প্রথম পাতা
জুলাই আন্দোলনে আহত ৪ জনের বিষপান
স্টাফ রিপোর্টার
২৬ মে ২০২৫, সোমবার
জুলাই আন্দোলনে আহত, চোখে আঘাতপ্রাপ্ত চারজন বিষপান করেছেন। সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে না অভিযোগ করে তারা বিষপান করেন বলে অন্য আহতরা জানিয়েছেন। বর্তমানে তারা সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ভর্তি থাকা এই চারজন হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষেই বিষপান করেন বলে জানা গেছে। হাসপাতাল পরিচালক জানিয়েছেন, বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতেই আহতরা বিষপান করেছেন বলে তিনি মনে করেন।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, রোববার দুপুরে হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষে একটি বৈঠক চলাকালে এই ঘটনা ঘটে। বিষপানকারী চারজন হলেন- শিমুল, মারুফ, সাগর ও আখতার হোসেন। পরে তাদের তাৎক্ষণিকভাবে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তারা শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, জুলাই ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাসপাতাল পরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করার সময় ওই চারজন দাবি নিয়ে তার কক্ষে যান। ফাউন্ডেশনের সিইও তাদের অপেক্ষা করতে বললে ক্ষুব্ধ হয়ে সেখানেই বিষপান করেন তারা। তাদের মধ্যে একজন একমাস আগে সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা নিয়ে দেশে এসেছেন। বাকি তিনজন দু’দিন আগে পুনরায় হাসপাতালে ভর্তি হন।
বিষপান করা শিমুল বলেন, ১০ মাস হয়ে গেল সুচিকিৎসা পাচ্ছি না। সিইও আসলো হাসপাতালের সঙ্গে মিটিং করলো। তারা বেছে বেছে ১০ জনকে বিদেশের জন্য রেফার্ড করলো। তখন ভাবলাম, আমরা মারা গেলে বাকিদের সুচিকিৎসা হবে।
সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন আখতার হোসেন। তিনি বলেন, ওখানে জানায় ৬ মাস চিকিৎসা করতে হবে। কিন্তু আমাকে দেশে পাঠিয়ে দেয়। ওখানে দৈনিক ২০০ সিঙ্গাপুর ডলার হাসপাতাল ভাড়া ছিল। কিন্তু ৪০০ সিঙ্গাপুর ডলার সরকার থেকে নেয়া হতো। এখানেও দুর্নীতি হয়েছে। আমরা ৭ জন বিষপানের পরিকল্পনা করেছিলাম যাতে বাকিরা সুচিকিৎসা পায়।
বিষপানের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, আমার মনে হয়, সিনক্রিয়েট করার জন্যই করেছেন। হাসপাতালে ভর্তি ৫৫ জনের মধ্যে ৪৬ জনের হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন নাই। এখন এমন পর্যায়ে চলে আসছে যে, তাদের নিয়মিত ফলোআপের প্রয়োজন। সিঙ্গাপুর থেকে যে চিকিৎসা নিয়ে এসেছেন, তার এক চোখ ১০০ শতাংশ এবং আরেক চোখ ২০ শতাংশ ভালো। এই চোখটি তার গুলি লেগে শুরুতেই এফেক্টেড হয়। সিঙ্গাপুরের ডাক্তারাও বলেছেন, বাংলাদেশে যে চিকিৎসা হয়েছে সেটা ঠিক চিকিৎসা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাকি তিনজন দুই দিন আগে জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে সুপারিশ নিয়ে পুনরায় ভর্তি হয়েছেন। তাদের ভর্তির প্রয়োজন ছিল না এরপরও ভর্তি নেয়া হয়। তবে তাদের নিয়মিত ফলোআপের প্রয়োজন রয়েছে।
গতকাল রাতে হাসপাতালে গিয়ে চারজনকে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়। সেখানে থাকা অন্য আহতরা জানান বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দরকার হলেও তাদের জন্য সেই সুপারিশ করা হচ্ছে না। এই ক্ষোভ থেকেই তারা বিষপান করেছেন।