বাংলারজমিন
রায়পুরায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগ স্থগিত
নরসিংদী প্রতিনিধি
১৩ জুন ২০২৫, শুক্রবারনরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি বিতর্কিত পোস্টকে কেন্দ্র করে উপজেলা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগ স্থগিত করেছে প্রশাসন। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি, শতভাগ স্বচ্ছতা ও নিয়ম মেনে ডিলার নিয়োগ হয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি। তাই দ্রুত নিয়োগ পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, রায়পুরা উপজেলার ২৪টি ইউনিয়নের জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল। কিন্তু উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন সাগর তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে লেখেন, ‘রায়পুরা উপজেলার যেসব নেতা ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার বিনিময়ে খাদ্যের ডিলারশিপ লাইসেন্স বিক্রি করেছেন, তাদের মুখোশ শিগগির উন্মোচন করা হবে।’
এই পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি আলোচিত-সমালোচিত হলে গত ১১ই জুন (বুধবার) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদ রানা ডিলার নিয়োগ আপাতত স্থগিতের ঘোষণা দেন।
এ বিষয়ে রায়পুরা উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান খোকন বলেন, উপজেলা যুবদলের ওই নেতা বিকারগ্রস্ত। তার পছন্দের লোক নিয়োগ না পাওয়ায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই অপপ্রচার চালিয়েছে। আমি কারও কাছ থেকে এক পয়সাও নিইনি। যদি প্রমাণ হয়, আমি রাজনীতি ছেড়ে দেবো। বিএনপি’র ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন্ন করতে আওয়ামী দোসররা বিভিন্ন ভাবে ষড়যন্ত্র করছেন।
তিনি আরও বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রকল্প। এখানে দলের নেতৃবৃন্দের সমন্বয় করে স্বচ্ছ নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে।
রায়পুরা উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আলফাজ উদ্দিন মিঠু বলেন, ডিলার নিয়োগের বিষয়টি সম্পূর্ণ অফিসিয়াল কাজ। আমার জানামতে, নিয়োগের আগে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় ও স্থানীয়
নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পরামর্শ করে উপজলা নির্বাহী অফিসার নিয়োগ দিয়েছেন। অভিযোগটি ভিত্তিহীন। দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অপ্রচার করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে কোনো ষড়যন্ত্র করা হলে কঠোর হাতে দমন করা হবে।
নিয়োগপ্রাপ্ত একাধিক ডিলার বলেন, তারা সরকারি সকল নিয়ম মেনে আবেদনপত্র জমা দিয়ে তারা নিয়োগ পেয়েছেন। একজন ডিলার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সবকিছু যাচাই-বাছাই করে আমাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এখন একটি ফেসবুক পোস্টের কারণে যদি নিয়োগ বাতিল হয়, সেটা অন্যায়। ডিলার নিয়োগ বহাল রাখার জন্য জোর দাবি করা হয়। ডিলার নিয়োগ নিয়ে টালবাহানা করা চলবে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা স্থানীয় সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলোচনা ও সমন্বয়ের মাধ্যমেই চূড়ান্ত করেছি। তবে সংবাদ প্রকাশের পর পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়োগ আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা একযোগে দাবি জানিয়েছেন, যথাযথ প্রক্রিয়ায় নিয়োগপ্রাপ্ত ডিলারদের অবিলম্বে পুনর্বহাল করতে হবে। অপপ্রচারের ভিত্তিতে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি স্থগিত হওয়া সঠিক হবে না। বিএনপি’র নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী অপশক্তিকে চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোর দাবি করা হয়। ডিলার নিয়োগ দ্রুত বহাল রাখার জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।