শেষের পাতা
গোলটেবিল আলোচনায় জে আর মোদাচ্ছের
রাষ্ট্রে প্রত্যেকের মধ্যে টিমওয়ার্ক থাকতে হবে
স্টাফ রিপোর্টার
৫ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার
সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ জে আর মোদাচ্ছের হোসেন বলেছেন, রাষ্ট্রে প্রত্যেকের মধ্যে টিমওয়ার্ক থাকতে হবে। বর্তমানে দু’টি পক্ষ তৈরি হয়েছে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের অধিকার নির্বাচনের রয়েছে। জনগণ তাদের প্রতিনিধি দিয়ে দেশ চালাবে। এটা একটা টিমওয়ার্ক। রাষ্ট্রে সংসদ, প্রশাসন, বিচার বিভাগসহ আরও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তারা সবাই টিমওয়ার্ক করে দেশ চালাবে। দেশের মধ্যে প্রত্যেকে প্রত্যেকের মধ্যে টিমওয়ার্ক করবে। গতকাল বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ঢাকা ফোরাম ইনেশিয়েটিভ ও ইউনিভার্সেল নিউজ এজেন্সির আয়োজনে ‘গণতন্ত্রের পূর্ণাঙ্গ যাত্রা: জরুরি সংস্কার, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও সুশাসন’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা চাই এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে সবাই স্বাধীনভাবে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবেন। রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা থাকবে কিন্তু তা তিক্ততার নয়, বিভাজনের নয়। বরং ভিন্নমতকে গ্রহণ করার মানসিকতা থাকবে। ভোট কেবল নির্বাচনের দিকে ধাবিত না হয়। এটি যেন আমাদের মতপ্রকাশ, দায়বদ্ধতা ও দেশের জন্য প্রতিফলন হয়। আমাদের প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা ও শিক্ষানীতি এবং রাজনীতি সময়োপযোগী ও ধারাবাহিক দায়িত্ববান হতে হবে। সংস্কার মানে কেবল আইন পরিবর্তন নয়, এটা একটা মানসিক পরিবর্তন। পরিবর্তন মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোর প্রতিফলন।
সুশাসন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, সুশাসন মানে মানুষ বুঝবে রাষ্ট্র তার পাশে আছে। একজন কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষক ও ব্যবসায়ী তারা উপলব্ধি করবে রাষ্ট্র তার পাশে রয়েছে। সবার জন্য সমান সুযোগ, নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই সুশাসনের লক্ষ্য। আমরা চাই এমন বাংলাদেশ যেখানে সরকারি অফিসে গেলে হাসিমুখে অভ্যর্থনা দিবে।
আলোচনায় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদী আমীন বলেন, আমাদের প্রথমেই উপলব্ধি করা প্রয়োজন, নির্বাচনের সঙ্গে সুশাসনের সম্পর্কটা কি? গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনগণের ভোটে অবাধ, সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমে, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে যে সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় আসে, জনগণের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে তারাই কিন্তু সংস্কারগুলো করে। সে সংস্কারের অন্যতম লক্ষ্য সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা, যার মাধ্যমে দেশে আইনের শাসন, বাকস্বাধীনতা এবং মানবধিকার সুনিশ্চিত করা যায়। তার মানে সংস্কার এবং সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রধান বাহন হচ্ছে নির্বাচন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি প্রফেসর ড. কামরুল আহসান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে পরস্পরের বিরোধ নির্মূল হচ্ছে। বৈচিত্র্যের নামে বিভাজন এটা ২৪ এর চেতনা নয়। আমাদের পরাজিত শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে, সেদিন খুব বেশি দূরে নয়। এটা আমাদের যেন দেখতে না হয়, সেটাই কাম্য। গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমেই একটি জাতি সুন্দর হয়ে ওঠে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী, মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর, সাবেক আইজিপি আশরাফুল হুদা, সাবেক সচিব ইসমাঈল জবিউল্লাহ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. আব্দুর রব, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মারুফ হোসেন, মানবাধিকার কর্মী সাইয়েদ আবদুল্লাহ, জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব আলাউদ্দিন মোহাম্মদ, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি এম আব্দুল্লাহ, নিরাপত্তা বিশ্লেষক আবু রুশদ প্রমুখ।