খেলা
ব্রিজটাউন টেস্টে তিন দিনের জয়ে কামিন্সের স্বস্তি
স্পোর্টস ডেস্ক
২৯ জুন ২০২৫, রবিবার
তিন দিনেই নিষ্পত্তি হলো অস্ট্রেলিয়ার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের প্রথম টেস্ট। ব্রিজটাউনে ১৫৯ রানে জিতে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল সফরকারীরা। শুক্রবার তৃতীয় দিন ৩০১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা ক্যারিবিয়ানরা শেষ সেশনে অলআউট হয় ১৪১ রানে। ম্যাচের ফল নিয়ে সংশয় ছিল না একদমই। শুধু অপেক্ষা ছিল এটি দেখার যে ম্যাচ পরের দিনে গড়ায় কিনা। ৩৩তম ওভারটি ছিল দিনের শেষ ওভার। তৃতীয় বলে শামার জোসেফকে নবম উইকেটে ফিরিয়ে দেন নাথান লায়ন। পরের বলেই শেষ উইকেট জেইডেন সিলসকেও এই ডানহাতি স্পিনার আউট করলে উল্লাসে মাতে অজিরা। ব্রিজটাউন টেস্টের প্রথম দুই দিন টক্কর হয় সেয়ানে-সেয়ানে। প্রথম ইনিংসে ৫৬.৫ ওভারে সফরকারীরা গুটিয়ে যায় ১৮০ রানে। সিলস ও শামার জোসেফ নেন যথাক্রমে ৫ ও ৪টি করে উইকেট। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে স্রেফ ১০ রানে এগিয়ে থেকে অলআউট হয়ে যায় ক্যারিবিয়ানরাও। দ্বিতীয় ইনিংসে ট্রাভিস হেড, বো ওয়েবস্টার ও অ্যালেক্স ক্যারির ফিফটিতে সবগুলো উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া তোলে ৩১০ রান, স্বাগতিকদের জয়ের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩০১। ৪ উইকেটে ৯২ রান দিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করে অজিরা। পঞ্চম উইকেটে হেড ও ওয়েবস্টার মিলে যোগ করেন ১০২ রান। দু’দল মিলিয়ে পুরো ম্যাচের একমাত্র শতরানের জুটি এটিই। দু’জনকেই সাজঘরের পথ দেখান জোসেফ। ব্যক্তিগত ৬১ রান করেন হেড ও ওয়েবস্টার ফেরেন ৬৩ রান করে। এরপর মূলত ক্যারির দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে তিনশ’ ছাড়ায় আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের টানা দুই আসরের ফাইনালিস্টরা। ৩৩ বছর বয়সী এই উইকেটকিপার-ব্যাটার নবম উইকেট হিসেবে আউট হবার আগে করেন ৬৫ রান। এই ম্যাচে দু’দলের ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ এটিই। নয় টেস্ট ম্যাচে এই নিয়ে চারবার ফাইফারের স্বাদ পান ক্যারিবিয়ান পেসারর জোসেফ, যার তিনবারই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। সফরকারীদের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের প্রথম তিন টেস্টে ৫টি করে উইকেট নেওয়া পঞ্চম বোলার তিনি। এর আগে এই কীর্তি গড়েছেন টম রিচার্ডসন, চার্লি লিউয়েলিন, ফ্যাঙ্ক ফস্টার ও ফজল মাহমুদ।
শেষ ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে নূন্যতম প্রতিরোধটুকুও গড়তে পারেনি স্বাগতিক দল। প্রথম ওভারেই প্রথম উইকেট হারানো ক্যারিবিয়ানরা সাজঘরে ফিরতে থাকেন নিয়মিত বিরতিতে। ইনিংসের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ৪৪ রান তুলতে পারেন দশে নামা জোসেফ। একশ’র নিচে দলের গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা দূর করেন তিনি। তাকে সঙ্গ দেন জাস্টিন গ্রেভস। দু’জনের জুটি থেকে আসে ইনিংসের একমাত্র ফিফটি। ফাইফার তুলে নেন জশ হ্যাজলউড। লাল বলের ক্রিকেটে ১৩ বারের মতো ৫ উইকেটের স্বাদ পান তিনি। এই হারে ফিল্ডিংকে দোষ দিয়ে স্বাগতিক দলের অধিনায়ক রোস্টন চেইজ বলেন, ‘ফিল্ডিংয়ে পিছিয়ে পড়েছি। সুযোগ তৈরি হলেও কাজে লাগাতে পারিনি। এ পর্যায়ে এমন ভুলের কোনো জায়গা নেই।’ অন্যদিকে জয়ের পর অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স বলেন, ‘অসাধারণ একটি টেস্ট ম্যাচ হয়েছে। আজকের দিনটা হাড্ডাহাড্ডি হবে বলেই ভেবেছিলাম। আমাদের লক্ষ্য ছিল ২০০ রান তোলা। তবে যেভাবে ব্যাট করেছি, সেটি আমাদের অনেক বেশি স্বস্তি এনে দিয়েছে।’
সংক্ষিপ্ত স্কোর
অস্ট্রেলিয়া: ১৮০ ও ৩১০ (ক্যারি ৬৫, ওয়েবস্টার ৬৩; জোসেফ ৫/৮৭)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৯০ ও ১৪১ (জোসেফ ৪৪, গ্রিভস ৩৮*; হ্যাজলউড ৫/৪৩)
ফল: অস্ট্রেলিয়া ১৫৯ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা: ট্রাভিস হেড