অনলাইন
নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার ২ মাস আগেই গ্যাসের মেয়াদোত্তীর্ণ দেনা পরিশোধ করলো পেট্রোবাংলা
স্টাফ রিপোর্টার
(৭ ঘন্টা আগে) ৯ মে ২০২৫, শুক্রবার, ৬:৩২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৬:৩৩ অপরাহ্ন

গ্যাসের মোয়াদোত্তীর্ণ দেনা পরিশোধের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল আগামী ৩০শে জুন। তবে লক্ষ্যমাত্রার দুই মাস আগে মেয়াদোত্তীর্ণ সব দেনা পরিশোধ করেছে পেট্রোবাংলা।
সম্প্রতি পেট্রোবাংলার উপ-মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তারিকুল ইসলাম খানের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের সময় মোট দেনা ছিল ৭৩৭ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮ হাজার ৭০২ কোটি টাকা)। এরপর বকেয়াসহ এ পর্যন্ত মোট ৩ হাজার ৭৩৯ দশমিক ৯৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪৫ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা) পরিশোধ করা হয়েছে।
পেট্রোবাংলা জানায়, আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি (আইওসি), দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি চুক্তি ও স্পট মার্কেট থেকে আমদানি করা এলএনজি সরবরাহকারী, দুইটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল এবং ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশনের ঋণের সুদসহ পুঞ্জীভূত দেনা পরিশোধ করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, গ্যাস বিতরণ ও উৎপাদন কোম্পানির কাছে পেট্রোবাংলার পাওনা অর্থ আদায়ের জন্য মাসভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ এবং গ্যাস ব্যবহারকারী গ্রাহক নিয়মিত গ্যাস বিল পরিশোধ করায় বিতরণ কোম্পানির পক্ষে এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হয়েছে। গ্যাস বিতরণ কোম্পানি কর্তৃক বিদ্যুৎ ও সার শ্রেণিতে সরবরাহ করা গ্যাস বিলের বকেয়া অর্থ আদায়ের জন্য নিয়মিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার মাধ্যমে সমন্বয়ের মাধ্যমে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বর্ধিত হারে গ্যাস বিল আদায় করা হয়েছে।
দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় এবং স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানির জন্য সরবরাহকারীর অনুকূলে পেট্রোবাংলা কর্তৃক স্ট্যান্ড বাই লেটার অব ক্রেডিট (এসবিএলসি) ইস্যু করা হয়। এছাড়া এলএনজি গ্রহণের পর ইনভয়েস অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে আমদানি বিল পরিশোধের জন্য সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। এতে যথাসময়ে এসবিএলসি ইস্যু এবং বৈদেশিক মুদ্রায় আমদানি বিল পরিশোধ করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া, জ্বালানি খাতের গুরুত্ব বিবেচনায় পুঞ্জীভূত আমদানি বিল পরিশোধের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে।
পেট্রোবাংলা আরও জানায়, চলতি বছরের মার্চ এবং এপ্রিল মাসে এই চার শ্রেণির পাওনাদারদের যথাক্রমে ৬৫৪ দশমিক ৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ৭৯০ দশমিক ৭৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারসহ সর্বমোট এক হাজার ৪৪৫ দশমিক ৪১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিশোধ করেছে। এতে ৩০শে এপ্রিল পর্যন্ত পেট্রোবাংলার কাছে আইওসি শেভরন ও তাল্লো, দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় এলএনজি সরবরাহকারী কাতার এনার্জি ও ওকিউটি, স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি সরবরাহকারী, এফএসআরইউ এবং আইটিএফসির মেয়াদোত্তীর্ণ কোনো পাওনা নেই।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এবং অর্থ বিভাগের অনুমোদনের ফলে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) পেট্রোবাংলাকে ২ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। এর ফলে পেট্রোবাংলার পক্ষে সমুদয় বৈদেশিক দেনা পরিশোধ করা আরও সহজ হয়েছে বলেও জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
পেট্রোবাংলা বলছে, মোয়াদোত্তীর্ণ দেনা পরিশোধ করায় দেশের ক্রেডিট রেটিংয়ের ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে। স্পট মার্কেটের মাধ্যমে এলএনজি সরবরাহকারীদের পেট্রোবাংলার প্রতি আস্থা বাড়বে। ফলে আমদানির ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হবে এবং কম প্রিমিয়াম চার্জ করার মাধ্যমে এলএনজি আমদানি ব্যয় কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় এলএনজি সরবরাহকারী কর্তৃক সময়মতো এলএনজি কার্গোর শিপমেন্ট তথা লোডিং সম্পন্ন করার মাধ্যমে ঝুঁকিমুক্ত সরবরাহ চেইন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
পাঠকের মতামত
সুখবর বটে। বিপিসির দেনা সব ক্লিয়ার।