বাংলারজমিন
ফেনীতে ভুল চিকিৎসায় দৃষ্টি হারানোর পথে মাদ্রাসা ছাত্র
ফেনী প্রতিনিধি
২১ মার্চ ২০২৫, শুক্রবারফেনীতে চক্ষু চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে একজন মাদ্রাসা ছাত্রের দুই চোখ হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন। বর্তমানে শিক্ষার্থীর জীবন-মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেনীর আমলী আদালতে ভুক্তভোগী ছাত্রের মা বাদী হয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (বিচারিক হাকিম) অপরাজিতা দাশ মামলাটি গ্রহণ করে ফেনীর সিভিল সার্জনকে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার আদেশ দিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত শিশুটির নাম আরাফাত ইসলাম (১১)। তিনি নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানার হাবিবপুর ইউনিয়নের বিরাহিমপুর গ্রামের রাজু চৌধুরীর ছেলে। আরাফাত ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের তেমুহানী মাদ্রাসাতুল হেদায়ার শিক্ষার্থী।
মামলার এজহার সুত্রে জানা যায়, আরাফাতের চোখ থেকে পানি বের হওয়ায় চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি চিকিৎসার জন্য ‘ফেনী আই সেন্টার’ এর চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর চেম্বারে যায়। চিকিৎসকের দেয়া চিকিৎসা পত্র অনুযায়ী ওষুধ খাওয়ানোর পর শিশুটি সারা শরীর জ্বালা-পোড়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে পুরো শরীরে ফোসটা পড়ে যায়। পরে দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং ফেনীর একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিলে চিকিৎসক জানায় ভুল চিকিৎসার কারণে শিশুটির এই অবস্থা হয়েছে। পরে শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় ১০দিন চিকিৎসা শেষে বর্তমানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে শিশুটি বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ভুক্তভোগী মাদ্রাসা ছাত্রের এর মা বকুল চৌধুরী বলেন, চিকিৎসকের বিচার চেয়ে আমি আদালতে মামলা করেছি। আমি এ অন্যায়ের আমি বিচার চাই।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী ফেনী কোর্টের অতিরিক্ত সহকারী কুশলী (এপিপি) হুমায়ুন কবির বাদল জানায়, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ফেনীর সিভিল সার্জনকে আগামী ২৮ মে এর মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার আদেশ দিয়েছেন।
অভিযুক্ত চক্ষু চিকিৎসক বলেন, যে রোগীর চোখে সমস্যা হয়েছে তিনি কোন অভিযোগ থাকলে আমার সাথে এসে যোগাযোগ করতে পারতেন। তিনি যেহেতু আদালতে গেছেন তাই আদালতের সিদ্ধান্ত আমি মাথা পেতে নেব।
ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মাদ রুবাইয়াত বিন করিম বলেন, আদালত থেকে মামলা সংক্রান্ত কোনো নথি বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত সিভিল সার্জন কার্যালয় এসে পৌঁছেনি। নথি পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় প্রতিবেদন নির্ধারিত তারিখের মধ্যে আদালতে দাখিল করা হবে।