বাংলারজমিন
আইনজীবী সমিতি নির্বাচন
সিরাজগঞ্জে বিএনপি-জামায়াতপন্থি প্যানেল বিনা ভোটে জয়ী
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
২৩ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবারসিরাজগঞ্জ আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে বিনা ভোটে জয়ী হয়েছেন বিএনপি ও জামায়াতপন্থি আইনজীবীরা। গতকাল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে ১৭টি পদের বিপরীতে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় বিএনপি ও জামায়াতপন্থি একক প্যানেলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। সিরাজগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও নির্বাচন কমিশনার এডভোকেট কায়ছার আহমেদ লিটন জানান, ৩১শে ডিসেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ৩০শে জানুয়ারি এ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। তফসিল অনুযায়ী, ১৬ই জানুয়ারি মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে ১৭টি পদের বিপরীতে ৩টি পদ ছাড়া বাকি ১৪টি পদে একটি করে মনোনয়নপত্র দাখিল হয়। ২২শে জানুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন পর্যন্ত সভাপতি পদে এডভোকেট কামরুজ্জামান কামাল (জাপা), সাধারণ সম্পাদক পদে এডভোকেট আব্দুল হামিদ (বিএনপি) ও এডভোকেট আমিনুল ইসলাম (আওয়ামী লীগ) এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে এডভোকেট মুজাহিদ বিন রহমান মিঠুন (জাপা) মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। এ অবস্থায় ১৭টি পদে সবাই একক প্রার্থী হওয়ায় এডভোকেট শাকিল মোহাম্মদ শরিফুর হায়দার রফিক সরকার (বিএনপি) ও এডভোকেট রফিকুল ইসলাম সেলিম (জামায়াত) সমর্থিত প্যানেলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামীপন্থি কয়েকজন আইনজীবী জানান, নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম। এ অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার আদালত প্রাঙ্গণে বহিরাগত লোকজন এসে আমাদের প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী এডভোকেট গোলাম হায়দারকে লাঞ্ছিত করে এবং আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের নির্বাচনে অংশ না নিতে প্রকাশ্যে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। পাশাপাশি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের ভয়ও দেখানো হয়। ৫ই আগস্ট পটপরিবর্তের পর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অপসারিত পিপি এডভোকেট আব্দুর রহমান ও অপসারিত জিপি এডভোকেট রাখালের বিরুদ্ধে মিথ্যা হত্যা মামলা করায় তারা বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। এ কারণে ঝামেলা এড়াতে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা এবারের নির্বাচনে অংশ নেননি।
সিনিয়র কয়েকজন আইনজীবী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিগত সরকারের আমলে সিরাজগঞ্জ আইনজীবী সমিতিতে সব দলের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতি বছর প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হতো। যে নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীরাও বিজয়ী হয়েছেন। এবারই প্রথম বিনা ভোটে আইনজীবী সমিতির কমিটি গঠিত হওয়ায় আইনজীবীরা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হলেন। অথচ বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা ভোটাধিকার নিয়ে নানা আন্দোলন করলেও এখন তারাই বিনা ভোটে নির্বাচিত হলেন।
এ বিষয়ে নব-নির্বাচিত সভাপতি ও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি এডভোকেট রফিক সরকার বলেন, সমিতির ১৭টি পদের মধ্যে সভাপতিসহ ১২টিতে বিএনপি এবং সাধারণ সম্পাদকসহ পাঁচটি পদে জামায়াত সমর্থক আইনজীবীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। অভিযোগের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দলীয়ভাবে কাউকে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা দেয়া হয়নি। বহিরাগত লোকজনের ভয়ে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা নির্বাচনে অংশ নেয়নি। এমন বাধা আমরাও অতীতে অনেক পেয়েছি। কিন্তু নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াইনি।