বিশ্বজমিন
ইস্তাম্বুলে ইউক্রেন-রাশিয়া আলোচনায় অগ্রগতি না হলেও বন্দি বিনিময়ে সমঝোতা
মানবজমিন ডেস্ক
(৮ ঘন্টা আগে) ১৭ মে ২০২৫, শনিবার, ১০:৫৬ পূর্বাহ্ন

তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ইউরোপের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাতের মধ্যেও শুক্রবার একটি ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক অগ্রগতি দেখা গেছে। ইস্তাম্বুলে ওসমানীয় যুগের এক প্রাসাদে মুখোমুখি বসেছিলেন ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদল। ২০২২ সালের মার্চের পর এটাই এমন প্রথম বৈঠক। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং সহায়তায় আলোচনার আয়োজন সম্ভব হয়েছে। তবে আলোচনা শুরু হলেও দুই পক্ষের মধ্যে মতপার্থক্য ছিল সুস্পষ্ট। ইউক্রেনীয় প্রতিনিধি দলের অনেকেই সেনা পোশাক পরে এসেছিলেন- এটি ছিল যুদ্ধের বাস্তবতার এক প্রতীকী প্রকাশ। এ খবর দিয়ে অনলাইন বিবিসি বলছে, আলোচনা চলে দুই ঘণ্টারও কম। ইউক্রেন জানায়, রাশিয়া নতুন ও গ্রহণযোগ্য নয় এমন কিছু দাবি তোলে। এর মধ্যে ছিল ইউক্রেনীয় সেনাদের তাদের নিজ দেশের বৃহৎ অংশ থেকে প্রত্যাহার বিনিময়ে একটি যুদ্ধবিরতি। তবে এই অচলাবস্থার মধ্যেও একটি বড় সাফল্য এসেছে। উভয় পক্ষ ১০০০ করে যুদ্ধবন্দি বিনিময়ে সম্মত হয়েছে।
ইউক্রেনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরহি কিসলিৎসিয়া বলেন, একটি কঠিন দিনের খুব ভালো সমাপ্তি এটি। এটি ১০০০ ইউক্রেনীয় পরিবারের জন্য দারুণ খবর। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ জানান, বন্দি বিনিময়ের তারিখ নির্ধারিত হলেও এখনই তা প্রকাশ করা হচ্ছে না। রুস্তেম উমেরভ জানান, ইউক্রেনের পক্ষ থেকে প্রস্তাব এসেছে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে সরাসরি বৈঠকের। রাশিয়ার প্রতিনিধি দলের প্রধান ভ্লাদিমির মেদিনস্কি জানান, এই অনুরোধ ‘নোট’ করে রাখা হয়েছে এবং রাশিয়া যোগাযোগ চালিয়ে যেতে ইচ্ছুক। এটি একটি ইতিবাচক পরিবর্তন। কারণ মাত্র একদিন আগেও রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জেলেনস্কিকে ‘ভাঁড় এবং ব্যর্থ’ বলে কটাক্ষ করেছিল। ইউক্রেন ও তার মিত্রদের মধ্যে আশঙ্কা রয়েছে- রাশিয়া এ ধরনের আলোচনার মাধ্যমে কেবল সময় নষ্ট করছে, আন্তর্জাতিক চাপ এড়াতে ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের আসন্ন ১৮তম নিষেধাজ্ঞা পর্ব ঠেকাতে চায়।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতিমধ্যেই নতুন নিষেধাজ্ঞার খসড়া তৈরি করেছে। ওদিকে আলোচনার পরদিনই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক আকস্মিক ঘোষণা দেন- পুতিন আর আমি না বসা পর্যন্ত কিছুই হবে না। তিনি জানান, শিগগিরই পুতিনের সঙ্গে তার বৈঠক প্রয়োজন এবং একমাত্র তা থেকেই কার্যকর সিদ্ধান্ত আসতে পারে। তবে এই সম্ভাব্য বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির অংশগ্রহণের সম্ভাবনা নেই বলেই ধারণা করা হচ্ছে।