শেষের পাতা
সড়ক দুর্ঘটনা
জুনে দিনে গড়ে ২৩ জনের প্রাণহানি
স্টাফ রিপোর্টার
৩ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার
চলতি বছরের জুন মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে ২৩ জন মারা গেছেন। মে মাসের তুলনায় জুন মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি সাড়ে ২২ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। এবং দুর্ঘটনায় মানব সম্পদের ক্ষতি হয়েছে ২ হাজার ৪৬৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘রোড সেফটি ফাউন্ডেশন’র প্রতিবেদনে তথ্যগুলো উঠে এসেছে। ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজপোর্টাল, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে সংগঠনটি।
‘রোড সেফটি ফাউন্ডেশন’ জানিয়েছে, গত জুন মাসে দেশে ৬৮৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৬৯৬ জন এবং আহত ১৮৬৭ জন। নিহতের মধ্যে নারী ১০৪ ও শিশু ১০৯। ২৫৬টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ২২৮ জন, যা মোট নিহতের ৩২.৭৫ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৭.১৫ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১২০ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ১৭.২৪ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ১০৬ জন, অর্থাৎ ১৫.২২ শতাংশ। ১৮টি নৌ-দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত, ১৩ জন আহত হয়েছেন। ৫৩টি রেল-ট্রাক দুর্ঘটনায় ৪৪ জন নিহত এবং আহত ২৫ জন। প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২৯৬টি জাতীয় মহাসড়কে, ২৪৩টি আঞ্চলিক সড়কে ৫৯টি গ্রামীণ সড়কে, ৮৭টি শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে। দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ২২৮ জন, বাসের যাত্রী ৬৩ জন, ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রলি-লরি-ড্রাম ট্রাক-রোড রোলার আরোহী ৫৪ জন, প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস আরোহী ২২ জন, থ্রি-হুইলার যাত্রী (সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান) ১৫১ জন, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-করিমন-ভটভটি-পাখিভ্যান-মাহিন্দ্র-টমটম) ৪৪ জন এবং বাইসাইকেল-রিকশা আরোহী ১৪ জন নিহত হয়েছেন।
সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলো হলো- ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, ত্রুটিপূর্ণ সড়ক, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ-যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি। ‘রোড সেফটি ফাউন্ডেশন’র নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, গতি নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তির মাধ্যমে নজরদারি দরকার। চালকদের মোটিভেশনাল প্রশিক্ষণ দরকার। যানবাহনের বেপরোয়া গতি ও পথচারীদের অসচেতনতার কারণে পথচারী নিহত হওয়ার ঘটনা বাড়ছে। এজন্য সরকারি উদ্যোগে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে জীবনমুখী সচেতনতামূলক প্রচার চালাতে হবে।
পাঠকের মতামত
‘‘গতি নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তির মাধ্যমে নজরদারি দরকার। চালকদের মোটিভেশনাল প্রশিক্ষণ দরকার। যানবাহনের বেপরোয়া গতি ও পথচারীদের অসচেতনতার কারণে পথচারী নিহত হওয়ার ঘটনা বাড়ছে। এজন্য সরকারি উদ্যোগে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে জীবনমুখী সচেতনতামূলক প্রচার চালাতে হবে’’। বর্নিত কাজগুলোর ব্যপারে কর্তৃপক্ষ দ্রুত শুরু করলে আশা করি সবই কমে আসবে, ইনশাআল্লাহ্।