বাংলারজমিন
লালমোহনে অগ্নিকাণ্ডে ছাই বসতঘর
‘পরিহিত জামা-কাপড় ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই’
লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি
১৩ জুন ২০২৫, শুক্রবার
ঘরের কোনো কিছুই রক্ষা করতে পারিনি। যেন চোখের পলকেই সব আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বৃদ্ধ বাবা-মা মাথা গোঁজার শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেছেন। কথাগুলো বলতে বলতে গগণবিদারী আর্তনাদ করছিলেন ভোলার লালমোহন উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চরকচ্ছপিয়া এলাকার আব্দুল আজিজ মুন্সি বাড়ির বৃদ্ধ মো. হারুনের মেয়ে মোসা. নাহার। গতকাল সকালে ঘরের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে পুড়ে ছাই হয়ে যায় তার বৃদ্ধ বাবা-মায়ের বসতঘরটি।
মোসা. নাহার জানান, আমার বাবা ছোট একটি মুদি দোকান করে কোনো রকমে সংসার চালাচ্ছেন। তার ওই আয় থেকে গত তিন বছর আগে নতুন করে একটি টিনশেড ঘর নির্মাণ করেন। ওই ঘরটিই বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎ গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে পুরোপুরিভাবে পুড়ে যায়। ঈদে আমি বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসেছি। অগ্নিকাণ্ডের সময় বাবা দোকানে ছিলেন, মা আর আমি ঘরের বাহিরে এক প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলছিলাম। এরমধ্যে ঘরের ভেতর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে গিয়ে দেখি আগুন জ্বলছে। তখন আমরা চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। তারা এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে আসেন ফায়ার সার্ভিসের লোকজনও। তবে ৩০ মিনিট ধরে সবাই মিলে প্রাণপণ চেষ্টা করেও ঘরটি আর রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। আগুনে ঘরে থাকা আমার বোন জামাইয়ের জমি কেনার জন্য রাখা ৭ লাখ ৮২ হাজার টাকা, ঘরের চাল-ডাল ও জামা-কাপড়সহ সবকিছুই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখন কেবল আমাদের শরীরের জামা-কাপড়গুলোই আছে। তিনি জানান, চোখের সামনে বসতঘরটি পুড়ে যেতে দেখে আমার বৃদ্ধ বাবা-মা অজ্ঞান হয়ে গেছেন। বিকাল ৩টায়ও বাবা-মায়ের জ্ঞান ফেরেনি। আমাদের কোনো ভাই নেই। আমরা কেবল ৪ বোন। সব বোনেরই বিয়ে হয়ে গেছে। বাবা অনেক কষ্টে মাকে নিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘরটি এখন বাবার পক্ষে নতুন করে তোলা কোনোভাবেই সম্ভব না। তাই সরকারের কাছে ঘরটি পুনর্নির্মাণের জন্য আর্থিক সহযোগিতা কামনা করছি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহ আজিজ জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।