বিশ্বজমিন
ফিলিপাইনে ভোটগ্রহণ শেষে সিংহাসনের লড়াই শুরু
মানবজমিন ডেস্ক
(৪ ঘন্টা আগে) ১৩ মে ২০২৫, মঙ্গলবার, ৬:৩৮ অপরাহ্ন

শেষ হয়েছে ফিলিপাইনের মধ্যবর্তী নির্বাচন। এখন সিংহাসনের লড়াই শুরু করেছে দেশটির প্রভাবশালী দুই পরিবার। বারো জন সিনেটরের মধ্যে ছয় জন প্রেসিডেন্ট মার্কোস জুনিয়র জোটের। চারজন মার্কোসের ভাইস প্রেসিডেন্ট সারা দুতের্তের জোটের। এর মধ্যে প্রেসিডেন্টের বোন ইমি মার্কোস অন্যতম। তবে এই ফলাফল মার্কোসের জন্য তেমন সুখকর নয়। কেননা এটি বর্তমান প্রেসিডেন্টের জন্য বেশ খারাপ ফলাফল। সাধারণত মধ্যবর্তী নির্বাচনে ফিলিপাইনের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টরা নির্বাচিত সিনেটের জন্য বেশিরভাগ তাদের পছন্দের প্রার্থী পান। তবে এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। মার্কোস জুনিয়র ও তার ভাইস প্রেসিডেন্ট সারা দুতের্তের মধ্যে তীব্র বিরোধ ও ক্ষমতার লড়াই শুরু হয়েছে। মিত্র হিসেবে তারা ২০২২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভূমিধস জয় লাভ করেন। তবে সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরুর পর থেকে সারার বিরুদ্ধে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন মার্কোস। এদিকে সারা তার বিরুদ্ধে অযোগ্যতার অভিযোগ আনেন। এই মধ্যবর্তী নির্বাচন দুই রাজনৈতিক রাজবংশের শক্তির একটি ‘ব্যারোমিটারে’ পরিণত হয়েছে। দেশব্যাপী ভোটের মাধ্যমে সিনেটররা নির্বাচিত হয়ে থাকেন। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে, ভোটের ফলাফল মার্কোস প্রশাসনের শেষ তিন বছরের কর্তৃত্বকে দুর্বল করতে পারে।
আরো ধারণা করা হচ্ছে, সারা দুতের্তেকে অভিশংসন করে তাকে অক্ষম করা হতে পারে। তিন বছর আগেই মার্কোস ও দুতের্তের সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। তবে এ বছরে তা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়ে। কংগ্রেসে প্রেসিডেন্টের মিত্রদের মাধ্যমে ভাইস-প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের সিদ্ধান্তে তাদের সম্পর্ক আরও খারাপ দিকে মোড় নেয়। এরপর মার্চে প্রেসিডেন্ট মার্কোস সারা দুতের্তের পিতা রদ্রিগো দুতের্তেকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের মুখোমুখি করেন। এদিকে পুলিশও সারার বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করেছে। সারাকে অভিসংশন করা হলে তার সরকারি পদ বাতিল হবে। এছাড়া পরবর্তী নির্বাচনে মার্কোসের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার আকাঙ্ক্ষারও অবসান হবে। তবে খুব কম মানুষই সন্দেহ করছেন যে, সারা নির্বাচনে সফল হলে মার্কোসের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ব্যবহার করবেন। অভিসংশনের জন্য ২৪ সদস্যের সিনেটের দুই তৃতীয়াংশ ভোট প্রয়োজন। এ কারণে এই মধ্যবর্তী নির্বাচন দুই শিবিরের কাছেই এত গুরুত্বপূর্ণ। উল্লেখ্য, ফিলিপাইনের রাজনীতি অনেকটা পরিবারকেন্দ্রিক। একবার কোনো পরিবার ক্ষমতায় আসলে তারা সে ক্ষমতা ধরে রাখে। এরপর পরবর্তী কয়েক প্রজন্ম ওই ধারা অব্যাহত থাকে। দেশটিতে বর্তমানে প্রায় ২০০টির মতো প্রভাবশালী পরিবার আছে। এর মধ্যে দুতের্তে ও মার্কোস পরিবার শীর্ষে আছে। মার্কোস পরিবার ৮০ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে। বর্তমান প্রেসিডেন্টের পিতা ১৯৬৫-৮৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। তার বিরুদ্ধে সামরিক আইন জারি ও জাতীয় তহবিল থেকে কোটি কোটি ডলার লুটের অভিযোগ আছে।