটের ঘটনাও সেই ম্যাচে। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে ওই আউট করার সময়ে টাইগারদের অধিনায়ক ছিলেন সাকিব। শ্রীলঙ্কাকে যে ম্যাচটিতে ২৭৯ রানে আটকে রাখা গিয়েছিল, তাতে ওই আউটের একটা ভূমিকা তো ছিলই, সাকিব বল হাতেও নিয়েছিলেন ২ উইকেট। পরে আসল কাজটা ব্যাট হাতেও করেন তিনি। দল ৪১ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ১৪৯ বলে ১৬৯ রানের একটা বড় জুটি গড়েন। বলা চলে সেই জুটিতে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু সেই সাকিবই নেই এখন বাংলাদেশ দলে। গেল ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশেই ফিরতে পারছেন না আওয়ামী লীগের সাবেক এই সংসদ সদস্য। শুধু তাই নয়, বোলিং অ্যাকশনেও নিষিদ্ধ হয়েছেন সাকিব। যে কারণে জাতীয় দলে তার খেলা হচ্ছে না। সাকিব নিয়ে প্রায় প্রতিটি ক্রিকেটারকেই সংবাদ মাধ্যমে নানা প্রশ্নের সম্মুক্ষীণ হতে হয়। গতকালও তার ব্যতিক্রম হয়নি। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলতে যাওয়ার আগে সংবাদ মাধ্যমে এসে সাকিবকে নিয়ে উত্তর দিতে গিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করেন টাইগার অধিনায়ক শান্ত। তিনি বলেন, ‘সাকিব ভাইকে অবশ্যই মিস করব। এই প্রশ্ন কেন করলেন, আমি জানি না। সাকিব ভাইকে মিস করব, থাকলে ভালো হতো অনেকবার এই উত্তর পেয়েছেন, খেলোয়াড়েরা দিয়েছে। আমার মনে হয় না একটা টুর্নামেন্টে যাওয়ার আগে এই প্রসঙ্গে কথা বলাটা যৌক্তিক হবে।’ এরপর অবশ্য শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওই ম্যাচে সাকিবের অবদানকেও নতুন করে স্বীকার করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘নির্দিষ্ট করে যদি বলেন, ব্রিলিয়ান্ট ব্যাটিং করেছেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে। আমার মনে হয়, ওই ইনিংসটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, আমাদের দলকে জেতাতে অনেক সহায়তা করেছে।’