অনলাইন
যাত্রীর সাথে বাংলাদেশ বিমানের ভয়ঙ্কর আচরণ
নাবালিকা মেয়েকে রেখে জোর করে বাবাকে পাঠিয়ে দিলো ফ্লাইটে, ট্রমায় নাবালিকা
আরিফ মাহফুজ, লন্ডন থেকে
(৮ ঘন্টা আগে) ৯ মে ২০২৫, শুক্রবার, ৮:১৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৪ পূর্বাহ্ন
বাবা মেয়ের কনফার্ম টিকেট থাকা সত্ত্বেও সিলেট শাহজালাল বিমান বন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের লন্ডনগামী একটি ফ্লাইটে নাবালিকা মেয়েকে রেখে শুধু বাবাকে ফ্লাইটে পাঠিয়ে দিয়েছে। এমন ভয়ঙ্কর আচরণে ট্রমায় রয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ নাবালিকা মাহিরা হক।
এমন ঘটনায় লন্ডনে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বাবা এনামুল হক। অসুস্থ হওয়ার কারণে তিনি কথা না বলতে পাড়ায় তাঁর পক্ষ থেকে স্ত্রী (মাহিরা হকের মা) রুহেনা হক সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেছেন, ইংল্যান্ডের সারে শহরে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন রুহেনা হক। গত ২৬ মার্চ তিনি তাঁর ছোট মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে বেড়াতে যান। এর ১০ দিন পর স্বামী এনামুল হক ও বড় মেয়ে মাহিরা হক (১৫) বাংলাদেশ বিমানের রিটার্ন টিকেটের মাধ্যমে বাংলাদেশে যান।
পরিবারের সবাই একসাথে সময় কাটিয়ে রুহেনা তার ছোট মেয়েকে নিয়ে অন্য এয়ারলাইনসে লন্ডনে আসেন।
বাবা আমিনুল হক ও ১৫ বছর বয়সী মেয়ে মাহিরা হকের লন্ডনে ফিরে আসার ফ্লাইট ছিল গত ১৯ শে এপ্রিল। কনফার্ম রিটার্ন টিকিট থাকা সত্ত্বেও বিমানের বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কারণে অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে রেখে লন্ডনে একা ফিরতে হয়েছে বাবাকে।
মূল ঘটনা বলতে গিয়ে রুহেনা বলেন, স্বামী আমিনুল হক ও ১৫ বছর বয়সী (অপ্রাপ্ত বয়স্ক) মেয়ে মাহিরা হক গত ১৯ শে এপ্রিল লন্ডনে ফ্লাই করার জন্য ওসমানী বিমান বন্দরে যান।
বিমান বন্দরে যাওয়ার পর বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ জানায় তাঁদের দুজনের মধ্যে (বাবা ও মেয়ে ) যে কোন একজন ফ্লাই করতে পারবেন বলে জানান। একজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে রেখে কিভাবে বাবা লন্ডনে ফ্লাই করবেন বা অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে অভিভাবক ছাড়া কীভাবে বিমানে ফ্লাই করবে এনিয়ে বিমান কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞেস করলে বাবা আমিনুল হককে বিমান কর্তৃপক্ষের অফিসাররা জানান ফ্লাইট ওভার বুক (যদিও দুজনের রিটার্ন টিকেট ছিল একসাথে কনফার্ম ছিল) তাই একজনকে যেতে হবে। শুধু তাই নয় অবশ্যই একজনকে যেতে যেতেই হবে না হয় আপনাদের জরিমানা করা হবে আর এই ফ্লাইটে না গেলে পরবর্তী ৩-৪ মাস টিকেট মিলবে না বলে ভয় ভীতি দেখান বিমানের অফিসার (নাম না জানা)। এতে আব্দুল হক রাজি না হলে পরবর্তীতে মেয়েকে আলাদা করে বাবাকে জোর করে বিমানে নিয়ে যায় কর্তৃপক্ষ, বাবা না যেতে চাইলেও বিমান কর্তৃপক্ষ জোর জবরদস্তি করে ফ্লাই করতে বাধ্য করে। পরে মেয়ে মাহিরা হককে এগিয়ে দিতে আসা তাঁর চাচাদের কাছে দেয়া হয়।
তবে ঠিক তার পরের দিনই বিমান কর্তৃপক্ষ মেয়ের জন্য টিকিটের ব্যবস্থা করে দেয়, ১৫ বছর বয়সী মেয়ে একাই ফ্লাই করে লন্ডনে আসে । বৃটেনে জন্ম গ্রহণ করা মেয়ে মাহিরা বাংলাদেশে অভ্যস্ত নয় এবং এমন কান্ড দেখে ও একা ফ্লাইটে লন্ডনে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ে , বর্তমানে বাবা ও মেয়ে দুজনই হাসপাতালে আছেন। তবে জানা গেছে মারাত্মক ট্রমায় ভুগছেন নাবালিকা মাহিরা। ভয়-আতঙ্কে সময় কাটছে তাঁর।
লন্ডনে আসার পর রুহেনা বেগম সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি অবগত করে একটি ভিডিও বার্তা পাঠান। এবং টিকিট থাকা সত্ত্বেও কেন ১৫ বছর বয়সী অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে একা রেখে দেয়া হয় এর বিচার প্রার্থী হন রুহেনা বেগম।
বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষের এমন ভয়ানক আচরণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে এর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আকুল আবেদন জানিয়েছেন। পরবর্তীতে মেয়েকে রেখে বাবা ফ্লাই করতে বাধ্য হয়েছেন।
এদিকে আমিনুল হক লন্ডনের যে ট্রাভেলস এজেন্সি থেকে বাংলাদেশ বিমানের টিকিট ক্রয় করেছিলেন সেই স্কাই ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী আব্দুল ফাতহে জানিয়েছেন রিটার্ন টিকিট দুটি কনফার্ম ছিলো কিন্তু কেন বিমান কর্তৃপক্ষ এমন করলো এটি তাঁর নিজেরও প্রশ্ন, তবে এই অভিযোগ করে স্কাই ট্রাভেলসের পক্ষ থেকে এর কারণ জানতে চেয়ে বিমান কর্তৃপক্ষকে ই-মেইল করেছে এখন পর্যন্ত এর কোন উত্তর আসেনি।
ঘটনা সম্পর্কে মানবজমিন থেকে লন্ডনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কান্ট্রি ম্যানেজার রিয়াজ সোলাইমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন বিষয়টি সিলেট অফিসের তাই এক্ষেত্রে তাঁর করার কিছুই নেই। তিনি শুনেছেন এর তদন্ত চলছে। তিনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সিলেট ডিস্ট্রিক ম্যানেজার শাহনেওয়াজ মজুমদারের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।
ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সিলেট বিমান অফিসে যোগাযোগ করা হলে অফিসে কেউ ফোন কল রিসিভ করেনি।
পাঠকের মতামত
বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের দিয়ে প্যাদানী দেয়া হউক ঐ বিমান কর্মচারীকে, শালা কতো বড় হারামি।
অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে অপরাধীদের সনাক্ত করে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে ন্যায়বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।