শেষের পাতা
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ফের ডাকাতি গুলিবিদ্ধ ১
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
১ জুন ২০২৫, রবিবার
ঢাকা-টাঙ্গাইল যমুনা সেতু মহাসড়কে ডাকাতের আতঙ্ক নিয়ে গত ২৯শে মে দৈনিক মানবজমিনে সংবাদ প্রকাশিত হয়। দু’দিন না যেতেই শুক্রবার পরপর মহাসড়কে দু’টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ঈদকে সামনে রেখে এই ডাকাত আতঙ্ক কাটছেই না মহাসড়কের যাত্রী এবং চালকদের। তবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর না হলে ঈদযাত্রায় মহাসড়কে ব্যাপক ডাকাতির ঘটনা ঘটবে বলে জানান যাত্রী এবং চালকরা। ফের ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে প্রবাসীর মাইক্রোবাসে নারীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গোড়াই হাইওয়ে থানার রেকারের চালক তুহিনকে গুলি করা হয়। ডাকাতদল প্রবাসী ও তাদের স্বজনদের কাছ থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও মালামাল নিয়ে চম্পট দিয়েছে। শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার পুষ্টকামুরী চরপাড়া বাইপাস এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ডাকাতদলের ব্যবহৃত একটি হাইয়েজ ও প্রবাসীর মাইক্রোবাস এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন অস্ত্র উদ্ধার করেছে।
মাইক্রোবাসের যাত্রী সুমাইয়া আক্তার জানান, তার ননদ বিউটি আক্তার জর্দান প্রবাসী। শুক্রবার জর্দান থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। রাতে তারা টঙ্গী এলাকা থেকে একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করেন। মাইক্রোবাসে তার ননদ বিউটি, সম্পা, শ্বশুর আব্দুল হামিদ ও তাদের শিশু সন্তান ছিল। রাত আড়াইটার দিকে তাদের মাইক্রোবাসটি মহাসড়কের পুষ্টকামুরী চরপাড়া এলে পেছন দিক থেকে আসা একটি হাইয়েজ এসে তাদের মাইক্রোবাসটি গতিরোধ করে ৭-৮ জনের ডাকাতদল অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে ফেলে। তাদের কাছে পিস্তল, পুলিশের ওয়াকিটকি, পুলিশের হ্যান্ডকাফ, বন্দুক, চাপাতি, ছুরি, লাঠি ও দা ছিল। সবাইকে জিম্মি করে ৫-৬টি মোবাইল ফোন, নগদ ৭০ হাজার টাকাসহ তাদের মালামাল লুটে নেয়। তারা আর্তচিৎকার করলে গুলি করার হুমকি দেয়। মহাসড়ক দিয়ে টহল পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের একদল সদস্য ঘটনা দেখে ডাকাতদের ধাওয়া করলে ডাকাতরা গুলি ছুড়ে। ডাকাতের গুলিতে হাইওয়ে থানার রেকার চালক তুহিন মিয়া গুলিবিদ্ধ হন। ডাকাতদলের সদস্যরা পালিয়ে যায়।
অপরদিকে, প্রবাসী বিউটির শ্বশুর আব্দুল হামিদ ও সুমাইয়া অভিযোগ করেন, তাদের ভাড়া নেয়া মাইক্রোবাসের চালক মুস্তাকিন ও হেলপার জুয়েলকে তাদের সন্দেহ হচ্ছে। শুরু থেকেই মাইক্রোবাসটি বিভিন্ন এলাকায় তাদের ঘুরিয়েছে। ডাকাতির সঙ্গে তারা জড়িত বলে মনে হচ্ছে। এদিকে, ডাকাতির খবর রাতে ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। গুলিবিদ্ধ তুহিনকে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তুহিন বলেন, গুলি বের করা হয়েছে। অল্পের জন্য তিনি প্রাণে বেঁচেছেন। এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার ওসি মোহাম্মদ রাসেদুল ইসলাম বলেন, ডাকাতির ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ডাকাতদলের ফেলে যাওয়া একটি হাইয়েজ ও প্রবাসীর মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ একজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, শুক্রবার ভোরে মহাসড়কের মির্জাপুরে ট্রাকের চালক ও হেলপারের হাত-পা বেঁধে ট্রাকসহ ৬০ ড্রাম সয়াবিন তেল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ট্রাকের চালক ও হেলপারকে মারধর করে আহত করা হয়।
পাঠকের মতামত
বিচার ব্যবস্থার অপরাধের মাত্রানুযায়ী আমূল সংস্কার করা উচিত।