বাংলারজমিন
জুলাই আন্দোলন
শহীদ রাব্বী হত্যার বিচারের অপেক্ষায় মা সাহেলা
মাগুরা প্রতিনিধি
৪ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার
মাগুরায় ষাটোর্ধ্ব সাহেলা বেগম। জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেয়া ছেলে শহীদ মেহেদী হাসান রাব্বী হত্যার বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন এই মা। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে একটি বছর পার হয়ে গেলেও ছেলে হত্যার বিচার না পাওয়ায় হতাশ রাব্বীর পরিবার। কান্নাজড়িত কণ্ঠে রাব্বীর মা সালেহা বলেন, এক বছর হলো আমার ছেলে রাব্বী মারা গেছে, এখনো কোনো বিচার পাইনি। ছেলে হত্যার বিচারের দাবি করেন এই বৃদ্ধা মা। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত রাব্বীকে বীরশ্রেষ্ঠ পদমর্যাদায় সম্মান প্রদান করা হয়েছে। নিহত রাব্বী মাগুরা পৌরসভার বরুনাতৈল গ্রামের মৃত ময়েদ উদ্দিনের ছেলে ও জেলা ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর ৪ঠা আগস্ট সকাল ১০টার দিকে মাগুরা-ঢাকা মহাসকের পারনান্দুয়ালী নবগঙ্গা নদী ব্রিজের উপর অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। এ ছাড়া ব্রিজের পশ্চিম পাশে অবস্থান নেন পুলিশ সদস্যরা। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও সেখানে অবস্থান নিয়ে এ আন্দোলনে যোগ দেন। আন্দোলনে উভয় পক্ষ ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষ শুরু হয়। দিনব্যাপী চলে এ সংঘর্ষের ঘটনা। দুপুরে প্রতিপক্ষের গুলিতে আহত হন রাব্বী। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক অমর প্রধান তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই রাতে তাকে দাফন করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় রাব্বী নিহত হওয়ার ঘটনায় ১৩ জনের নামে গত বছরের ১৩ আগস্ট রাতে ১৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত পরিচয়ের ১৫০ জনের নামে মাগুরা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই ইউনিস আলী। মামলায় আসামি হিসেবে যাদেরকে দেখানো হয়েছে সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে জানা গেছে।
মামলার বাদী নিহতের বড় ভাই বলেন, এ মামলায় পুলিশ এখনো পর্যন্ত চার্জশিট প্রতিবেদন ও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
মাগুরা পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা বলেন, জুলাই-আগস্টে নিহতদের মামলায় একাধিক মানুষকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাই তদন্ত করে অপরাধীদের বের করতে সময় লাগছে। তবে অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তার অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া তদন্ত চলমান রয়েছে।