শেষের পাতা
খাগড়াছড়ি জুড়ে আতঙ্ক
অপহৃত ৬ জন উদ্ধার হয়নি ৫ দিনেও, নতুন করে আরও ২ জনকে অপহরণ
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
২১ এপ্রিল ২০২৫, সোমবারখাগড়াছড়িতে চবি’র ৫ শিক্ষার্থীসহ ৬ জনকে অপহরণের ৪ দিনের মাথায় নতুন করে আরও ২ টেকনিশিয়ানকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করেছে সন্ত্রাসীরা। অপহৃত টেকনিশিয়ানরা বেসরকারি মোবাইল কোম্পানি রবি’র টেকনিশিয়ান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। শনিবার দুপুরে মানিকছড়ি উপজেলার ময়ূরখীল এলাকা থেকে অস্ত্রের মুখে তাদের অপহরণ করে নিয়ে যায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। অপহৃত টেকনিশিয়ানরা হচ্ছে, আব্রে মারমা (২৫) ও মো. ইসমাইল হোসেন (৩৫)। এদিকে অপহরণের ৫ দিন পার হলেও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি চবি’তে পড়ুয়া অপহৃত ৫ শিক্ষার্থী ও অটোরিকশা চালককে। প্রতিদিনের ন্যায় গতকালও তাদের উদ্ধারে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়েছে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী। তবে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় দিন পার করলেও এখন পর্যন্ত অপহৃত শিক্ষার্থীদের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। এমনকি উদ্ধার অভিযানের খবর জানতেও অপহৃতদের কেউ পুলিশের শরণাপন্ন হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। স্বপ্রণোদিত হয়ে যৌথ বাহিনী সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করছে।
টেকনিশিয়ান অপহরণের ঘটনায় মানিকছড়ির স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার দুপুর সোয়া একটার দিকে মানিকছড়ি উপজেলার খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম আঞ্চলিক সড়ক সংলগ্ন ধর্মঘরস্থ ময়ূরখীল রবি টাওয়ার মেরামত করতে যায় টেকনিশিয়ান আব্রে মারমা ও মো. ইসমাইল হোসেন। সেখানে কয়েকজন সশস্ত্র পাহাড়ি সন্ত্রাসী টেকনিশিয়ানদের টাওয়ার থেকে নামিয়ে জোরপূর্বক মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তাদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। সমপ্রতি পাহাড়ে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কর্তৃক অপহরণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এদিকে অপহরণের শিকার চবি’র ৫ শিক্ষার্থীকে উদ্ধারের দাবিতে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় খাগড়াছড়ি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশ থেকে অনতিবিলম্বে সুস্থ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের মুক্তি দাবি করেন বক্তারা। এ সময় রাঙ্গামাটির এক তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনারও দাবি জানানো হয়। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুজন চাকমা ঝিমিট বলেন, ‘এ অপহরণে ইউপিডিএফ জড়িত। তারা সব সময় প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে রাজনীতি করছে।’ তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইউপিডিএফের জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা। খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, অপহৃতদের পক্ষ থেকে কেউ এখনো থানায় অভিযোগ দায়ের করেনি। এ পর্যন্ত কারও আত্মীয়স্বজন আমাদের কাছে আসেনি। আমরা স্বপ্রণোদিত হয়ে অপহৃতদের উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছি। পাহাড়ের দুর্গম এলাকাগুলোতেও অভিযান চালানো হচ্ছে। বিভিন্ন সড়কে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।’