ঢাকা, ৬ জুন ২০২৫, শুক্রবার, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৮ জিলহজ্জ ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

মাঠ তৈরি হলে যেকোনো সময় নির্বাচনে প্রস্তুত জামায়াত

স্টাফ রিপোর্টার
৪ জুন ২০২৫, বুধবার
mzamin

ভোটের সমতল মাঠ তৈরি হলে যেকোনো সময় নির্বাচনে অংশ নিতে জামায়াতে ইসলামী প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দলটির আমীর ডা. শফিকুর রহমান। গতকাল রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। জামায়াতের নিবন্ধন প্রাপ্তির বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পরবর্তী অবস্থান জানাতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে জামায়াত আমীর বলেন, আমরা ফেব্রুয়ারি টু এপ্রিল একটা ফ্লেক্সিবল টাইম মেনশন করেছি। প্রথমে ফেব্রুয়ারি বলেছিলাম, পরে এপ্রিল পর্যন্ত এটাকে ফ্লেক্সিবল করেছি। আর অন্যদিকে বিএনপি ডিসেম্বরকে স্ট্রিক্ট করেছে। এখন যদি ডিসেম্বরে ইলেকশন হয়, এমনকি আজকেও যদি আমরা দেখি সমতল মাঠ তৈরি হয়ে গেছে এবং ফেয়ার ইলেকশনের পক্ষে জাতি প্রস্তুত, সব অর্গান প্রস্তুত, সেই ইলেকশনে তো আমরা যাবো। ডা. শফিকুর রহমান, জীবনবাজি রেখে যারা একটা পরিবর্তনের জন্য লড়াই করেছিলেন। তারা শুধু ফ্যাসিজমকে বিদায় করার জন্য লড়াই করেনি; বরং ফ্যাসিজমমুক্ত একটা দেশ গড়ার জন্য লড়াই করেছিলেন। তিনি বলেন, আনফরচ্যুনেটলি ফ্যাসিবাদীরা বিদায় নিয়েছে, কিন্তু ফ্যাসিজম রয়ে গেছে। এর কালোছায়া এবং ভুত এখনো জাতির ঘাড়ে রয়ে গেছে।

প্রবাসীদের ভোটাধিকার দেয়ার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের স্পষ্ট দাবি এক কোটি ১০ লাখ প্রবাসীকে ভোটের আওতায় আনতে হবে। এখানে কোনো ছাড় নয়। তিান বলেন, নির্বাচন কমিশন আমাদের কথা দিয়েছে, তারা প্রবাসীদের ভোটাধিকার দেবে। কিন্তু আমরা সেটির দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি না। সেজন্য আমরা উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরাও নতুন বাংলাদেশের জন্য লড়াই করেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাদের না আছে এনআইডি, না আছে ভোটার তালিকায় নাম। এজন্য আমাদের ন্যায্য, বলিষ্ঠ, স্বচ্ছ ও সুস্পষ্ট দাবি, বিদেশে থাকা প্রবাসীদের ভোটাধিকার দিতে হবে। জামায়াত আমীর বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করাটা দুঃসহ বা দীর্ঘ সাধনার ব্যাপার নয়। এটা শুধু সদিচ্ছার ব্যাপার। তিনি বলেন, এক কোটি ১০ লাখ প্রবাসী ভোটারকে বাদ দিয়ে বা অবজ্ঞা করে বাংলাদেশ আগানোর চেষ্টা করলে সেটা সফল হওয়ার কোনো সম্ভাবনা  নেই। তাদের সংখ্যা যাই হোক, তাদের রক্ত পানি হয়ে ফোটা ফোটা ঘাম ঝরে, সেই ঘামে আসা বৈদেশিক মুদ্রায় বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা চলছে। মুখে বলবো রেমিট্যান্স যোদ্ধা কিন্তু সেই যোদ্ধাকে দেবো না কোনো অধিকার তাহলে সেটা হবে নির্মম উপহাস। আমরা এটার পরিসমাপ্তি দেখতে চাই। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি সমাজ সংস্কৃতি ও সার্বভৌমত্বের ওপরে আমরা কারও আধিপত্য মেনে নেবো না। এ ব্যাপারে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স। অবশ্যই বিশ্বসভায় বাংলাদেশ একটি সদস্য রাষ্ট্র। আমরা সব সদস্য রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার পক্ষে। আমরা সবাইকে সম্মান জানাতে চাই। বিনিময়ে আমরাও সম্মান চাই। আমাদের যা পাওয়া তা যেন আদায় হয়। জামায়াত আমীর বলেন, কোর্টের রায়ের মাধ্যমে অতিদ্রুত আমরা অফিসিয়ালি নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পাবো। দুর্ভাগ্যজনক হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে আমাদের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। ভোজসভায় বক্তব্য দিয়ে প্রতীক খেয়ে ফেলা হয়েছে। ভোজসভায় খেয়ে আমাদের প্রতীককে হজম করে ফেলা হয়েছে। যেটা ছিল বেআইনি ও এখতিয়ার বহির্ভূত। তখনকার নির্বাচন কমিশন তাদের দায়িত্বের কথা ভুলে গিয়ে একটা অন্যায্য পরামর্শকে কার্যকর করে আমাদের অধিকারকে ক্ষুণ্ন বা বঞ্চিত করেছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমাদের প্রত্যাশা, তারা যেন তাদের চেয়ারের মর্যাদা রক্ষা করেন, আমরা কোনো ফেভার চাই না, কারও ডিসফেভারিজমও চাই না। আমানত বিশ্বস্ততার জায়গা থেকে তারা তাদের সম্মান রক্ষা করবেন। তিনি বলেন, আমরা চাই গণতান্ত্রিক, দুর্নীতি, দুঃশাসনমুক্ত একটি বাংলাদেশ। যুবসমাজের প্রতি আমাদের কমিটমেন্ট। দেশ গড়ার কারিগর হিসেবে যুবকদের দেখতে চাই। কারিগর হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা নিজেদের দায়িত্বটাও পালন করতে চাই। 

বিএনপি নির্দিষ্ট করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চান। আপনারা নির্দিষ্ট করে বলবেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে জামায়াত আমীর বলেন, আমরা বেসিক সংস্কারের কথা বলেছি। আমরা ৪১টা রিকমেন্ডেশন দিয়েছি। কিন্তু বেসিক পাঁচটা সংস্কার আমরা দেখতে চাই। বিচারটা আমরা দৃশ্যমান দেখতে চাই। সেটা শুরু হয়েছে। জুলাই ডিকলারেশন চেয়েছি। এসব শেষ করে যদি আগামী জুলাইয়ের মধ্যে শেষ করতে পারে ঐকমত্য সংস্কার কমিশন তাহলে বিপ্লবের ফসল পুরো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজগুলো সম্পন্ন করা সম্ভব। তবে আরও দুটো কাজ শেষ করতে হবে। অবশ্যই সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সুষ্ঠু ভোটার তালিকা লাগবে। বায়বীয় ভোট ছেঁটে ফেলতে হবে। ন্যায্য ভোট সংযুক্ত করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম, নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আবদুল হালিম, প্রচার শাখার সেক্রেটারি এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
 

পাঠকের মতামত

শফিক এরশাদীর কথা বার্তার কোন মা বাপ নাই।

সিরু
৪ জুন ২০২৫, বুধবার, ২:০৩ অপরাহ্ন

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status