বাংলারজমিন
সাভারে কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
স্টাফ রিপোর্টার সাভার থেকে
৮ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার
সাভারে উলাইল এলাকায় বকেয়া বেতন পরিশোধ ও বন্ধ কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে তৈরি পোশাক শ্রমিকরা। এ সময় শ্রমিকরা শ্রম আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণসহ পাওনা পরিশোধের দাবি জানান। সোমবার সকালে পৌর এলাকার উলাইলে অবস্থিত প্রাইড গ্রুপের এইচ.আর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড ও ফ্যাশন নিট গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানার সহস্রাধিক শ্রমিক এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানায়, কারখানা কর্তৃপক্ষ কোন ধরনের নোটিশ ছাড়াই লে-অফ ঘোষণা করেছে। সকালে কারখানায় কাজে যোগদান করতে এসে শ্রমিকরা নোটিশ দেখতে পায়। পরে শ্রমিকরা কারখানা খুলে দেয়াসহ বকেয়া পাওনা পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা বিক্ষোভ অব্যাহত থাকবে বলে জানায়। পরে পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে শ্রমিকদের বুঝিয়ে ও মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন। এর আগে গত শনিবার কারখানা দু’টির মূল ফটকে সাঁটানো কারখানা দুটির মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও কম্পলায়েন্স) মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি নোটিশে ৭ই এপ্রিল থেকে আগামী ৩০শে এপ্রিল পর্যন্ত দুই কারখানার গার্মেন্টস শাখায় লে-অফ ঘোষণা করা হয়। তবে প্রশাসন (আংশিক) ও নিরাপত্তা বিভাগ এই লে-অফ ঘোষণার আওতামুক্ত থাকবে। বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১২ ধারা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে এইচ.আর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড ও ফ্যাশন নিট গার্মেন্টস লিমিটেডের গার্মেন্টস বিভাগের সকল শাখার কাজ বন্ধ রাখার কথা জানিয়ে টাঙানো নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, এইচ.আর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড ও ফ্যাশন নিট গার্মেন্টস লিমিটেডের সকল শ্রমিকদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, আকস্মিক অর্থনৈতিক বিপত্তি, তীব্র কাঁচামাল এবং জ্বালানি সংকট এবং কার্যাদেশের অভাবসহ মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে ৭ই এপ্রিল থেকে ৩০শে এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ১২ ধারা অনুযায়ী গার্মেন্টস বিভাগের সকল শাখার (সুইং, ফিনিশিং, কাটিং, প্রিন্টিং, স্যাম্পল, স্টোর, আই.ই. মার্চেন্টডাইজিং) কাজ বন্ধ এবং সংশ্লিষ্ট সকল স্তরের শ্রমিক, কর্মচারী এবং কর্মকর্তাকে লে-অফ ঘোষণা করা হলো।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন বলেন, যদি কাজ না থাকে এবং মালিকপক্ষ কারখানা না চালাতে পারেন তাহলে শ্রম আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণসহ বকেয়া পাওনা পরিশোধের দাবি জানাচ্ছি। প্রাইড গ্রুপের প্রতিষ্ঠান দুটির মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও কম্পলায়েন্স) মনিরুল ইসলাম বলেন, মূলত অর্থনৈতিক সংকটের কারণেই কারখানা দুটিতে লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমে কোভিডের সময় ধাক্কা। সেটি কাটিয়ে ওঠার পরবর্তীতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় আমাদের প্রধান বায়ার (পোল্যান্ড, রাশিয়া, ইউক্রেন) হারিয়ে আবারো ধাক্কা খেলে আমাদের ব্যাংক এবং অর্থনৈতিক সক্ষমতা নষ্ট হয়।
তিনি আরও বলেন, ঈদের আগে যাতে শ্রমিকদের সমস্যা না হয় সেজন্য আমাদের অন্য ব্যবসা থেকে প্রাইডের শো-রুম এবং শাড়ি এবং কিছু সম্পত্তি বিক্রি করে ও আমরা শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করেছি। তিনি বলেন, তবে আমরা আশাবাদী ব্যাংক এবং বায়ারদের সঙ্গে কথা হচ্ছে এই মাসের ২০-২২ তারিখে একটা সেটেলমেন্ট হলে তখন হয়তো আমরা লে-অফ থেকে বের হয়ে আসতে পারবো।