খেলা
ক্রিকেটারদের হাতেই পাকিস্তান সফরের ভাগ্য
ইশতিয়াক পারভেজ
১৮ মে ২০২৫, রবিবার
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বিরতি চলছে। কিন্তু দুই দেশের সীমান্তে এখনো চলছে উত্তেজনা। চলছে পাল্টা-পাল্টি হামলার হুমকিও। কত দিন যুদ্ধ বিরতি চলবে নাকি আবারো দুই দেশ মুখামুখি হবে মারণাস্ত্র নিয়ে এই প্রশ্নের উত্তর জানা নেই কারোই। শুধু তাই নয়, পাকিস্তান ধুঁকছে গৃহযুদ্ধের আতঙ্কেও। এক কথায় সবদিক থেকে উত্তপ্ত পরিস্থিতি দেশটিতে। নিরাপত্তাই বলতে গেলে বড় হুমকি। তাই বাংলাদেশ দল পাকিস্তান সফরে যাবে কিনা তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা। কারণ নিজেদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে অনেক ক্রিকেটারই এই সফরে যেতে যেতে চাচ্ছে না বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) ক্রিকেটারদের মতামতের গুরুত্ব দিতে চাইছে। বলার অপেক্ষা রাখে না ক্রিকেটারদের হাতেই নির্ভর করছে পাকিস্তান সফরের ভাগ্য। বিসিবি’র মিডিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু জানিয়েছেন এরই মধ্যে ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদিন ফাহিম সংযুক্ত আরব আমিরাতে গেছেন। সেখানেই জাতীয় দলের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে নেয়া হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
তিনি বলেন, ‘ক্রিকেটারদের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতে কথা বলবেন ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান। তাদের মতামত নিয়েই পাকিস্তান সফরের জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’ গতকাল শারজাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে প্রথম ম্যাচ মাঠে গড়ায়। সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচটি ১৯শে মে। পরের দিনই জাতীয় দলের দেশে ফিরে আসার কথা রয়েছে। তবে বিসিবি’র একটি সূত্রে জানা গেছে যদি ক্রিকেটারদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হয় পাকিস্তান সফরে যাওয়ার সেই ক্ষেত্রে দেশে না ফিরে সেখান থেকেই পাকিস্তান যেতে পারে বাংলাদেশ। তাহলে সফরে ভ্রমণ ক্লান্তিটা ক্রিকেটারদের কমে আসবে। মূলত পাকিস্তান সুপার লীগের (পিএসএল) ফাইনাল পিছিয়ে যাওয়াতে বাংলাদেশের সফরের সূচিতে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) গেল ১৩ই মে নতুন করে সফরের প্রস্তাবিত সূচি পাঠায় বিসিবি’র কাছে। নতুন সূচি অনুসারে প্রথম তিনটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ফয়সালাবাদে ২৭ ও ২৯শে মে এবং ১লা জুন। এরপর শেষ দুটি ম্যাচ হবে লাহোরে ৩ ও ৫ জুন। এর আগে আগের সূচি অনুযায়ী ২৫শে মে থেকে ৩রা জুন পর্যন্ত পাঁচটি টি-টোয়েন্টি হওয়ার কথা ছিল। যা এখন দুই দিন পিছিয়ে শুরু হবে। সেই হিসেবে যদি সব কিছু ঠিক থাকে তাহলে বাংলাদেশ দলের পাকিস্তান সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে ২৩শে মে।
যদি শেষ পর্যন্ত যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয় তাহলে দুবাইয়ে দুই দিন বিশ্রাম নিয়েই পাকিস্তান যেতে পারে দল। কারণ দেশে ফিরে এই সফরে যেতে হলে দুবাই হয়েই যেতে হবে। এতে যেমন ক্রিকেটারদের বাড়বে ভ্রমণ ক্লান্তি তেমন হবে ভিসা নিয়ে কিছু জটিলতাও। সূত্রটি জানায়, ‘দেখেন পাকিস্তানে বাংলাদেশ সফর একরকম স্থগিতই হয়ে গিয়েছিল। যুদ্ধ থামার কারণে বিষয়টি নিয়ে আবারো আলোচনা শুরু হয়েছে। যে কারণে আমরা কবে যাবো বা কিভাবে যাবো তা ঠিক হয়নি। সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর শেষে টাইগারদের দেশে ফেরার কথা। এখন পর্যন্ত তাই আছে। এখন যদি পাকিস্তান যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয় সেটি কী দেশে ফিরে যাবে নাকি সেখানেই দুই দিন বিশ্রাম নিয়ে যাবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।’ অন্যদিকে পাকিস্তান সফরে যেতে হলে শতভাগ নিরাপত্তার কথা ভাবতে হবে বলেই জানিয়েছেন ইফতেখার রহমান মিঠু। তিনি বলেন, ‘দেখেন এটি একটি যুদ্ধ পরিস্থিতির বিষয়। সাধারণ অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয় হলে সেটি আলাদা বিষয় ছিল। যুদ্ধ থামলেও এখনো কিন্তু আতঙ্ক কাটেনি। যে কারণে অবশ্য আমরা ক্রিকেটারদের নিরাপত্তার কথা আগে বিবেচনায় নিবো। সফরে দল কিভাবে থাকবে কোথায় রাখা হবে। কী ধরনের নিরাপত্তা ব্যাবস্থা নেয়া হবে সবই আমাদের দেখার ও জানার বিষয় আছে। ক্রিকেটারদের মতামত নেয়াও জরুরী। সব দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সেটি নিয়েই কাজ করছেন আমাদের ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান। আপনারা জানেন সফরে যেতে সরকারের পক্ষ থেকেও দেয়া হয়েছে সবুজ সংকেত তবে তা ক্রিকেটারদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়েই।’